পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভা নির্বাচনে তারকা প্রার্থীদের মধ্যে বেশ কয়েকজনের ভরাডুবি হয়েছে। তাদের একজন অভিনেত্রী শ্রাবন্তী চট্টোপাধ্যায়। বিজেপির হয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করা এই প্রার্থী হেরেছেন ৫০ হাজার ভোটের ব্যবধানে।
বেহালা পশ্চিম কেন্দ্রে তৃণমূলের হেভিওয়েট নেতা পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে নির্বাচন করেছিলেন শ্রাবন্তী। তার এই লজ্জাজনক হার নতুন করে আলোচনার জন্ম দিয়েছে।
হিন্দুস্তান টাইমস বলছে, রোশন সিং-এর সঙ্গে তৃতীয় বিয়ে ভাঙা নিয়ে গত কয়েক মাসে সংবাদ শিরোনামে থেকেছেন শ্রাবন্তী চট্টোপাধ্যায়। এরপর আচমকাই প্রকাশ্য রাজনীতির ময়দানে পা রাখেন শ্রাবন্তী। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ঘনিষ্ঠ অভিনেত্রী রং বদলে যোগ দেন বিজেপিতে। তৃণমূলের তারকা প্রার্থী মিমি-নুসরাতকে টেক্কা দিতে মোদি-অমিত শাহরা ভরসা রেখেছিলেন শ্রাবন্তীর ওপর। কাজে এল না সেই ম্যাজিক।
বিজেপির তুরুপের তাস হিসাবে ধরা হয়েছিল যে শ্রাবন্তীকে, তিনি পার্থর কাছে হারলেন ৫০ হাজার ৮৮৪ ভোটে। অথচ গোটা নির্বাচনী প্রচার জুড়ে নিজেকে বেহালার ঘরের মেয়ে হিসাবে প্রচার করেছিলেন শ্রাবন্তী। এই বিধানসভা কেন্দ্রেই জন্ম ও বড় হয়ে উঠা নায়িকার। তবুও ঘরের মেয়েকে পাত্তা দিল না বেহালাবাসী।
এর পেছনে শ্রাবন্তীর ব্যক্তি ইমেজকে দায়ী করছেন অনেকে। তার একাধিক সংসার ও প্রেম এবং ক্যারিয়ার জুড়ে বিতর্ক ভোটের আগে বিবেচনায় নিয়েছে ভোটাররা। এছাড়া রাজনীতির ময়দানে নামবার পরেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে বিঁধে একাধিক আক্রমণ শাণিয়েছেন শ্রাবন্তী। কখনও মা-মাটি-মানুষের সরকারকে দুর্নীতিগ্রস্ত বলেছেন তো কখনও অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে ‘তোলাবাজ ভাইপো’ বলে কটাক্ষ করেছেন। এমনি নির্বাচনী প্রচারে বাধা দেওয়ার অভিযোগও তুলেছিলেন মমতা-অভিষেকদের বিরুদ্ধে।
শ্রাবন্তীর ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে বিতর্কের শেষ নেই, আর সেই রেশের মাঝেই নায়িকার রাজনীতির ময়দানে নামার ফল খুব একটা সুখকর হল না, তা বলাই বাহুল্য। যে শ্রাবন্তী মমতার ভক্ত ছিলেন তিনিই কিনা ক্ষমতার লোভে দল পাল্টিয়ে বিজেপি শিবিরে ভিড়ে যান। যেটি বেহালার জনগণ মেনে নিতে পারেনি।
শুধু শ্রাবন্তী নন, বিজেপির তারকা প্রার্থীরা অধিকাংশই ব্যর্থ। জয়ের স্বাদ পাননি বিজেপির কোনও নায়িকা-প্রার্থী। বেহালা পূর্ব কেন্দ্র থেকে হেরেছেন পায়েল সরকার, বারহনগরে পরাজিত পার্নো, মুখ থুবড়ে পড়েছেন শ্যামপুর থেকে হেরেছেন তনুশ্রী চক্রবর্তী।