যুক্তরাজ্যের অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটির গবেষকদের উদ্ভাবিত করোনাভাইরাসের টিকার ট্রায়াল সাময়িকভাবে স্থগিত করা হয়েছে। যুক্তরাজ্যে তৃতীয় ও চূড়ান্ত দফার ট্রায়ালে অংশগ্রহণকারী একজন স্বেচ্ছাসেবী অসুস্থ হয়ে পড়লে ট্রায়াল স্থগিতের এই সিদ্ধান্ত নেয় কর্তৃপক্ষ। বুধবার এক প্রতিবেদনে এ খবর জানিয়েছে যুক্তরাজ্যভিত্তিক সংবাদমাধ্যম বিবিসি।
বিবিসি জানিয়েছে, ট্রায়ালে একজন স্বেচ্ছাসেবী অসুস্থ হয়ে পড়ার পর এই কার্যক্রম সাময়িক স্থগিত করা হলেও ওই ব্যক্তির পরিচয় প্রকাশ করা হয়নি। তার অসুস্থতার ধরন সম্পর্কেও বিস্তারিত কোনও তথ্য জানা যায়নি। তবে তাকে পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে। কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ওই ব্যক্তির অসুস্থতা সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য জানার আগ পর্যন্ত বিশ্বজুড়ে ভ্যাকসিনটির ট্রায়াল বন্ধ থাকবে। তবে আশা করা হচ্ছে, ওই ব্যক্তি দ্রুতই সুস্থ হয়ে উঠবেন।
প্রথম ও দ্বিতীয় ধাপের ট্রায়াল বেশ ভালোভাবেই সম্পন্ন করেছিল অক্সফোর্ডের এই ভ্যাকসিন ক্যান্ডিডেট। কিন্তু তৃতীয় ও শেষ ধাপে এসেই বিপত্তি বাধে। এ ধাপে বিভিন্ন দেশের প্রায় ৩০ হাজার মানুষের ওপর ভ্যাকসিনটি প্রয়োগ করা হচ্ছে। এর সাফল্যের ওপর নির্ভর করেই টিকাটি বাজারে ছাড়া হবে।
অক্সফোর্ডের এই টিকাকেই বিশ্বব্যাপী করোনাভাইরাসের সবচেয়ে অগ্রসর টিকা হিসেবে গণ্য করা হয়। এরইমধ্যে প্রতিষ্ঠানটির সঙ্গে করোনা টিকার ৪০ কোটি ডোজ প্রি-অর্ডার করতে প্রাথমিক চুক্তিতে উপনীত হয়েছে ইউরোপের চার দেশ।
খুব শিগগিরই ফের ট্রায়ালটি শুরুর আশাবাদ জানিয়েছে অক্সফোর্ডের টিকার বিপণন অংশীদার ব্রিটিশ ওষুধ উৎপাদক প্রতিষ্ঠান অ্যাস্ট্রাজেনেকা। প্রতিষ্ঠানটি বলছে, বড় ধরনের ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালের ক্ষেত্রে এমন ঘটনা নতুন নয়। এটি এক ধরনের রুটিন ওয়ার্ক।
একই ধরনের মত দিয়েছেন অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটির একজন মুখপাত্র। তিনি বলেন, বড় ধরনের ট্রায়ালে এমন ঘটনা ঘটতে পারে। কেউ কেউ এমনিতেই অসুস্থ হয়ে পড়তে পারেন। সেক্ষেত্রে তাদের পর্যবেক্ষণে রাখা হয়। অসুস্থ হওয়ার পেছনে ভ্যাকসিনের কোনও ভূমিকা রয়েছে কিনা সেটি জানার চেষ্টা করেন গবেষকরা।
২০১৯ সালের ডিসেম্বরে চীনের হুবেই প্রদেশের রাজধানী উহান থেকে ছড়িয়ে পড়ে করোনাভাইরাস। উৎপত্তিস্থল চীনে ৮৩ হাজারেরও বেশি মানুষ আক্রান্ত হলেও সেখানে ভাইরাসটির প্রাদুর্ভাব কমে গেছে। তবে বিশ্বের অন্যান্য দেশে এই ভাইরাসের প্রকোপ বাড়ছে। চীনের বাইরে করোনাভাইরাসের প্রকোপ ১৩ গুণ বৃদ্ধি পাওয়ার প্রেক্ষাপটে গত ১১ মার্চ দুনিয়াজুড়ে মহামারি ঘোষণা করে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)। এ ভাইরাসের টিকা তৈরিতে জোর তৎপরতা শুরু করেন বিজ্ঞানীরা।