আফগানিস্তানে দ্রুত স্থায়ী শান্তি প্রতিষ্ঠা, জনসাধারণের নিরাপত্তা এবং আটকেপড়া বিদেশিদের নিরাপদে প্রত্যাবর্তনের আহ্বান জানিয়েছে বাংলাদেশ।
রোববার (২২ আগস্ট) ইসলামি সহযোগিতা সংস্থার (ওআইসি) স্থায়ী প্রতিনিধিদের এক জরুরি সভায় সৌদিতে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত ও স্থায়ী প্রতিনিধি ড. মোহাম্মদ জাবেদ পাটোয়ারী এ আহ্বান জানান।
এ সময় রাষ্ট্রদূত বলেন, আফগানিস্তানের রাজনৈতিক পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে জনগণের সুবিধার জন্য বাংলাদেশ তার নিজস্ব আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের অভিজ্ঞতা ভাগ করে নিতে প্রস্তুত রয়েছে।
আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের দায়িত্বশীল সদস্য দেশ হিসেবে বাংলাদেশ প্রতিবেশী দেশগুলোর মধ্যে শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানে বিশ্বাস করে এবং অন্যকোনো দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ করে না। দক্ষিণ এশিয়ার জন্য বাংলাদেশের নীতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ১৯৭২ সালের ভাষণ থেকে অনুসৃত, যেখানে তিনি ঘোষণা করেছিলেন ‘আমরা দক্ষিণ এশিয়ায় আমাদের প্রতিবেশীদের সঙ্গে যৌথ উন্নয়ন ও সমৃদ্ধির জন্য একসঙ্গে কাজ করব।
তিনি বলেন, আফগানিস্তানে আটকেপড়া বাংলাদেশিসহ সব বিদেশিদের নিরাপদে প্রত্যাবর্তনের আহ্বান জানাচ্ছি। আমরা চাই আফগানিস্তানের মানুষ দীর্ঘস্থায়ী শান্তি ও স্থিতিশীলতা উপভোগ করবে এবং দক্ষিণ ও দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ার মধ্যে সেতুবন্ধন হিসেবে দেশের প্রাকৃতিক সম্পদ এবং ভূকৌশলগত অবস্থানের সুষ্ঠু ব্যবহার করবে।
জাবেদ পাটোয়ারী বলেন, বর্তমান পরিস্থিতিতে আফগান জনগণের জন্য আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের উন্নয়ন এবং মানবিক সহায়তা অব্যাহত রাখা উচিত। ওআইসির উচিত হবে আফগানিস্তানের পরিস্থিতি গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করা এবং শান্তি, নিরাপওা, স্থিতিশীলতা ও উন্নয়ন নিশ্চিতকল্পে ওআইসি ও এর সদস্য দেশগুলোর করণীয় বিষয়ে বিবেচনার জন্য সুপারিশ করা।
আমরা বিশ্বাস করি আফগানিস্তানের ভূমি অন্য দেশগুলোর বিরুদ্ধে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড পরিচালনার জন্য ব্যবহার করতে দেয়া হবে না। ওআইসির সদস্য দেশগুলো এই এ বিষয়ে একমত থাকবে বলে রাষ্ট্রদূত আশা প্রকাশ করেন তিনি।
বাংলাদেশের সঙ্গে আফগানিস্তানের দীর্ঘ ঐতিহাসিক ও গভীর সাংস্কৃতিক বন্ধন রয়েছে উল্লেখ করে রাষ্ট্রদূত বলেন, বাংলাদেশ ভ্রাতৃপ্রতিম আফগানিস্তানের রাজনৈতিক পরিস্থিতি গভীর আগ্রহ নিয়ে পর্যবেক্ষণ করছে এবং সেখানে স্থায়ী শান্তি প্রত্যাশা করছে।
সভা শেষে সর্বসম্মতিক্রমে একটি যৌথ বিবৃতি গৃহীত হয়, যেখানে আফগানিস্তান বিষয়ে বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণের পাশাপাশি ওআইসি মহাসচিবকে আফগানিস্তানের পরিস্থিতি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করা ও সদস্য রাষ্ট্র সমূহের সঙ্গে সমন্বয়পূর্বক ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য বলা হয়।