পুলিশের সেবায় শতকরা ৯৫ ভাগের বেশি মানুষ সন্তুষ্ট বলে জানিয়েছেন ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনার মোহা. শফিকুল ইসলাম। গতকাল রোববার সকালে রাজারবাগ পুলিশ লাইন্সে অনুষ্ঠিত ডিএমপির মাসিক অপরাধ পর্যালোচনা সভায় এ তথ্য জানান তিনি। ডিএমপি নিউজে এ খবর প্রকাশ করা হয়েছে।
থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) ও মামলা মনিটরিং বিষয়ে সন্তুষ্টি প্রকাশ করে ডিএমপি কমিশনার বলেন, ‘থানায় জিডি ও মামলার ক্ষেত্রে ডিএমপি হেডকোয়ার্টার্স থেকে সেবাপ্রত্যাশীদের ফোন করে পুলিশের সেবার মান সম্পর্কে জানতে চাওয়া হয়। এতে শতকরা ৯৫ ভাগের বেশি মানুষ সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন। এটা একটা ভালো দিক। এটা ধরে রেখে আরো ভালো সেবা নিশ্চিত করতে হবে।’
শফিকুল ইসলাম ঢাকা মহানগরীর স্থায়ী চেকপোস্টের পাশাপাশি পূর্ণোদ্যমে অস্থায়ী চেকপোস্ট করার নির্দেশ দেন। ফ্লাইওভারগুলোতে ওঠা ও নামার জায়গায় উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন সিসি ক্যামেরা বসাতে নির্দেশ দিয়ে ডিএমপি কমিশনার বলেন, ‘গাড়ি ও মোটরসাইকেল চুরি প্রতিরোধে প্রযুক্তির সাহায্য নেওয়া যেতে পারে। ক্রাইম ডাটা ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম (সিডিএমএস) ও সাসপেক্ট আইডেন্টিফিকেশন অ্যান্ড ভেরিফিকেশন সিস্টেমের (এসআইভিএস) মতো সফটওয়্যার হালনাগাদ করে চোর/ ছিনতাইকারীদের তালিকা প্রস্তুত করে তাদের আইনের আওতায় আনতে হবে। গাড়ি ও মোটরসাইকেল ট্র্যাকিং সিস্টেমের আওতায় এলে চুরি অনেকাংশে কমে যাবে। প্রযুক্তি ব্যবহার করে বিজ্ঞানসম্মত তদন্ত করুন, এমন কোনো অপেশাদার আচরণ করবেন না, যাতে আপনার ব্যক্তিগত দায় চলে আসে।’
নারী নির্যাতন ও ধর্ষণের বিরুদ্ধে সচেতনতা তৈরি করতে হবে উল্লেখ করে কমিশনার বলেন, থানার প্রতিটি বিটে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ও স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিদের উপস্থিতিতে সচেতনতামূলক সমাবেশ করা যেতে পারে। এসব সমাবেশে নারীদের কাছ থেকে তাদের সমস্যা সম্পর্কে জানতে হবে এবং সমস্যা সম্পর্কে করণীয় বিষয়ে তাদের সুপারিশগুলো বিবেচনায় নিতে হবে।
নারী নির্যাতন ও ছিনতাইয়ের মতো অপরাধগুলোর নিয়ামক মাদক উল্লেখ করে শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘শুধু অধিক পরিমাণ মাদক উদ্ধার করলে এ সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া যাবে না। মাদকসেবীদের চিহ্নিত করে তাদের মাদক সেবন থেকে ফিরিয়ে আনতে পারলে মাদকসেবী কমার সঙ্গে সঙ্গে মাদকও কমে যাবে।’ সভায় কিশোর গ্যাংয়ের ব্যাপারে অপরাধীদের চিহ্নিত করে তাদের অবস্থান, গতিবিধি, ইভ টিজিং ও মাদক সেবনের স্থানগুলো নজরদারির মধ্যে আনার জন্য বিট (বিট পুলিশিং) কর্মকর্তাদের নির্দেশ দেওয়া হয়। এ ক্ষেত্রে ব্যর্থ হলে সংশ্লিষ্ট বিট অফিসারদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানানো হয়।
চাঁদাবাজদের বিরুদ্ধে কঠোরভাবে ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশসহ ঢাকা শহরের রাস্তায় কোনো ধরনের ব্যাটারিচালিত রিকশা চলবে না বলে জানান ডিএমপি কমিশনার। গত সেপ্টেম্বরের মাসিক অপরাধ পর্যালোচনা সভায় শ্রেষ্ঠ অপরাধ বিভাগ হিসেবে নির্বাচিত হয়েছে গুলশান বিভাগ, শ্রেষ্ঠ গোয়েন্দা বিভাগ নির্বাচিত হয়েছে গোয়েন্দা লালবাগ বিভাগ ও শ্রেষ্ঠ ট্রাফিক বিভাগ হিসেবে নির্বাচিত হয়েছে ট্রাফিক লালবাগ বিভাগ। এ ছাড়া ঢাকা মহানগরীর আইনশৃঙ্খলা রক্ষা ও ভালো কাজের স্বীকৃতি হিসেবে বিভিন্ন পদমর্যাদার ৮৭ জনকে পুরস্কৃত করেন ডিএমপি কমিশনার।
সভায় ডিএমপির অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনারবৃন্দ, যুগ্ম পুলিশ কমিশনার, উপপুলিশ কমিশনারসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।