২০১৭-১৮ মৌসুমে পেশাদার ফুটবল লিগের প্রথম স্তরে জায়গা করে নেয় সাইফ স্পোর্টিং ক্লাব। সেই সময় সার্বিয়ান কোচ ছিলেন নিকোলাস কাভাজোবিচ। তার হাত ধরেই পরবর্তীতে দলে আসেন তিন ইউরোপীয় খেলোয়াড়কে। কিন্তু লিগ শুরুর আগেই এই তিন খেলোয়াড়কে পাওনা না দিয়ে বিদায় করে দেয় সাইফ। চলে যেতে হয় ওই কোচকেও। এই খেলোয়াড়দের চুক্তি অনুযায়ী পুরো মৌসুমের টাকা না দেওয়ায় এখন ফিফার নিষেধাজ্ঞার কবলে পড়েছে সাইফ স্পোর্টিং।
ঘটনাটি ছিল এমন। ওই সময় লিগের আগেই বিদায় করে দেওয়া হয় স্লোভাকিয়ার ম্যাকো ভিলিয়াম, মন্টেনেগ্রোর সাভা গারদাসোভিচ ও সার্বিয়ান গোরানা ওবরাদভিচকে। মানসম্মত খেলোয়াড় না হওয়ায় তাদেরকে লিগে খেলায়নি ক্লাবটি।
কিন্তু পাওনা না পাওয়ায় পরবর্তীতে এই তিন খেলোয়াড় নালিশ জানায় ফিফার কাছে। গত ২৪ মার্চ ছিল তাদের পাওনা পরিশোধের শেষ সময়। সেটি না করায় ফিফার শাস্তির খড়গ নেমে এসেছে। এখন যতদিন পর্যন্ত ক্লাবটি জরিমানা সহ অর্থ পরিশোধ না করবে, ততদিন পর্যন্ত খেলোয়াড় নিবন্ধন করতে পারবে না।
চুক্তি অনুযায়ী প্রায় কোটি টাকা পাওয়ার কথা ছিল ওই তিন বিদেশি খেলোয়াড়ের। সেই বিষয় নিয়ে ফিফার সঙ্গে এতদিন দেন-দরবারও চালিয়ে আসছিল সাইফ স্পোর্টিং। কিন্তু তা না দেওয়ায় জরিমানাও হয়েছে।
বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক আবু নাঈম সোহাগ বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেছেন, ‘দুই মৌসুম আগে সাইফ স্পোর্টিংয়ের তিনজন খেলোয়াড় তাদের পারিশ্রমিক সংক্রান্ত বিষয়ে ফিফার কাছে অভিযোগ করে। গত মার্চে ফিফার ডিসিপ্লিনারি কমিটি এই তিনজন খেলোয়াড়কে নির্দিষ্ট পরিমাণ বকেয়া ও ক্ষতিপূরণ দেওয়ার এবং চুক্তির বিষয়গুলো মাথায় রেখে বকেয়া পরিশোধের নির্দেশনা দিয়েছিল। প্রতিটি ইস্যুতে সাইফ স্পোর্টিংকে ৫ হাজার সুইস ফ্রাঁ করে জরিমানাও করা হয়েছিল। ৩০ দিনের মধ্যে সবকিছু পরিশোধের বাধ্যবাধকতা দেওয়া হয়েছিল।’
এরপর এই কর্মকর্তা যোগ করেন, ‘এই পেমেন্টগুলো দেওয়ার কোনও বৈধ কাগজ আমাদের বা ফিফাকে যতদিন না দেওয়া হচ্ছে, ততদিন ফিফার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী সাইফ স্পোর্টিং বা এর যুব দলের পক্ষে কোনও দেশি-বিদেশি খেলোয়াড় নিবন্ধন নিষিদ্ধ থাকবে।’
সাইফ স্পোর্টিংয়ের ব্যবস্থাপনা পরিচালক নাসির উদ্দিন চৌধুরী নিজেদের ভুল স্বীকার করে নিয়েছেন, ‘আমাদের ভুলের কারণে আজ অনেক টাকা দিতে হচ্ছে। ওই সময় আমরা নতুন ক্লাব ছিলাম। তাই আমরা অনেক কিছুই বুঝিনি। এখন যাই হোক, বিদেশি খেলোয়াড়দের না খেলিয়েই অর্থ ও জরিমানাসহ কোটি টাকার ওপরে পরিশোধ করতে হবে। আমরা করোনা পরিস্থিতি কেটে গেলেই তা শোধ করে দেবো।’