স্তন ক্যান্সার নারীদের কাছে আতঙ্কের আরেক নাম। প্রতি বছরই বাড়ছে আক্রান্তের হার। অশিক্ষা, সংকোচ, রোগ সম্পর্কে সঠিক তথ্যের ঘাটতি, সামাজিক অবস্থান ইত্যাদি কারণে নারীরা এই ধরনের ক্যান্সারের জটিলতায় ভোগে। শারীরিক কষ্ট তো আছেই, আর্থিকভাবেও ভুগতে হয় রোগী ও স্বজনদের। চিকিৎসকরা বলছেন, নিয়মিত স্ক্রিনিং, সঠিক সময়ে রোগ শনাক্ত ও যথাযথ চিকিৎসা পেলে স্তন ক্যান্সার থেকে সেরে ওঠার সম্ভাবনা অনেক বেশি।
ব্রেস্ট ক্যান্সারকে নীরব ঘাতক বললেও কম বলা হয়। পারিবারিক বা সামাজিক লজ্জায় অনেকেই গোপন রাখেন বিষয়টি। কারও কারও ক্ষেত্রে রোগ শনাক্তে দেরি হয় অজ্ঞতার কারণে। কারণ যাই হোক, পরিণতি মরণঘাতী। স্তন ক্যান্সার সম্পর্কে সচেতনতা আগের চেয়ে বাড়লেও তা যথেষ্ট নয়। আবার অনেকে জানলেও, চিকিৎসকের কাছে আসছেনই দেরিতে। আর ততোদিনে রোগ ছড়িয়ে যায় অনেকদূর।
পুরুষ বা নারী যে কেউ আক্রান্ত হতে পারে এ রোগে। তবে নারীদের মধ্যেই এ প্রবণতা বেশি। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার হিসেবে, বাংলাদেশে প্রতি ৮ জনের ১ জন স্তন ক্যান্সারে আক্রান্ত। বছরে প্রায় ১৩ হাজার নারী স্তন ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়, মারা যায় প্রায় সাড়ে ৬ হাজার।
কখন, কী কারণে রোগটি হচ্ছে, চিকিৎসা বিজ্ঞানে তা এখনও অজানা। সময় মত রোগ নির্ণয় হলে, সুস্থ হওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায় অনেকটাই। ব্রেস্ট ক্যান্সার প্রতিরোধে স্ক্রিনের উপর জোর দিয়েছেন ক্যান্সার বিশেষজ্ঞ হাবিবুল্লাহ তালুকদার রাসকিন।
চিকিৎসক ডা. শরমিন আক্তার সুমি বলেন, বিশ বছর বয়সের পর সবাইকে প্রতিমাসে একবার নিজে নিজে পরীক্ষা করা উচিত। চল্লিশের পরে প্রতি দুবছর অন্তর একবার উচিত মেমোগ্রাম করা, সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালগুলোতে যার ব্যবস্থা আছে।
ব্রেস্ট ক্যান্সারের উন্নত চিকিৎসার ব্যবস্থা আছে বাংলাদেশে। কিন্তু, আর্থিক কারণে স্তন ক্যান্সারের চিকিৎসা করাতে পারেন না অনেকে। উপজেলা স্বাস্থ্য কেন্দ্রগুলোতে পরীক্ষা করা গেলেও চিকিৎসা শহর কেন্দ্রিক হওয়ায় সবার হাতের নাগালে নেই তা। তাই চিকিৎসকরা বলছেন, শুধু চিকিৎসা দিয়ে ক্যান্সার রোধ সম্ভব না, সচেতনতাই ক্যান্সার প্রতিরোধের সবচেয়ে বড় হাতিয়ার।