প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতরের (ডিপিই) অধীন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষক নিয়োগে মঙ্গলবার (১৯ অক্টোবর) বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়েছে। এই বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৩২ হাজার ৫৭৭ জন সহকারী শিক্ষক নিয়োগ দেওয়া হবে। প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মো. আকরাম-আল-হোসেন সংবাদমাধ্যমকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেছেন, প্রাক প্রাথমিকে সহকারী শিক্ষক নেওয়া হবে ২৫ হাজার ৬৩০ জন এবং প্রাথমিকে সহকারী শিক্ষক নিয়োগ দেওয়া হবে ৬ হাজার ৯৪৭ জন।
প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতরের প্রকাশিত বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে রাজস্বখাতভুক্ত ‘সহকারী শিক্ষক’র শূন্যপদ এবং জাতীয়করণ করা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পিডিইপি-৪ এর আওতায় প্রাক-প্রাথমিক শ্রেণির জন্য রাজস্বখাতে সৃষ্ট ‘সহকারী শিক্ষক’ পদে জাতীয় বেতন স্কেল, ২০১৫ এর ১৩তম গ্রেডে অস্থায়ীভাবে নিয়োগ করা হবে। তিন পার্বত্য জেলা রাঙামাটি, খাগড়াছড়ি ও বান্দরবানের প্রার্থীরা এতে আবেদন করতে পারবেন না।
প্রাথমিকের ইতিহাসে এটাই সবচেয়ে বড় নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি বলে জানা গেছে। নতুন নিয়োগ নীতিমালা অনুযায়ী, প্রথমবারের মতো নারী প্রার্থীরা স্নাতক পাস ছাড়া আবেদন করতে পারবেন না। আর পুরুষ প্রার্থীদের আবেদনের যোগ্যতা আগের মতোই স্নাতক পাস থাকছে।
আবেদন করবেন যেভাবে: প্রকাশিত বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ২৫ অক্টোবর সকাল সাড়ে ১০টা থেকে অনলাইনে আবেদন গ্রহণ শুরু হবে এবং আবেদন গ্রহণ শেষ হবে ২৪ নভেম্বর রাত ১১টা ৫৯ মিনিটে।
এ পদে প্রার্থীদের অনলাইনের মাধ্যমে আবেদন করতে হবে। http://dpe.telelalk.com.bd ওয়েবসাইটে অনলাইনে আবেদনের ফরম পূরণের নির্দেশনা পাওয়া যাবে। সংশ্লিষ্ট নির্দেশনা অনুযায়ী অনলাইন আবেদনপত্র পূরণ করতে হবে।
অনলাইনে আবেদনপত্র পূরণ করে জমা করার পর অ্যাপ্লিকেশন কপি প্রিন্ট করতে হবে। সঠিকভাবে পূরণকৃত অ্যাপ্লিকেশন কপির ইউজার আইডি দিয়ে আবেদন ফি জমা দিতে হবে। একবার আবেদন ফি জমা দেওয়ার পর অ্যাপ্লিকেশন ফরম কোনো অবস্থায়ই সংশোধন বা প্রত্যাহার করা যাবে না। শুধু ইউজার আইডিপ্রাপ্ত প্রার্থীরা এই সময় পরবর্তী ৭২ ঘণ্টা পর্যন্ত এসএমএসের মাধ্যমে ফি প্রদান করতে পারবেন।
আবেদনকারীকে একটি ইউজার আইডি এবং পাসওয়ার্ড দেওয়া হবে। উক্ত ইউজার আইডি এবং পাসওয়ার্ড সব সময়ের জন্য প্রার্থীকে সংরক্ষণ করতে হবে। প্রার্থীকে পরীক্ষার ফি বাবদ অফেরৎযোগ্য সার্ভিস চার্জসহ ১১০ টাকা পরিশোধ করতে হবে। আবেদনকারীকে যেকোনো টেলিটক প্রি-পেইড মোবাইল নম্বর থেকে এসএমএসের মাধ্যমে যথাসময়ে প্রেরণ করতে হবে।
বয়সসীমা: আবেদনকারী প্রার্থীদের বয়স ২০ অক্টোবর ২০২০ তারিখে সর্বনিম্ন ২১ বছর এবং ২৫ মার্চ পর্যন্ত সর্বোচ্চ ৩০ বছর হতে হবে। মুক্তিযোদ্ধার সন্তান ও শারীরিক প্রতিবন্ধীদের ক্ষেত্রে এ বয়সসীমা হবে ৩২ বছর। বয়স নিরূপণে এফিডেভিট গ্রহণযোগ্য নয়।
শিক্ষাগত যোগ্যতা: আবেদনকারীকে যে কোনো স্বীকৃত বিশ্ববিদ্যালয় থেকে দ্বিতীয় শ্রেণি বা সমমানের সিজিপিএসহ স্নাতক বা সম্মান বা সমমানের ডিগ্রি থাকতে হবে।
আবেদন ফি: মোট আবেদন ফি ১১০ টাকা। যার মধ্যে অফেরৎযোগ্য ১০০ টাকা আবেদন ফি ও ১০ টাকা টেলিটকের সার্ভিস চার্জ।
নির্বাচন পদ্ধতি: সহকারী শিক্ষক পদে এর আগে ৮০ নম্বরের এমসিকিউ পদ্ধতিতে লিখিত পরীক্ষা ও ২০ নম্বরের মৌখিক পরীক্ষা নেওয়া হতো। বাংলা, গণিত, ইংরেজি ও সাধারণ জ্ঞান বিষয়ে প্রশ্ন থাকত। তবে, এবারের নিয়োগে কত নম্বরের পরীক্ষা হবে সে বিষয়টি এখনো চূড়ান্ত হয়নি। অধিদফতরের ওয়েবসাইট ও বিভিন্ন পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে পরীক্ষার তারিখ পরে জানানো হবে বলে অধিদফতর সূত্রে জানা গেছে।
যেসব কাগজপত্র লাগবে: প্রার্থী লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়ার পর আবেদনপত্রের সঙ্গে অনলাইনে দাখিলকৃত আবেদনের ফটোকপি, পাসপোর্ট সাইজের দুই কপি ছবি, প্রথম শ্রেণির গেজেটেড সরকারি কর্মকর্তা কর্তৃক সত্যায়িত শিক্ষাগত যোগ্যতা সম্পর্কিত সব মূল বা সাময়িক সনদপত্র এবং সংশ্লিষ্ট ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান/পৌরসভার মেয়র/সিটি করপোরেশনের কাউন্সিলর কর্তৃক প্রদত্ত নাগরিকত্ব সনদপত্রসহ প্রয়োজনীয় কাগজপত্র সংশ্লিষ্ট জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসে জমা দিতে হবে।
বেতন: সহকারী শিক্ষক পদে বেতন ১১০০০-২৬৫৯০ টাকা (গ্রেড-১৩) (জাতীয় বেতনস্কেল, ২০১৫ অনুযায়ী)।