পরিবারের উপর অভিমান করে কীটনাশক পানে আত্মহত্যা করেছে সাইদুর রহমান (২৮) নামের প্রবাসী এক যুবক। ঘটনাটি ঘটেছে সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুর উপজেলার বেলতৈল ইউনিয়নে।
শনিবার (২৯ মে) দিবাগত রাত লাশটি উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসে থানা পুলিশ। নিহত সাইদুর রহমান বেলতৈল ইউনিয়নের গুপিনাথপুর পূর্ব পাড়ার বিশা মোল্লার ছেলে।
জানা যায়, পরিবারের ৩ ভাই ও ১ বোনের মধ্যে সাইদুর সবার ছোট। সংসারের স্বচ্ছলতা আনতে ২০১৫ সালে মালয়েশিয়ায় পারি জমায় সাইদুর। সেখানে কাজ করে দেশে পরিবারের কাছে টাকা পাঠানো শুরু করেন সাইদুর।
এরমধ্যে বড় দুই ভাইকে এনায়েতপুর বাজারে দোকান করার জন্য বড় অংকের টাকা বিনিয়োগ করেন তিনি। অন্যদিকে তার পিতা সাইদুরের পাঠানো টাকায় জমিও কেনেন।
দীর্ঘ ৬ বছর মালয়েশিয়ায় প্রবাস জীবন কাটিয়ে গত বছর করোনার পূর্বে দেশে আসেন সাইদুর। ইচ্ছা ছিল কয়েক মাস পরিবারের সাথে কাটিয়ে ফিরে যাবেন তিনি, কিন্তু করোনা মহামারীর কারণে মালয়েশিয়াতে ফিরতে পারছিলেন না তিনি।
এরমধ্যে প্রায় ৬ মাস পূর্বে তার ভিসার মেয়াদ শেষ হয়ে যায়। আবার কিছুদিন পূর্বে তার ব্যবহৃত মোবাইল ফোনটি চুরি হয়ে যায়। তার কাছে যে টাকা ছিল অনেকদিন আগেই সেটা শেষ হয়ে যায়, টাকা না থাকায় তিনি তার বাবা বিশা মোল্লার কাছে মোবাইল কেনার জন্য টাকা চান। তার পিতা তাকে জানায় এখন তার কাছে টাকা নেই।
পরে বড় দুই ভাইয়ের কাছে টাকা চাইলে তারাও টাকা দিতে অপারগতা প্রকাশ করেন। এজন্য তাদের মধ্যে মনমালিন্যের তৈরি হয়। পরে গত ২৭ মে বৃহস্পতিবার সাইদুর এনায়েতপুর বাজারে অবস্থিত তার বিনিয়োগে করা দোকানে তালা দেন।
শাহজাদপুর থানা সূত্রে জানা যায়, ঐ দিন বাসায় ফিরলে পরিবারের লোকজন সাইদুরের সাথে ঝগড়া ও তাকে গালমন্দ করে, সাইদুর নিজের ঘরে গিয়ে অভিমানে কীটনাশক পান করে। পরে পরিবারে লোকজন অচেতন অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে একই দিন বৃহস্পতিবার রাত ৮টায় এনায়েতপুরের খাজা ইউনুস মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করে। ২দিন চিকিৎসাধীন থেকে শনিবার ২৯ মে বিকাল ৩টায় সাইদুর মারা যান।
মৃত্যুর খবর শুনে শাহজাদপুর থানার পরিদর্শক তদন্ত আনিছুর রহমান, উপ-পরিদর্শক আসাদ, সাইফুল ও বেলতৈল ইউনিয়নের অফিসার সহকারি উপ-পরির্শক নাজমুল হোসেন ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। পরে রাত ১টায় সাইদুরের লাশ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসা হয়। আত্মহত্যার ঘটনায় শাহজাদপুর থানায় একটি ইউডি মামলা হয়েছে।