আজিজুর রহমান দুলালঃ আজ ০২ সেপ্টেম্বর’২০ তারিখে ফরিদপুর জেলার আলফাডাঙ্গা পৌর সভার হাসপাতাল রোডে পপুলার প্রাইভেট হাসপাতাল এন্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অনিয়মের দায়ে ৫৫,০০০ হাজার টাকা জরিমানা করেছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। এ অভিযানের নেতৃত্ব দেন সদ্য যোগদান করা সহকারী কমিশনার (ভুমি) মো: মাহবুবুল ইসলাম এবং সহযোগিতায় ছিলেন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এর টি.এইচ.ও ডাক্তার মো: নাজমুল হাসান ও আলফাডাঙ্গা থানার এস আই মো. মঞ্জুরুল ইসলাম।
ভ্রাম্যমাণ আদালত সূত্রে জানা যায়, পপুলার প্রাইভেট হসপিটাল এন্ড ডিজিটাল ডায়াগনস্টিক সেন্টারে ডাক্তাদের মিথ্যা বিজ্ঞাপন দিয়ে জনসাধারণের সাথে প্রতারণা করার অভিযোগে ভোক্তা অধিকার আইন ২০০৯ এর ৪৪ ধারায় ৫০,০০০ (পঞ্চাশ হাজার) টাকা ও মেডিকেল প্রাকটিস এবং বেসরকারী ক্লিনিক ল্যাবরেটরী নিয়ন্ত্রণ অধ্যাদেশ- ১৯৮২ এর ৮ (১৩) ধারা অনুযায়ী ৫,০০০ (পাঁচ হাজার) টাকা জরিমানা করা হয়। দু’টি আইনে মোট ৫৫,০০০ (পঞ্চান্ন হাজার) টাকা জরিমানা করা হয়। এ সময়ে হাসপাতাল রোডস্থ অন্যান্য ডায়াগনস্টিক সেন্টার ও ক্লিনিকের মালিকগন (যাদের লাইসেন্স নেই অথবা নবায়ন নেই) স্ব স্ব প্রতিষ্ঠানে বাইরের থেকে তালা লাগিয়ে পালিয়ে যায়। এ প্রসঙ্গে অভিযানে অংশগ্রহনকারী ডাক্তার নাজমুল হাসান বলেন- এ অভিযান অব্যাহত থাকবে।
উল্লেখ্য, গত ৬ বছর আগে এ প্রতিষ্ঠানটির সূচনা হয়। ২ বছর পরে ডায়াগনস্টিকের সাথে যোগ হয় সার্জিকেল ক্লিনিকের। যা ১ বছর চলে লাইসেন্স বিহীন। পরে কোন ধরনের তদন্ত ছাড়াই অর্থের বিনিময়ে লাইসেন্স প্রাপ্ত হয়। সেখানে নেই কোন ডাক্তার, নেই কোন নার্স, গ্রাম থেকে আনা কাজের মেয়েরা আয়ার কাজ করতে করতে এক নার্স উপাধি পেয়ে বসে। এরাই হয় অপারেশনের সহযোগী নার্স। প্রথম বছরেই বিভিন্ন অসচেতনতা ও অদক্ষতার কারণে মারা যায় অপারেশনের ৫ জন রোগী। প্রতিষ্ঠানটি রূপ নেয় মৃত্যুপুরীর। প্রশাসনের চাপে বন্ধ রাখা হয় প্রায় মাস খানেক। এ নিয়ে গ্রাম্য শালিশ, বাজারে শালিশ, পৌর সভায় শালিশ থানায় শালিশ ও প্রতিষ্ঠানে শতাধিক লোকের উপস্থিতিতে মালিক কে মারধর সহ অনেক ধরনের অপ্রিতিকর ঘটনার স্বাক্ষী এই পপুলার প্রাইভেট হাসপাতাল ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার। একই অপরাধের জের ধরে ভুয়া ডাক্তারের চেম্বার করার দায়ে র্যাব কর্তৃক গ্রেফতার হয় বায়েজিদ মোল্লা। ১৫ দিন আটক থাকার পর ফিরে এসে পুন:রায় চালু করা হয় প্রতিষ্ঠানটি।
ব্যবসায়িক কৌশলের কলুষিত পলিসির কাছে হার মেনে এ প্রতিষ্ঠানের ১০ জন পার্টনার এর অধিকাংশ সদস্যই ‘ছেড়ে দে মা কেদে বাচি’ বলে তাদের পদ থেকে অব্যাহতি নিয়েছে। তাদের থেকেই এখন বেরিয়ে আসছে পপুলারের মালিক বায়েজিদ মোল্লা কর্তৃক রোগীর সাথে শত ধরনের প্রতারণার কথা। যার জন্যে তারা পদ ছেড়েছেন। ল্যাবরেটরিতে পরীক্ষা ছাড়াই রিপোর্ট প্রদান, মেডিসিনের সাথে ফ্রিজে মাংস রাখার অভিযোগে উপজেলা নির্বাহী অফিসার কর্তৃক ২০ হাজার টাকা জরিমানা গুনতে হয় বায়েজিদ মোল্লা কে। ডাক্তারদের করা প্রেস্ক্রেপশনে ভুল ঔষধ প্রদানে গর্ভে থাকা বাচ্চার মৃত্যু, আল্ট্রাসনোগ্রামের রিপোর্টে পুরনো ছবি সংযুক্ত করে আন্দাজী কিছু লিখে দিয়ে রোগীকে বিভ্রান্ত করা, ক্লিনিকের রোগীদেরকে অল্প টাকায় অপারেশন করার কথা বলে ভর্তি করিয়ে পরে তার রক্ত লাগবে বলে রক্তের জন্য টাকা নেয়া ইত্যাদির প্রচুর অভিযোগ রয়েছে।