জামালপুরের সরিষাবাড়ীতে হোটেলের ডাল-রুটি খেয়ে অসুস্থ হওয়া ব্যক্তিদের মধ্যে ইউনুস আলী (৫০) নামে একজনের মৃত্যু হয়েছে। মঙ্গলবার (০৮ জুন) গভীর রাতে ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।
ইউনুস আলী উপজেলার ভাটারা ইউনিয়নের ফুলবাড়িয়া গ্রামের মৃত অছিম শেখের ছেলে। বুধবার (০৯ জুন) সকালে মৃতের বাড়িতে বৈঠকের পর লাশ দাফনের অনুমতি দেয় পুলিশ।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও স্থানীয় সূত্র জানায়, সোমবার (০৭ জুন) সকালে সরিষাবাড়ী পৌরসভার পঞ্চপীর বাজারের লালু মিয়ার হোটেলে আশপাশের গ্রামের লোকজন নাশতা করেন। সেখানে বাসি-পচা ডাল-রুটি খেয়ে লোকজনের পেটব্যথা, বমি ও পাতলা পায়খানা শুরু হয়।
একপর্যায়ে তা ধীরে ধীরে বাড়তে থাকে। সেদিন রাত পর্যন্ত অর্ধশতাধিক মানুষ অসুস্থ হয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি হন। গুরুতর কয়েকজনকে জামালপুর জেনারেল হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়।
পৌরসভার ৮ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর নিপ্পন মণ্ডল জানান, জামালপুর জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ইউনুস আলীর অবস্থার উন্নতি না হওয়ায় চিকিৎসক মঙ্গলবার বিকেলে ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করেন। সেখান থেকে তাকে রাজধানীতে উন্নত চিকিৎসার জন্য স্থানান্তর করা হয়। অ্যাম্বুলেন্সে তোলার পরই তার মৃত্যু হয়।
সরিষাবাড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মীর রকিবুল ইসলাম বলেন, ইউনুসের পরিবারের কোনও অভিযোগ নেই— মর্মে তার ছেলে সোহেল বুধবার সকালে থানায় লিখিত দিয়েছেন। তাই আইনগত ব্যবস্থা না নিয়ে লাশ দাফনের অনুমতি দেওয়া হয়েছে।
স্থানীয়দের অভিযোগ, হোটেলের নিম্নমানের ও বাসি-পচা খাবারের কারণে এ অবস্থা হয়েছে। কিন্তু হোটেল মালিক লালু মিয়ার বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থা নেয়নি প্রশাসন। সব হোটেলে নিয়মিত স্যানিটারি ইন্সপেক্টরের তদারকি থাকলে হোটেল মালিকরা নিম্নমানের খাবার বিক্রি করতে পারতেন না না বলে ভুক্তভোগীরা জানান।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শিহাব উদ্দিন আহমদ বলেন, মৃতের পরিবারের কোনও অভিযোগ না থাকলেও অপরাধ প্রমাণিত হলে নিরাপদ খাদ্য আইনে হোটেল মালিকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এজন্য ইতোমধ্যে জামালপুরের নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ ও স্যানিটারি ইন্সপেক্টর নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষার জন্য ল্যাবে পাঠিয়েছেন। এছাড়া হোটেলটি বন্ধ ও মালামাল জব্দ করা হয়েছে।