পদ্মায় ভাঙনে বিলীন হয়ে গেছে রাজবাড়ীর সদর উপজেলার মিজানপুর ইউনিয়নের চর সিলিমপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়টি। পদ্মার তীর রক্ষাবাঁধের প্রায় ৬০ মিটার সিসি ব্লক ভেঙে বিদ্যালয়টি নদীতে ধসে পড়ে। এতে পিছিয়ে পড়া চরাঞ্চলের ছাত্র-ছাত্রীদের লেখাপড়া অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে।
শনিবার সরেজমিনে সদর উপজেলার চরসিলিমপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় এলাকায় গিয়ে ভাঙনের এসব চিত্র দেখা যায়।
বিদ্যালয় এলাকার স্থানীয় বাসিন্দারা বলেন, পানি কমতে থাকার কারণে পদ্মার ভাঙন বৃদ্ধি পেয়ে তীর রক্ষা বাঁধের অনেকটা অংশ ভেঙে বিদ্যালয়টি পানিতে চলে যায়। বেড়িবাঁধ রক্ষার জন্য কংক্রিট দিয়ে নির্মিত সিসি ব্লকের অংশ ধসে পড়াটা দুঃখজনক।
বিদ্যালয়ের পাশের বাসিন্দা নেকবার হোসেন বলেন, সরকার নদীরক্ষার জন্য এত টাকা পয়সা দিচ্ছে, কিন্তু সেটা ভালোভাবে কাজ না হওয়ায় বার বার নদীর পাড়, বিদ্যালয়সহ অনেককিছুই নদীতে চলে যাচ্ছে বলে ক্ষোভ প্রকাশ করেন তিনি।
ওই বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী নয়ন শেখ বলেন, নদীতে স্কুলটি বিলীন হওয়ায় আমাদের লেখাপড়া করতে অনেক কষ্ট হবে। স্কুলটি টিনশেড দিয়ে কোনো রকম তৈরি করে পড়শোনার ব্যবস্থা করার দাবি জানায় সে।
বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক সবদুল হোসেন বলেন, বিদ্যালয়ের ভবনটি পদ্মার পেটে চলে যাওয়ায় ছাত্র-ছাত্রীদের লেখাপড়া অনিশ্চিত হয়ে পড়লো। আশপাশে আর কোনো সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় আর থাকলো না।
জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা হোসনে ইয়াসমিন করিমী বলেন, বিদ্যালয়টি বেরিবাঁধের কোল ঘেঁষে হওয়ায় অনেক আগে থেকেই সেটি ঝুঁকির মধ্যে ছিলো। ছাত্র-ছাত্রীরা শংকা নিয়ে সেখানে পড়শোনা করাতো। শুক্রবার বিদ্যালয়টি পদ্মায় বিলীন হয়েছে। পাশের একটি টিনশেড আছে সেখানে ক্লাস চলবে। এছাড়াও বিদ্যালয়টির বিষয়ে তালিকা তৈরি করে শিক্ষামন্ত্রণালয়ে পাঠানো হবে বলে জানান তিনি।
রাজবাড়ী সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফাহমি মো. সায়েফ বলেন, বিদ্যালয়ের এক শিক্ষকের জমিতে আপতত টিনশেড দিয়ে বিদ্যালয়টি সংস্কার কাজ করে ছাত্র-ছাত্রীদের লেখাপড়া চালানোর ব্যবস্থা করা হবে। এছাড়াও জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তার সঙ্গে অলোচনা করে শিক্ষামন্ত্রণালয়ে বিষয়টি জানিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে জানান ওই কর্মকর্তা।
এ বিষয়ে রাজবাড়ী পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আবদুল আহাদ বলেন, পদ্মার পানি হ্রাস পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে নদীতে ভাঙন শুরু হয়। শুক্রবার বিদ্যালয়টি পদ্মার পেটে চলে যায়। সেখানে জরুরি ভিত্তিতে জিওব্যাগ ফেলানোর কাজ চলছে বলে জানান ওই কর্মকর্তা।
উৎসঃ দৈনিক যুগান্তর