মালয়েশিয়ার কোচ গোপিনাথন কৃষ্ণমূর্তির অধীনে একসময় খেলেছেন বাংলাদেশি মিডফিল্ডার প্রিন্স লাল সমুন্দ। থাইল্যান্ডে বাছাই পর্বের পর আর্জেন্টিনায় যুব অলিম্পিকেও খেলেছিলেন তিনি। সেই থেকে কোচের গুডবুকে ঢুকে পড়েছেন ১৯ বছর বয়সী তরুণ হকি খেলোয়াড়। হঠাৎ মার্চের শুরুতে গোবিনাথনের মাধ্যমে ইতালিয়ান হকি প্রতিযোগিতা ‘সিরি আ-২’ চ্যাম্পিয়নশিপের দল পিস্তোইয়া থেকে আমন্ত্রণ আসে। আর সেটা লুফে নিয়ে এখন ইতালির প্রতিযোগিতায় দাপটের সঙ্গে খেলে যাচ্ছেন প্রিন্স।
প্রথম ম্যাচে তার দল ৪-২ গোলে জিতেছে কুসকিউবে ব্রেসিয়ার বিপক্ষে। যেখানে প্রিন্সের অ্যাসিস্ট দুটি। চুক্তি অনুযায়ী আগামী জুন পর্যন্ত সেখানে খেলবেন এই মিডফিল্ডার।
পুরনো ঢাকার নাজিরবাজারে বড় হলেও প্রিন্সের হকির চর্চা প্রস্ফুটিত হয়েছে বিকেএসপিতে। ঢাকা লিগে ওয়ান্ডারার্স ও ভিক্টোরিয়াতে খেলেছেন তিনি। এছাড়া অনূর্ধ্ব-২১ দলের হয়ে ওমানের বিপক্ষে সিরিজ খেলার অভিজ্ঞতা আছে এই তরুণের।
হঠাৎ ইতালির ক্লাবে সুযোগ প্রাপ্তিতে প্রিন্স নিজেই অবাক। ইতালি থেকে মুঠোফোনে বলেছেন, ‘গোপিনাথন স্যার আমাকে প্রথম এই সুযোগের কথা বলেন। আমি রাজিও হয়ে যাই। আসলে ইউরোপের দলের হয়ে হকি খেলতে পারবো, তা কখনও চিন্তাও করিনি। আমি আসলে বেশ অবাক হয়েছি।’
প্রিন্সের দলে বিদেশি কোটায় উগান্ডার দুই খেলোয়াড় আছেন। তাদের সঙ্গে লড়াই করে দলে সুযোগ করে নিয়েছেন তিনি। নিজের সেরাটা দিয়ে লড়াই করে যাচ্ছেন এই তরুণ, “এই দলটি প্রতি বছর বিভিন্ন দেশ থেকে অনূর্ধ্ব-২১ দলের খেলোয়াড় নিয়ে থাকে। সেই সূত্রে আমার এখানে খেলার সুযোগ এসেছে। এখানকার পরিবেশ থেকে সবকিছুই উন্নতমানের। খেলা শেষে কত পারিশ্রমিক পাবো, জানি না। ওরাই আমার সবকিছু বহন করছে। আর গোপিনাথন স্যার বলেছেন, ‘খেলে যাও, খেলা শেষে ওরা ভালো পারিশ্রমিক দেবে।”
১০ মার্চ ইতালি গিয়েছেন, থাকবেন জুন পর্যন্ত। শেষ পর্যন্ত থেকে দলের হয়ে সুনাম অর্জন করতে চান প্রিন্স। বর্তমানে ইতালিতে লকডাউন চলছে। তাই ইচ্ছা থাকলেও বাইরে যেতে পারছেন না। তবে যেতে না পারলেও অখুশি নন প্রিন্স, ‘ওরা আমাকে সব ধরনের সুযোগ-সুবিধা দিচ্ছে। প্রথম ম্যাচের পর কোচ আমার প্রশংসা করেছেন। সেখানে আপাতত লকডাউনের মধ্যে আছি। তা কেটে গেলে তখন অন্য জায়গায় যেতে পারবো। এখানকার সবকিছুর স্বাদ নেওয়ার সুযোগ থাকবে।’
প্রিন্সের স্বপ্ন একসময় লাল-সবুজ দলের হয়ে মাঠ মাতানো। সেই স্বপ্নে বিভোর থেকে এখন নিজেকে শাণিত করে যাচ্ছেন মাত্র এইচএসসি শেষ করা তরুণ। এর আগে জিমি-চয়নরা জার্মানিসহ ইউরোপের অন্য দেশের লিগে খেলেছেন। সেই তালিকায় সর্বশেষ যুক্ত হলেন প্রিন্স।