বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ‘দলের চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়াকে কতগুলো শর্ত দিয়ে সরকার তার বাসায় অন্তরীণ করে রেখেছে। তার চিকিৎসার প্রয়োজন, সেটাও করতে দেওয়া হচ্ছে না। এটাকে হাউজ অ্যারেস্ট ছাড়া আমরা অন্য কিছু মনে করি না। এখান থেকে তাকে বের করে আনতে হবে। খালেদা জিয়া গণতন্ত্রের প্রতীক। দেশের মানুষের কাছে সার্বভৌমত্বের প্রতীক। তার মুক্তির জন্য আমাদেরকে আন্দোলন করতে হবে।’
তিনি বলেন, ‘দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান যেন দেশে ফিরতে পারেন সেই ব্যবস্থা করতে হবে। তারেক রহমানের দেশে ফেরা সরকারই বন্ধ করে দিয়েছে। যেসব মামলাতে একতরফা রায় দিয়ে দিয়েছেন, যাবজ্জীবন কারাদণ্ড এবং ৩৬-৩৭টা মামলায় তার অন্য সাজাও হয়েছে৷ এসব সরকারের প্রতিহিংসা পরায়ণতা। খালেদা জিয়াকে গৃহবন্দী দশা থেকে মুক্ত করা, তারেক রহমানকে দেশে ফিরিয়ে আনা ও লাখ লাখ মানুষকে মিথ্যা মামলার হয়রানি থেকে মুক্ত করাই এখন সবচেয়ে জরুরি।’
বিএনপির ৪২তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী এবং বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের ১৩তম কারামুক্তি দিবস উপলক্ষে শনিবার (১৯ সেপ্টেম্বর) এক ভার্চুয়াল আলোচনা সভায় ফখরুল এসব কথা বলেন। বিএনপির কেন্দ্রীয় আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক মাহিদুর রহমানের সভাপতিত্বে ও সহ-আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক আনোয়ার হোসেন খোকনের সঞ্চালনায় ভার্চুয়াল আলোচনা সভায় বিশেষ অতিথি ছিলেন বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী।
আরও বক্তব্য রাখেন-কেন্দ্রীয় বিএনপির কার্যনির্বাহী সদস্য ও যুক্তরাজ্য বিএনপির সভাপতি এম এ মালিক, সুইডেন বিএনপির প্রধান উপদেষ্টা মহিউদ্দিন আহমেদ জিন্টুসহ ইউরোপের অন্তর্ভুক্ত ১৫ টি দেশের বিএনপির নেতৃবৃন্দ। লন্ডনের রয়েল রেজেন্ট লেইক হল থেকে ভার্চুয়াল সভাটি পরিচালিত হয়।
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘এই সরকার অবৈধভাবে ক্ষমতায় বসে আছে। দিনের ভোট তারা রাতের অন্ধকারে সম্পন্ন করেছে।দেশে কোন ভোটই হয়নি। গুম-খুন-নিপীড়ন দুঃশাসনে মানুষের নাভিশ্বাস দশা। একদলীয় দুঃশাসনের কালো ছায়া বিরাজমান। বর্তমানে বাংলাদেশে নাগরিক স্বাধীনতা, ভোটাধিকার, মানবিক মর্যাদা ও মানবিক সাম্য হরণ করা হয়েছে। এই সরকারের বিরুদ্ধে এই সব দালিলিক প্রমাণ বিদেশিদেরকে দিয়ে সরকারের ওপর চাপ সৃষ্টি করতে হবে।’
তিনি বলেন,‘আজকে আমরা যে অবস্থায় পড়েছি এটা নিঃসন্দেহে সবচেয়ে কঠিন সময়। এখানে ভয়ভীতি-ত্রাসের মাধ্যমে এমন একটা অবস্থার তৈরি করা হয়েছে। এর থেকে মুক্তির একটাই উপায় বদলে যাওয়া। বদলে যাওয়ার একটাই পথ, আন্দোলন সংগ্রামের মধ্যে দিয়ে সরকারকে সরাতে হবে।’
ভার্চুয়াল সভায় ইউরোপের ১৫ টি দেশের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের মধ্যে বক্তব্য রাখেন-যুক্তরাজ্য বিএনপির সাধারণ সম্পাদক কয়ছর এম আহমেদ, সুইডেন বিএনপির সভাপতি এমদাদ হোসেন কচি ও সাধারণ সম্পাদক নাজমুল আবেদিন মোহন, সুইজারল্যান্ড বিএনপি সাবেক সভাপতি জনাব মিজানুর রহমান, স্পেন বিএনপি সাংগঠনিক সম্পাদক জনাব আবু জাফর রাসেল, নেদারল্যান্ড বিএনপি সভাপতি শরিফ উদ্দিন ও সাধারণ সম্পাদক নজরুল ইসলাম, ইতালি বিএনপি সাধারণ সম্পাদক ঢালী নাসির উদ্দীন, আয়ারল্যান্ড বিএনপি সভাপতি হামিদুল নাসির ও সাধারণ সম্পাদক কবির আহমেদ, গ্রীস বিএনপি সভাপতি জি এম মোখলেছুর রহমান, জার্মান বিএনপি সভাপতি আকুল মিয়া ও সাধারণ সম্পাদক আব্দুল গনি সরকার, ফ্রান্স বিএনপি সভাপতি সৈয়দ সাইফুর রহমান ও সাধারণ সম্পাদক এম এ তাহের, ফিনল্যান্ড বিএনপি সভাপতি কামরুল হাসান জনি, ডেনমার্ক বিএনপির সভাপতি গাজী মনির আহমেদ, ফ্রান্স বিএনপির সভাপতি সৈয়দ সাইফুর রহমান, সাধারণ সম্পাদক এম এ তাহের, ফিনল্যান্ড বিএনপির সভাপতি কামরুল হাসান জনি, বেলজিয়াম বিএনপির সভাপতি আহমেদ সাজা, সাধারণ সম্পাদক ইকবাল হোসেন বাবু, অস্ট্রিয়া বিএনপির সাবেক সভাপতি ফজলুর রহমান বকুল ও অস্ট্রিয়া বিএনপির সিনিয়র নেতা নিয়ামুল বশির।ভার্চুয়াল সভায় ইউরোপের বিভিন্ন দেশের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের মধ্যে শারীরিক অসুস্থতা ও টেকনিকাল কারণে বক্তব্য দিতে না পারলে ও উপস্থিত ছিলেন ইতালি বিএনপির সভাপতি আব্দুর রাজ্জাক, নরওয়ে বিএনপির সভাপতি বাদল ভুঁইয়া, সাধারণ সম্পাদক মমিনুর রহমান জুনেদ, ডেনমার্ক বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ওমর ফারুক, ফিনল্যান্ড বিএনপির সাধারণ সম্পাদক জুলফিকার আশারাফ সাগর, গ্রীস বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আশরাফ উদ্দিন ঠাকুর, স্পেন বিএনপি প্রস্তাবিত কমিটির সভাপতি মনোয়ার হক মনু ও সাধারন সম্পাদক সোহেল ভুইয়াসহ ইউরোপের প্রতিটি দেশের সিনিয়র নেতৃবৃন্দ।