পরকীয়া প্রেমের জের ধরে স্ত্রী ও শ্বশুরবাড়ির লোকজনের হাতে নির্মম নির্যাতনের শিকার প্রবাসী মনজুর আলম (৪৫) অবশেষে মারা গেছেন। নিজ স্ত্রী ও তার শ্বশুর বাড়ির লোকজন মিলে গতকাল শুক্রবার লাঠিসোটা দিয়ে তাকে পিটিয়ে জখম করে। মারধরের এ ঘটনা ঘটেছে মনজুরের ৭/৮ বছর বয়সের একমাত্র কন্যার সমানেই।
দীর্ঘক্ষণ ধরে প্রবাসী মনজুরকে নির্মমভাবে মারধরের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছে। এ ঘটনায় স্ত্রী ও শ্বশুরসহ আটজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
মারধরের শিকার মনজুরকে গুরুতর আহত অবস্থায় শুক্রবার কক্সবাজার জেলা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে তার অবস্থার অবনতি হলে আজ শনিবার দুপুরের দিকে চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে নেওয়ার পথে তিনি মারা যান। নিহত মঞ্জুর আলম কক্সবাজার সদর উপজেলার চৌফলদন্ডি নতুন মহাল গ্রামের মৃত আব্দুল গনির ছেলে।
এলাকাবাসী জানিয়েছে, নিহত মনজুর আলম দীর্ঘদিন সৌদি আরবে কাটিয়েছেন। বেশ কিছুদিন আগে ছুটিতে এসে আর বিদেশ যাওয়া হয়নি। প্রবাস জীবনের আয় পাঠাতেন তার স্ত্রী রীনা আকতারের নামে। স্ত্রী স্থানীয় ঈদগাঁও এলাকায় নিজের নামে জমি কিনে সেখানে স্বামীর পাঠানো টাকায় বানিয়েছেন বহুতল ভবন। স্বামীর দীর্ঘদিনের প্রবাস জীবনের সুযোগে স্ত্রী রীনা আকতার পরকীয়ায় জড়িয়ে পড়ে বলে অভিযোগ ওঠে। এমন অভিযোগ নিয়ে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে পারিবারিক কলহ দেখা দেয়।
বেশ কিছুদিন আগে স্বামী মনজুর প্রবাস থেকে দেশে ফিরলেও তার স্ত্রী রীনা তাকে ঘরে ঢুকতে বাধা দিয়ে আসছেন। এ নিয়ে এলাকায় অনেক সালিশ-বিচার হলেও স্ত্রীর শ্বশুর পক্ষের দাপটে মনজুর বাড়ি ঢুকতে পারেনি। শুক্রবার তিনি সাহস করে ঘরে ঢুকতে গেলে স্ত্রী, শ্বশুর এবং তার স্বজনরা মিরে মনজুরকে রাস্তায় ফেলে পেটায়। নির্যাতনের পুরো ঘটনার ভিডিও ভাইরাল হয়ে পড়ে।
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে ঈদগাঁও থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আবদুল হালিম জানান, এ ঘটনার ভাইরাল হওয়া ভিডিও দেখে পুলিশ সুপার মো. হাসানুজ্জামান ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেন। পরে মনজুর আলমের স্ত্রী রীনা আকতার, শ্বশুর, শাশুড়ি, শ্যালকসহ আটজনকে আটক করা হয়েছে। এ ব্যাপারে নিহতের বড় ভাই বদিউল আলম বাদী হয়ে হত্যা মামলা দায়ের করেছেন।