খেলাপি ঋণের পরিমাণ ও হার কমানো সম্ভব। এ ক্ষেত্রে ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা ও পরিচালনা পর্ষদকে উদ্যোগ নিতে হবে। রাজধানীর বিআইবিএমে বুধবার ভার্চুয়াল মাধ্যমে অনুষ্ঠিত এক সেমিনারে বক্তারা এসব কথা বলেন। ‘বাংলাদেশের ব্যাংকিং খাতে খেলাপি ঋণ; সামষ্টিক অর্থনীতি ও ব্যাংকের অবস্থান’ শীর্ষক সেমিনারটি আয়োজন করে বাংলাদেশ ইন্সটিটিউট অব ব্যাংক ম্যানেজমেন্ট (বিআইবিএম)।
বিআইবিএমের মহাপরিচালক ড. আখতারুজ্জামানের সভাপতিত্বে সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর এসএম মনিরুজ্জামান। আলোচক ছিলেন বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক মোহাম্মাদ হুমায়ুন কবির, সোনালী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) আতাউর রহমান প্রধান, মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) সৈয়দ মাহবুবুর রহমান, ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) সৈয়দ ওয়াসেক মোহাম্মদ আলী, বিশ্বব্যাংকের সিনিয়র ফিন্যান্সিয়াল সেক্টর স্পেশালিস্ট একেএম আবদুল্লাহ, ইডকলের নির্বাহী পরিচালক মাহমুদ মালিক।
ডেপুটি গভর্নর মনিরুজ্জামান বলেন, সার্ক দেশসমূহের মধ্যে বাংলাদেশের খেলাপি ঋণের হার তুলনামূলক কম। খেলাপি ঋণের পরিমাণ ও হার বাংলাদেশে গ্রহণযোগ্য মাত্রায় নামিয়ে আনা সম্ভব। ব্যাংক যখন ঋণ দেয়, তখন সব ঋণই কিন্তু ভালো থাকে। সময়ের ব্যবধানে এটি খেলাপি হয়ে পড়ে। খেলাপি কমিয়ে আনতে ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা ও পরিচালনা পর্ষদকে উদ্যোগী হতে হবে। অবশ্য খেলাপি বৃদ্ধির আরেকটি কারণ হচ্ছে, রাজনৈতিক গোলযোগ ও অনিশ্চয়তা। এতে অনেকেই বিনিয়োগ নিয়ে অনিশ্চয়তায় ভোগেন। এ জন্য বাংলাদেশ ব্যাংক ও সরকার প্রয়োজনীয় নীতিমালা তৈরির কাজ করছে। ব্যাংকিং নীতিমালা অনুযায়ী, বন্ধকের বিপরীতে ঋণ প্রদান করা হয়ে থাকে। কিন্তু জামানত রেখেই যে ঋণ দিতে হবে, তা নয়। আমরা জামানতবিহীন ঋণ বিতরণের সুযোগও রেখেছি। ব্যাংক দেখবে, কোন গ্রাহককে কতটুকু বিশ্বাস করবে।
তিনি বলেন, একই গ্রাহক বিভিন্ন ব্যাংক থেকে ঋণ নিচ্ছে। এর পরিমাণও বাড়ছে। এটি খেলাপি ঋণ বৃদ্ধির জন্য সহায়ক হয়ে উঠছে। কিন্তু অনেক ব্যাংকই একক গ্রাহক সর্বোচ্চ সীমা মানতে গিয়ে চাহিদা অনুযায়ী ঋণ দিতে পারে না। তখন গ্রাহককে বাধ্য হয়ে অন্য ব্যাংকে যেতে হয়। এ ক্ষেত্রে ব্যাংককেও দেখতে হবে, কী পরিমাণ ঋণ দেয়া যেতে পারে। ব্যাংকের আর্থিক প্রতিবেদন ঠিক রাখতে গিয়ে রাইট অফ করতে হয়। এটি করা প্রয়োজন। এর মানে কিন্তু এটি নয়, এ ঋণ একেবারেই আদায় হবে না। বিআইবিএমের সহযোগী অধ্যাপক আশরাফ আল-মামুনের পরিচালনায় সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বিআইবিএমের সহযোগী অধ্যাপক মো. আলমগীর। সভাপতির বক্তব্যে আখতারুজ্জামান বলেন, সামষ্টিক অর্থনীতিতে খেলাপি ঋণের নেতিবাচক প্রভাব কীভাবে পড়ছে তার একটি ধারণা পাওয়া যাচ্ছে। সুদহার খেলাপি ঋণের ওপর তেমন কোনো প্রভাব রাখছে না। অন্যান্য দেশেও খুব একটা প্রভাব পড়ে না। খেলাপি হওয়ার জন্য অন্য ফ্যাক্টরগুলো বেশি কাজ করে।