ছোট দেশ, প্রায় পনেরো লাখ জনসংখ্যার এ দেশটিতে স্থানীয় নাগরিকদের তুলনায় তিনগুণ বেশি প্রবাসীরা বিভিন্ন কাজে নিয়োজিত।
মধ্যপ্রাচ্যের তেল-সম্পদে সমৃদ্ধশালী দেশ কুয়েত। দেশটিতে প্রায় তিন লাখ প্রবাসী বাংলাদেশি রয়েছেন, এদের মধ্যে প্রায় ২৫ থেকে ৩০ হাজার প্রবাসী এদেশের মাজারা বা কৃষিকাজের সঙ্গে সম্পৃক্ত।
কৃষিপ্রধান অপার সম্ভাবনার নিজ দেশ ছেড়ে প্রবাসে এসে শত প্রতিকূলতা নিয়েও সবজি চাষ ও কুয়েতের সবজি চাহিদা মেটাতে কৃষিখাতে এক উজ্জ্বল ও অনবদ্য দৃষ্টান্ত রেখে চলেছেন বাংলার সূর্যসন্তান প্রবাসীরা।
উপসাগরীয় দেশ কুয়েতে কৃষিঅঞ্চল বলে খ্যাত দুটি এলাকা, দেশটির এক প্রান্তে ‘ওয়াফরা’ ও অন্য প্রান্তে ‘আব্দালি’ এলাকা। আর এ দুটি এলাকায় প্রায় ২৫ থেকে ৩০ হাজার প্রবাসী বাংলাদেশি শ্রমিকরা কুয়েতের সিংহভাগ সবজির চাহিদা মেটাতে অক্লান্ত পরিশ্রম করে যাচ্ছেন।
কুয়েতের উত্তর সীমান্তের নিকটবর্তী ইরাকের বাসরা এর ৮০ নম্বর রোডের পূর্বদিকে অবস্থিত কৃষি খামারের একটি বৃহৎ অঞ্চল এর নাম আব্দালি। অন্যদিকে, কুয়েতের প্রাক্তন নিউট্রাল জোনের সীমানার মধ্যে দক্ষিণ অঞ্চলের নাম ওয়াফরা। দেশটির আহমদি গভর্নরেটের অংশ এটি। উর্বর মাটির পাশাপাশি গবাদি পশু-পাখির খামারের জন্য অত্যন্ত সুপরিচিত এ অঞ্চলটি। কুয়েত-সৌদি আরব সীমান্তের সমান্তরালে অবস্থিত এ এলাকাটি দেশটির রাজধানী শহর থেকে ১১০ কিলোমিটার দূরে।
ওই এলাকায় বাংলাদেশি কৃষকরা চাষাবাদ করছেন মাসকলাই, ফুলকপি, বাঁধাকপি, টম্যাটো, ক্যাপসিকাম, বেগুন, লেট্যাসসহ বিভিন্ন সবজি ও আবাদি ফসল। অবশ্য প্রবাসীরা অনেক কষ্ট করে সবজি উৎপাদনের জন্য তাদের ন্যায্য পারিশ্রমিকও পাচ্ছেন বলে জানান।
প্রচণ্ড গরমের দেশ কুয়েত, ৫০ থেকে ৬০ ডিগ্রি তাপমাত্রার এ দেশে শীতকালীন সবজি চাষ করে চলেছেন প্রবাসী বাংলাদেশিরা। শীত মৌসুমে শীতকালীন সবজি সহজেই চাষ সম্ভব হলেও গরমের সময় বিশেষ পদ্ধতিতে সবজি চাষ করতে হয়, ওই এলাকায় কৃষিকর্মে নিয়োজিত বাংলাদেশি শ্রমিকরা জানান, বর্তমানে লোকবল কম থাকার কারণে সবজি চাষ ও বাজারজাত এর ক্ষেত্রে নানা সমস্যার সম্মুখীন হতে হচ্ছে তাদেরকে। কুয়েতের দুই কৃষি-অঞ্চলে কর্মরত প্রবাসী বাংলাদেশিদের হাতের ছোঁয়ায় দেশটি কৃষিখাতে ব্যাপক উন্নতি সাধন করেছে। ওয়াফরা এলাকার শ্রমজীবী প্রবাসীদের সুযোগ-সুবিধা ও সমস্যা সমাধানে কুয়েত দূতাবাসের সহযোগিতা অত্যন্ত জরুরি বলে মনে করছেন মরুর বুকে কৃষি উৎপাদনকারী বাংলাদেশি রেমিটেন্স যোদ্ধারা।