বাংলাদেশে ভাস্কর্য ইস্যুতে সরকারকে ইসলামের শিক্ষা অনুযায়ী চলা এবং সরকারের প্রতি ‘দেশের ইসলাম বিদ্বেষীদের’ নিয়ন্ত্রণের আহ্বান জানিয়েছে হেফাজতে ইসলাম।
এছাড়া সংকট নিরসনে সরকারের সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে ‘যোগাোযোগ হচ্ছে’ এবং ‘দ্রুতই বৈঠকের ব্যবস্থা হবে’ বলে জানিয়েছেন সংগঠনটির নেতৃবৃন্দ।
ঢাকায় বৃহস্পতিবার এক সংবাদ সম্মেলন করে এসব অভিযোগ করে সংগঠনটি।
লিখিত বক্তব্যে হেফাজতে ইসলামের নায়েবে আমীর নুরুল ইসলাম দাবি করেন, কুষ্টিয়ায় বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠাতা রাষ্ট্রপতি শেখ মুজিবুর রহমানের ভাস্কর্য ভাঙার সঙ্গে দলটির কারো সংশ্লিষ্টতা নেই।
তিনি অভিযোগ করেছেন, “ভাস্কর্য ভাঙার দায় হেফাজতে ইসলামের ওপর ‘চাপিয়ে’ আমাদের ‘ঘায়েল করার’ চেষ্টা হচ্ছে।”
বাংলাদেশে ভাস্কর্য ইস্যুতে সরকারকে ইসলামের আকিদা, ঈমান ও শিক্ষার বিরুদ্ধে গিয়ে ‘পৌত্তলিকতা প্রসারের রাষ্ট্রীয় গোমরাহির পথ পরিহার করার’ আহ্বান জানান নুরুল ইসলাম।
তিনি বলেছেন, “ইতোমধ্যে শীর্ষ ওলামায়ে-কেরামের পক্ষ থেকে যে কোনো প্রাণীর ভাস্কর্য নির্মাণের বিষয়টি ‘ইসলাম-সম্মত নয়’ বলে সর্বসম্মত ফতোয়া প্রদান করা হয়েছে, যা একটি পত্র দিয়ে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে অবহিত করা হয়েছে। আমরা আশা করবে সে আলোকে সিদ্ধান্ত নেবে সরকার।”
ভাস্কর্য ইস্যুতে হেফাজতে ইসলামের অবস্থান পরিবর্তন হবে না বলে জানিয়ে দেন তিনি।
সংবাদ সম্মেলনে তিনি আরো অভিযোগ করেন, দেশের ইসলাম বিদ্বেষীরা লাগামহীনভাবে শীর্ষ ওলামাদের বিরুদ্ধে কটূক্তি করছে এবং ঘৃণা ছড়াচ্ছে।
তিনি বলেন, “সেক্যুলার শব্দের আড়ালে আশ্রয় নেয়া ইসলাম বিদ্বেষীদের নিয়ন্ত্রণ করার জন্য সরকারের প্রতি জোর আহ্বান জানাচ্ছি। অন্যথায় বাংলাদেশের ধর্মপ্রাণ মানুষ ‘এই কুচক্রী’দের রুখে দিতে রাস্তায় নামতে বাধ্য হবে।”
হেফাজতে ইসলামের নেতাদের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহ মামলাকে ‘ মিথ্যা’ দাবি করে সংগঠটির পক্ষ থেকে মামলা প্রত্যাহারের দাবি জানানো হয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে হেফাজতে ইসলামের অন্যান্য নেতৃবৃন্দের সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন মামুনুল হক।
‘সরকারের সঙ্গে দ্রুতই বৈঠক হবে’
সংবাদ সম্মেলনে হেফাজতে ইসলামের নেতৃবৃন্দ জানান, সংকট নিরসনে সরকারের সঙ্গে তাদের আলোচনা চলছে।
হেফাজতের নায়েবে আমীর নুরুল ইসলাম বলেছেন, “আমাদের আলোচনার কোন সময় এখনো নির্ধারিত হয়নি। সরকারের সঙ্গে যোগাযোগ চলছে। আশা করি দ্রুতই বৈঠকের ব্যবস্থা হবে।”
বাংলাদেশের ইসলামপন্থী দলগুলো ঢাকার ধোলাইপাড়ে শেখ মুজিবুর রহমানের একটি ভাস্কর্য স্থাপন নিয়ে ইসলামপন্থী দলগুলোর কট্টর অবস্থান নিয়ে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সাথে ধর্মভিত্তিক দলগুলোর টানাপোড়েন শুরু হয়।
গত শনিবার যেকোন উদ্দেশ্যে ভাস্কর্য তৈরি ‘ইসলামে নিষিদ্ধ’ বলে আলেমদের একটি অংশ বিবৃতি দেন।
এরপর ৫ই ডিসেম্বর রাতে কুষ্টিয়ায় শেখ মুজিবুর রহমানের একটি নির্মাণাধীন ভাস্কর্য ভাংচুরের ঘটনায় চারজনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
পরে ৭ই ডিসেম্বর হেফাজতে ইসলামীর নেতা জুনায়েদ বাবুনগরী এবং মামুনুল হকসহ তিন জনের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগ তদন্তের জন্য পুলিশের একটি তদন্ত সংস্থা পিবিআইকে নির্দেশ দিয়েছে আদালত।