ধর্ষণের সর্বোচ্চ সাজা মৃত্যুদণ্ড এবং অভিযুক্তের ডিএনএ পরীক্ষার বিধান রেখে সংশোধিত নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন জাতীয় সংসদে পাস হয়েছে। সংশোধিত আইনে ‘ধর্ষিতা’ শব্দটি বদলে ‘ধর্ষণের শিকার’ শব্দবন্ধ যোগ করা হয়েছে।
মঙ্গলবার মহিলা ও শিশু বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী ফজিলাতুন নেসা ইন্দিরা ‘নারী ও শিশু নির্যাতন দমন (সংশোধন) বিল-২০০০’ সংসদে পাসের প্রস্তাব করলে তা কণ্ঠভোটে পাস হয়। এর আগে ধর্ষণের সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ডের বিধান করে বিলটি গত ৮ নভেম্বর সংসদে উত্থাপন করা হয়ে। পরে তা পরীক্ষা করে প্রতিবেদন দিতে মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটিতে পাঠানো হয়েছিল।
ধর্ষিতা শব্দটি লিঙ্গবৈষম্যের পরিচায়ক বলে বিভিন্ন সময় মত আসার প্রেক্ষাপটে বিলে ‘ধর্ষণের শিকার’ শব্দবন্ধ দিয়ে ‘ধর্ষিতা’ শব্দটি প্রতিস্থাপনের সুপারিশ করেছিল সংসদীয় কমিটি।
মূল আইনের ৯ (২) ধারাসহ কয়েক জায়গায় ‘ধর্ষিতা’ শব্দটি বাদ দিয়ে ‘ধর্ষণের শিকার’ শব্দটি বসছে। আইনের ৯(৪) (ক) উপধারায় সংশোধন এনে ‘যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড’ এর পরিবর্তে ‘মৃত্যুদণ্ড বা যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড’ শব্দগুলো যোগ করা হয়েছে। বিলে অপরাধের শিকার ব্যক্তির পাশাপাশি ‘অপরাধে অভিযুক্ত ব্যক্তির’ মেডিকেল পরীক্ষা করার বিষয়টি যুক্ত করা হয়েছে।
পাস হওয়া আইনে ৩২ ধারার সঙ্গে ৩২(ক) শিরোনামে নতুন যুক্ত হওয়া ধারায় বলা হয়, ‘এই আইনের অধীন সংঘটিত অপরাধে অভিযুক্ত ব্যক্তি এবং অপরাধের শিকার ব্যক্তির ধারা ৩২ এর অধীন মেডিকেল পরীক্ষা ছাড়াও, উক্ত ব্যক্তির সম্মতি থাকুক বা না থাকুক, ২০১৪ সালের ডিঅক্সিরাইবোনিউক্লিক অ্যাসিড (ডিএনএ) আইনের বিধান অনুযায়ী তার ডিএনএ পরীক্ষা করতে হবে।’
দেশজুড়ে ধর্ষণ ও নারী নির্যাতনবিরোধী আন্দোলন এবং ধর্ষণকারীদের সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড করার দাবির মধ্যে সরকার আইনটি সংশোধনের পদক্ষেপ নেয়। সংসদ অধিবেশন না থাকায় সংশোধিত আইন কার্যকর করতে গত ১৩ অক্টোবর রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ‘নারী ও শিশু নির্যাতন দমন (সংশোধন) অধ্যাদেশ-২০০০’ জারি করেন। পরে ৮ নভেম্বর নিয়ম অনুযায়ী অধ্যাদেশটি সংসদে তোলেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক। একই দিন সেটি বিল আকারে সংসদে তোলা হয়। পরে গতকাল সেটি সংসদে পাস হলো।