ফরিদপুর প্রতিনিধিঃ বর্তমান মহামারী করোনা ভাইরাসের উদ্ভব পরিস্থিতিতে সকল ব্যবসায়ীসহ গোটা বিশ্ব আজ হুমকির মুখে। আর এমনই সময় গঠনতন্ত্রের তোয়াক্কা না করে ফরিদপুর শহরের বায়তুল মোকাদ্দেম ট্রাস্ট মসজিদ বিপণী কেন্দ্রের এডহক কমিটি ঐ মার্কেটের সকল দোকানদারদের ভাড়া গড়ে প্রায় ৫০০ গুন বাড়িয়ে দিয়ে জামানত চেয়ে নোটিশ প্রদান করায় ব্যবসায়ীরা জুলুম নির্যাতনের শিকার হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
অভিযোগে জানা যায়, ফরিদপুর শহরের গোয়ালচামট এলাকায় ঐতিহ্যবাহী হাজী শরিয়াতুল্লাহ বাজার সংলগ্ন বায়তুল মোকাদ্দেম ট্রাস্ট মসজিদ বিপণী কেন্দ্রে প্রায় ১৩৬ টি দোকান ব্যবসায়ী সততা ও সুনামের সহিত ব্যবসা পরিচালোনা করে আসছে। এই বিপনী কেন্দ্র গুলি বায়তুল মোকাদ্দেম ট্রাস্ট ও মার্কেটের একটি কমিটি দ্বারা পরিচালিত। তবে এই দোকান ব্যবসায়ীদের সম্পুর্ন ভাড়া তোলার দায়ীত্ব বায়তুল মোকাদ্দেম ট্রাস্ট কমিটিই করে আসছে। সম্প্রতি করোনা সৃষ্ট উদ্ভব পরিস্থিতিতে সকল ব্যবসা প্রতিষ্ঠান হুমকির মুখে থাকা অবস্থায় বায়তুল মোকাদ্দেম ট্রাস্ট মসজিদ বিপণী কেন্দ্রের এডহক কমিটি ঐ মার্কেটের সকল দোকানদারদের বিভিন্ন ইউনিটে (ক্যটাগরি হিসাবে ক, খ, গ) বিভক্ত করে গড়ে প্রায় ৫০০ গুন দোকান ভাড়া বাড়িয়ে দেয়। এতে দেখা যায়, কোন দোকানের মাসিক ভাড়া ১০০০ টাকার যায়গায় বাড়িয়ে ১০ হাজার টাকা, ৭৪০ টাকার মাসিক ভাড়ার যায়গায় ৫ হাজার টাকা, ৯২৫ টাকার মাসিক ভাড়ার যায়গায় ৫ হাজার টাকা, ৯০০ টাকার মাসিক ভাড়ার যায়গায় ৩ হাজার টাকাসহ প্রতিটি দোকানের ভাড়াই এমনই করে প্রায় ৫০০ গুন বেশি ভাড়া আদায়ের জন্য দোকান ব্যবসায়ীদের নোটিশ প্রদান করেন বায়তুল মোকাদ্দেম ট্রাস্ট মসজিদ বিপণী কেন্দ্রের এডহক কমিটির সদস্য মুহাঃ শাহীন চৌধূরী। দোকানীরা অভিযোগে বলেন, কোন দোকানের ভাড়া এভাবে হঠাৎ করেই রাতারাতি ৫০০ গুন বাড়তে পারে না। তা ছাড়া বর্তমান করোনাময় এই দুর্যোগকালীন সময়ে প্রতিটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানসহ নানা শ্রেনী পেশার মানুষ এর সার্বিক কর্মকান্ড স্থবির হয়ে পরছে। এমত অবস্থায় কিভাবে একটি দোকানের ভাড়া ৫০০ গুন বেড়ে যায় তা আমাদের বোধগম্য নয়? এ ছাড়াও বায়তুল মোকাদ্দেম ট্রাস্ট মসজিদ বিপণী কেন্দ্রের কমিটি কিছুদিন আগে বিলুপ্তি হওয়ায় বর্তমানে এডহক কমিটি গঠন করে মার্কেটটি