বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক সুগভীর, বহুমাত্রিক ও রক্তের অক্ষরে লেখা বলে মন্তব্য করেছেন তথ্যমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ। আজ মঙ্গলবার (১৩ অক্টোবর) সচিবালয়ে তথ্য মন্ত্রণালয়ে সৌজন্য সাক্ষাতে আসা ভারতের নবনিযুক্ত হাইকমিশনার বিক্রম কুমার দোরাইস্বামীর সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের তিনি একথা বলেন। তথ্যসচিব কামরুন নাহার এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
মন্ত্রী বলেন, ‘ভারত-বাংলাদেশের সম্পর্ক অকৃত্রিম ও অতুলনীয়। যার সঙ্গে অন্য কোনও দেশের সম্পর্কের তুলনা চলে না। আমাদের দুই দেশের সম্পর্ক রক্তের অক্ষরে লেখা। কারণ আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধে ভারতের সৈন্যরা রক্ত দিয়েছেন। আমাদের এক কোটি মানুষকে ভারত সরকার আশ্রয় দিয়েছে। বাংলাদেশ যতদিন থাকবে, ততদিন ইতিহাসের পাতায় এটি লিপিবদ্ধ থাকবে।’
ভারতীয় রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে সে দেশের ত্রিপুরা ও মেঘালয়ে বিটিভি এবং বাংলাদেশের প্রাইভেট টেলিভিশন চ্যানেলগুলো দেখা গেলেও পশ্চিম বঙ্গসহ সমগ্র ভারতে দেখার ব্যবস্থা করা নিয়ে বৈঠকে আলোচনা হয়েছে বলে জানান মন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘একইসঙ্গে চট্টগ্রাম ও মোংলা বন্দর ব্যবহার করে যাতে উভয় দেশ উপকৃত হয়, বিশেষ করে ভারতের পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যগুলো যাতে চট্টগ্রাম বন্দর সহজে ব্যবহার করতে পারে, সেখানে সড়ক ও রেল সংযোগ যাতে দ্রুত চালু হয়, সে নিয়ে আলোচনা হয়েছে।’
একইসঙ্গে দুই দেশের মধ্যে সাংবাদিকদের সফর, বিশেষ করে নারী সাংবাদিকদের প্রশিক্ষণ আদান-প্রদানসহ গণমাধ্যম খাতের অবকাঠামোগত উন্নয়ন ও চলচ্চিত্র আমদানি-রফতানি নিয়েও আলোচনার কথা জানান ড. হাছান। এ সময় নতুন ভারতীয় হাইকমিশনার খানিক বাংলাও বলতে পারেন বলে উল্লেখ করেন তথ্যমন্ত্রী।
ভারতের হাইকমিশনার এ সময় সাংবাদিকদের বলেন, দুই দেশের সম্পর্ককে আরও এগিয়ে নেওয়াই তার লক্ষ্য।
সাংবাদিকরা এ সময় ধর্ষণ অপরাধের সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ডের বিধান রেখে আইন সংশোধনের বিষয়ে বিএনপি’র নেতিবাচক মন্তব্যের প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণ করলে ড. হাছান মাহমুদ বলেন, ‘তাহলে কি আইন সংশোধনটা বিএনপি’র পছন্দ হয়নি! সরকার ধর্ষণের সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড রেখে আইন সংশোধন করেছে এটি দমনের জন্য। কারণ আপনারা জানেন বাংলাদেশে যখন এসিড নিক্ষেপ বেড়ে গিয়েছিল, তখন সেটির কঠোর শাস্তির বিধান রেখে আইন করার পর তা আর প্রায় ঘটেই না।’
তিনি বলেন, ‘শুধু আইন সংশোধন করার মধ্যেই আমাদের কর্মকাণ্ড সীমাবদ্ধ রাখবো না। বিচার যাতে দ্রুত হয়, সেটির ওপরও সরকার গুরুত্বারোপ করছে। এসবের পাশাপাশি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এবং বিনোদন প্ল্যাটফর্মগুলোতে আমাদের কৃষ্টি, সংস্কৃতি ও সমাজের মূল্যবোধের সঙ্গে সাংঘর্ষিক কোনও উপাদান যদি এই ব্যাধি ছড়ানোয় ইন্ধন দেয়, সেগুলোর ব্যাপারেও আমরা কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।’