ফেসবুকে পরিচয়ের সূত্রে উপহার পাঠানোর নামে গত দুই মাসে ৫ থেকে ৬ কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে নাইজেরিয়ান একটি প্রতারক চক্র। এই চক্রের ১২ বিদেশি নাগরিক ও একজন বাংলাদেশি ভুয়া নারীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।
বুধবার (২২ জুলাই) সিআইডি সদর দফতরে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান, সিআইডি এডিশনাল ডিআইজি শেখ রেজাউল হায়দার। আসামিরা হলো, নাইজেরিয়ান নান্দিকা ক্ল্যামেন্ট চাকেনগুয়ে (৩২), ক্লিটাস আচুনা (৩১), ওনইয়ানক্লুভ টাইমটি চিনোংড়ে (৩০), একিনি উইজডম (৩০), চিগোজি (৩০), এভেন্ডে গ্রাব্রিয়েল ওবুনা (৩০), সেলাস্তিন পেট্রিক ওবিয়াজুলু (৩০), মোরডি নানদি কোলিন্স (৩০), ওরডু চুকেয়দু সামি (৩০), এন্দুবুয়েকোন সমেয়ানা (৩০), এনজেরেম প্রিসিয়াস ইকেমে (৩০), এনওক উইজডম চিকওয়াদো (৩০) এবং বাংলাদেশি রাহাত আরা খানম ওরফে ফারজানা মহিউদ্দিন (ভুয়া কাস্টমস কর্মকর্তা),।
সংবাদ সম্মেলনে শেখ রেজাউল হায়দার বলেন, ‘প্রতারণার শিকার একজন ভিকটিমের অভিযোগের সূত্র ধরে সিআইডি তাদের গ্রেফতার করতে সমর্থ হয়। তারা অভিনব কায়দায় সাধারণত বিপরিত লিঙ্গের ব্যক্তিদের সঙ্গে ফেসবুকে বন্ধুত্ব তৈরি করে। বন্ধুত্বের এক পর্যায়ে ক্যাথরিন কোলেন সোফিয়া নামক একটি তথাকথিত ম্যাসেঞ্জার আইডি হতে গুরুত্বপূর্ণ ডকুমেন্টসহ পার্সেল গিফট করার প্রস্তাব দেয় এবং পরবর্তীতে মেসেঞ্জারে এই সব মূল্যবান সামগ্রীর এয়ার লাইন বুকিংয়ের ডকুমেন্ট পাঠায়। এরপর এসব গিফট বক্সে কয়েক মিলিয়ন ডলারের মূল্যবান সামগ্রী রয়েছে বলে তারা ভিকটিমকে অবহিত করে এবং তা চট্টগ্রাম এয়ারপোর্ট কাস্টমস গুদাম হতে রিসিভ করতে বলে। এই সময় তাদের গুরুত্বপূর্ণ সহযোগী গ্রেফতাকৃত রাহাত আরা খানম ওরফে ফারজানা মহিউদ্দিন নিজেকে কাস্টমস কমিশনার পরিচয় দিয়ে ভিকটিমকে মূল্যবান গিফট গ্রহণসহ শুল্ক বাবদ ৪ লাখ ২৫ হাজার টাকা কয়েকটি ব্যাংক একাউন্টে পরিশোধের জন্য চাপ দেয়। গিফটি রিসিভ না করলে আইনি জটিলতার ভয় দেখানো হয়।’
শেখ রেজাউল হায়দার জানান, ভুয়া কাস্টমস অফিসারের বারবার চাপের কারণে ভিকটিম তাদের দেওয়া বিভিন্ন ব্যাংক অ্যাকাউন্টে ৩ লাখ ৭৩ হাজার টাকা জমা দেয়। একইভাবে আসামিরা পরস্পর যোগসাজশে প্রতারণার মাধ্যমে সারাদেশে শতাধিক ভিকটিমের কাছ থেকে ৫ থেকে ৬ কোটি টাকা ২ মাসের মধ্যে হাতিয়ে নিয়েছে বলে সিআইডি-এর প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে নিশ্চিত হয়েছে। গ্রেফতার বিদেশিরা দীর্ঘ দিন ধরে বাংলাদেশে অবস্থান করে এ ধরণের প্রতারণা করে আসলেও এদেশে তাদের অবস্থানের বৈধ কোনও কাগজপত্র এবং পাসপোর্ট প্রদর্শন করতে পারে নাই।
আসামিদের বিরুদ্ধে পল্লবী থানায় একটি মামলা হয়েছে এবং ফরেনার্স কন্ট্রোল অ্যাক্টে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানান শেখ রেজাউল হায়দার।
উৎসঃ বাংলা ট্রিবিউন