লাঞ্চে যাওয়ার আগে জিম্বাবুয়ের স্কোর ছিল ২ উইকেটে ২০৯ রান। প্রথম সেশনে যে প্রতিরোধ ভাঙা দুষ্কর মনে হচ্ছিল, দ্বিতীয় ও তৃতীয় সেশনে সেটিই হয়ে গেলো ভঙ্গুর! বাংলাদেশের দারুণ বোলিংয়ে ২৭৬ রানেই শেষ হয়েছে জিম্বাবুয়ের প্রথম ইনিংস। তাতে ৪৬৮ রান করা বাংলাদেশ লিড পেয়ে গেলো ১৯২ রান!
বাংলাদেশের ৪৬৮ রানের পর দ্বিতীয় দিনের শেষভাগে প্রভাব বিস্তারের পর আজও (শুক্রবার) দাপট দেখাতে থাকে স্বাগতিক ব্যাটসম্যানরা। অনেক চেষ্টার পর ব্রেন্ডন টেলরকে ফেরানো গেছে, তবে সেটা ছিল জিম্বাবুয়ে অধিনায়কের ‘উপহার’। মেহেদী হাসান মিরাজের বলে উইকেট বিলিয়ে দিয়েছেন দুর্দান্ত খেলতে থাকা টেলর। প্যাভিলিয়নে ফেরার আগে টেলর ৯২ বলে খেলে যান ৮১ রানের ঝলমলে ইনিংস, যাতে ছিল ১২ বাউন্ডারির সঙ্গে ১ ছক্কার মার।
তৃতীয় দিনের লাঞ্চে যাওয়ার আগে দারুণ সময় কাটানো জিম্বাবুয়ের স্কোর ছিল ৬৭ ওভারে ২ উইকেটে ২০৯ রান। কিন্তু দ্বিতীয় সেশনে আর ধৈর্য পরীক্ষায় সফল হতে পারেনি স্বাগতিকরা।
হারারে টেস্টে দ্বিতীয় সেশনে জিম্বাবুয়ের তিনটি উইকেট তুলে নিতে পেরেছিল বাংলাদেশ। দুটি নেন সাকিব ও একটি তাসকিন। এর পরেও এক প্রান্ত আগলে ব্যাটিং করছিলেন অভিষিক্ত ওপেনার তাকুদযাওয়ানাশে কাইতানো। তৃতীয় সেশনের শুরুতে মনে হচ্ছিল সেঞ্চুরিটাও পেয়ে যাচ্ছেন। তাকে ৮৭ রানে ঘূর্ণিবলে পরাস্ত করে সাজঘরে ফিরিয়েছেন মেহেদী মিরাজ।
তার ভালো লেন্থের বল ফ্লিক করতে গিয়ে লিটন দাসের গ্লাভসবন্দি হয়েছেন কাইতানো। ৩১১ বল খেলা এই ওপেনারের ইনিংসে ছিল ৯টি চার। কাইতানোকে ফিরিয়ে জিম্বাবুয়ের মূল প্রতিরোধটাই ভেঙে দিয়েছেন মিরাজ। তার পর একে একে ফেরান তিরিপানো, নিয়ুচি ও মুজারাবানিকেও। শেষ উইকেটে সাকিব এনগারাভাকে তালুবন্দি করালে প্রথম ইনিংসে স্বাগতিকরা অলআউট হয় ২৭৬ রানেই।
অথচ এমন দৃশ্য ভাবা যায়নি দিনের প্রথম সেশনেও। জিম্বাবুয়ের প্রতিরোধ ভাঙা যাচ্ছিল না। টেলর উইকেট বিলিয়ে দেওয়ার পর আবারও ধৈর্য পরীক্ষা নিতে থাকে জিম্বাবুইয়ানরা। অভিষিক্ত কাইতানোর সঙ্গে জুটি গড়তে থাকেন আরেক অভিষিক্ত ডিওন মায়ার্স। দ্বিতীয় সেশনে ৪৯ রান করা এই জুটিটিই ভেঙে দেন সাকিব। উড়িয়ে মারতে গিয়ে মিরাজের তালুবন্দি হন মায়ার্স (২৭)।
ব্যাট হাতে হতাশ করা সাকিব ঝলসে উঠেন তাতে। নতুন বল নেওয়ার পর নতুন ব্যাটসম্যান টিমিসেন মারুমাকেও আর থিতু হতে দেননি। লেগ বিফোরের ফাঁদে ফেলে তুলে নেন আরেকটি উইকেট। ১৭ বল খেলা মারুমা বিদায় নেন রানের খাতা খোলবার আগেই।
পরে তো ভালো লেন্থের বলে নতুন নামা রয় কায়াকেও পরাস্ত করেন তাসকিন। অফস্টাম্পে পড়া বল খোঁচা মারতে গিয়ে লিটন দাসের গ্লাভসবন্দি হয়েছেন কায়া (০)। যা ছিল তাসকিনের ইনিংসের প্রথম উইকেট। এই তিন উইকেট পতনের পরই এলোমেলো হয়ে যায় জিম্বাবুয়ের ব্যাটিং।
ব্যাট হাতে ব্যর্থ হওয়া সাকিব ৮২ রানে নিয়েছেন ৪ উইকেট। আর মিরাজ ৮২ রানে নিয়েছেন ৫টি। ৪৬ রানে একটি শিকার তাসকিন আহমেদের।