পরিচালিত হচ্ছে। কিন্তু বায়তুল মোকাদ্দেম ট্রাস্ট এর প্রচলিত নিয়মানুযায়ী কোন কমিটি বিলুপ্ত হওয়ার পর এডহক কমিটি দোকান ভাড়ার টাকা বাড়িয়ে দিতে পারে না। ব্যবসায়ীরা অভিযোগে আরো বলেন, বর্তমান এডহক কমিটির সদস্য মুহাঃ শাহীন চৌধূরী পুর্বে এই বায়তুল মোকাদ্দেম ট্রাস্ট কমিটির সাধারন সম্পাদক থাকা অবস্থায় ব্যবসায়ীদের নিজ নামে ক্রয়কৃত দোকান বাবদ মোটা অংকের টাকা চাঁদা দাবি করে। এই টাকা দিতে অস্বীকার করায়ই ঐ মার্কেটের বর্তমান এডহক কমিটির সদস্য মুহাঃ শাহীন চৌধূরী দোনানীদের প্রতি দারুন ক্ষিপ্ত হয়।
এই ক্ষিপ্ততার জের ধরেই তার ব্যাক্তি স্বার্থ চরিতার্থ হাসিল করার উদ্দেশ্যে দোকান ভাড়া বৃদ্ধির সাথে সাথে জামানতের অজুহাত দেখিয়ে দোকানের আয়তন অনুযায়ী চাঁদা বাবদও ৫০ হাজার থেকে ২ লক্ষ টাকা আদায় করার জন্য দোকানিদের নোটিশ প্রদান করে। একপর্যায়ে এডহক কমিটির সদস্য মুহাঃ শাহীন চৌধূরীরর উপস্থিতিতে কমিটির অন্যান্য সদস্য মো: জাকির হোসেন পিকুল, গিয়াসউদ্দিনসহ অন্যান্যরা মিলে উল্লেখিত টাকা নেওয়ার জন্য সকল দোকানদারদের চাপ প্রয়োগ করে। উল্লেখ্য গত ১০/১২/২০২০ সালে সকল দোকানের ভাড়া ৮০ শতাংশ বৃদ্ধি করে অত্র ট্রাস্টের সাধারন সম্পাদক মুহাঃ শাহীন চৌধূরী স্বাক্ষরিত একটি নোটিশ প্রদান করে, যার স্মারক নং ১০(১৩৬)/২০। এই নোটিশ প্রদানের পর সকল দোকানদাররা ভাড়া কমানোর জন্য বায়তুল মোকাদ্দেম ট্রাস্ট কমিটির সভাপতি ও ফরিদপুর জেলা প্রশাসক বরাবর কে গত ১৮-১-২০২১ ইং তারিখে একটি আবেদন করেন। এই আবেদনের পরে ট্রাস্ট কমিটি সন্তষজনক কোন জবাব না দিয়ে গত ২৫-৪-২০২১ তারিখে ফের ৫০০ গুন ভাড়া বাড়িয়ে দিয়ে এডহক কমিটির সদস্য মুহাঃ শাহীন চৌধূরী স্বাক্ষরিত নোটিশ প্রতি দোকানদারদের প্রদান করে। প্রসঙ্গত ৮০ শতাংশ ভাড়া বৃদ্ধির পর ট্রাস্ট কমিটি ভাড়া নেওয়া বন্ধ করে দেওয়ায় ব্যবসায়ীরা ফরিদপুরের বিজ্ঞ প্রিমিসি রেন্ট কন্ট্রোলার আদালত এ দোকান ভাড়া পরিশোধ করে আসছেন। বর্তমান এই করোনাকালীন সময়ে অতিরিক্ত ভাড়া বন্ধ করতে ফরিদপুর জেলা প্রশাসকের সদয় হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন সকল ব্যবসায়ীবৃন্দ। এ বিষয়ে এডহক কমিটির সদস্য মুহাঃ শাহীন চৌধূরীরর সাথে মুঠোফোনে কথা হলে তিনি আনিত অভিযোগের বিষয়ে এড়িয়ে গিয়ে এই প্রতিবেদকে দেখা করতে বলেন। অভিযুক্ত পিকুল ও গিয়াস এর মুঠোফোনে ফোন করলে তারা ফোন ধরেনি।