পরীক্ষার্থী আরিফুল ইসলাম। স্বজনদের ধারনা, কবিরাজী মতে বজ্রপাতে মারা যাওয়া অবিবাহিত এই তরুণের মাথা অনেক দামি। তবে কোথা থেকে তাদের এই ধারনার উদ্রেক তার কোনো সূত্র পাওয়া যায়নি। তাই লাশ চুরি ঠেকাতে গত পাঁচদিন ধরে কবর পাহারা দিচ্ছেন স্বজনরা। কবর থেকে ১০ গজ দূরে তাঁবু টানিয়ে দিনরাত পালি করে চলছে কবরে কঠোর নজরদারী। পাহারায় থাকা ব্যক্তিদের জন্য ব্যবস্থা করা হয়েছে চা নাস্তারও।
নিহত আরিফুল ইসলামের বাবার বাড়ী কুড়িগ্রাম সদর উপজেলার কুমোরপুর কদমেরতল গ্রামের শহিদুল ইসলামের ছেলে। শনিবার দুপুরে উপজেলার বড়ভিটা ইউনিয়নের ঘোগারকুটি গ্রামে গেলে দেখা মেলে এমন দৃশ্যের।
বজ্রপাতে মৃত ওই কলেজছাত্রের বাবা শহিদুল ইসলাম, মামা মফিজুল হক, মামি কুলসুম বেগম ও স্থানীয় আশরাফুল ও আনছারী আলী জানালেন, লাশ চুরি ঠেকাতে তারা তিন মাস এভাবে পাহারা দেবেন।
নিহত আরিফুল ফুলবাড়ী ডিগ্রীকলেজের এইচএসসি পরীক্ষার্থী ছিল । সে শিশু বয়স থেকেই নানা বাড়িতে থেকে পড়াশুনা করতো। নানাবাড়ি থেকে তিনশ গজ দূরে মায়ের কেনা জমিতেই তার মরদেহ দাফন করা হয়।
নিহত আরিফুল ইসলামের মামা মফিজুল হক ও মামি কুলসুম বেগম জানান, ভাগ্নে আরিফুল আমাদের অনেক আদরের ছিল। ছোট থেকে আরিফুলের মা রাহিলা বেগমসহ তার তিন ছেলেমেয়েকে বাড়িতে নিয়ে দেখাশোনা করেছি। বর্তমানে আরিফুলের মা রাহিলা বেগম জর্ডানে রয়েছেন। আরিফুলের বাবা-মা পাশে না থাকলেও তিন ভাইবোনকে আমরা আদরা করতাম। এর মধ্যে আরিফুল হঠাৎ বজ্রপাতে মারা যায়। বজ্রপাতে নিহত ব্যক্তির লাশের মাথা কবিরাজী শাস্ত্রে না কি অনেক মূল্যবান । সে জন্য লাশটি চুরির আশঙ্কায় আমরা রাতদিন ভাগিনার কবর পাহারা দিচ্ছি।
তবে এমন খবর জানা নেই বড়ভিটা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান খয়বর আলীর। এ ব্যাপারে কুড়িগ্রাম সিভিল সার্জন ডা. হাবিবুর রহমান বলেন, বজ্রপাতে নিহত ব্যক্তির কঙ্কালে কোনো মূল্যবান জিনিস থাকতে পারে না। এটা কুসংস্কার ও অযৌক্তিক। বজ্রপাতের সঙ্গে নিহত ব্যক্তির কঙ্কালের কোনো সম্পর্ক নেই। বজ্রপাতে নিহত ব্যক্তির কঙ্কালে মুল্যবান কিছু আছে তা সম্পুর্ণ ভুল ধারনা ।
উৎসঃ ইত্তেফাক