নানা অনুষ্ঠানে রোববার পালিত হয়েছে আন্তর্জাতিক অভিবাসী দিবস। রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে মূল আয়োজনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে প্রবাসী কল্যাণমন্ত্রী ইমরান আহমদ বলেছেন, শুধু দক্ষ জনশক্তি রপ্তানি বৃদ্ধি নয়, হুন্ডি বন্ধ করতে পারলে বাড়বে রেমিট্যান্স।
বাংলাদেশ এখনও অদক্ষ শ্রমিকের ওপর নির্ভরশীল জানিয়ে ইমরান আহমদ বলেছেন, সময় বদলেছে। নতুন শ্রমবাজার পুরোনো নিয়মে চলবে না। বিভিন্ন প্রশিক্ষণ কেন্দ্র এক ছাতার নিচে এলে আরও বেশি দক্ষ কর্মী বিদেশে পাঠানো সম্ভব।
ডিজিটাইজেশনকে দালালমুক্ত অভিবাসনের পথ হিসেবে আখ্যা দেন মন্ত্রী। তিনি বলেছেন, নিজস্ব ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম করতে পারলে, সমস্যা থাকবে না। প্রবাসীদের জন্য এমআরপি এবং ই-পাসপোর্ট নবায়ন আরও সহজ করার আশ্বাস দেন তিনি।
প্রবাসীকল্যাণ মন্ত্রণালয় সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদ বলেন, ডলার সংকটে আইএমএফের কাছ থেকে ঋণ নিতে হচ্ছে। প্রবাসীদের গুরুত্ব দিলে, রেমিট্যান্স বাড়বে। ঋণ পরিশোধে কষ্ট হবে না। রেমিট্যান্স বাড়াতে দক্ষ কর্মী বিদেশে পাঠানোর ওপর জোর দিয়ে আনিসুল ইসলাম বলেছেন, বিদেশি শ্রমবাজারে অদক্ষ কর্মীর চাহিদা কমছে। দক্ষতা বৃদ্ধিতে আরও পদক্ষেপ দরকার।
সভাপতির বক্তব্যে প্রবাসীকল্যাণ সচিব ড. আহমেদ মুনিরুছ সালেহীন বলেন, জনশক্তি রপ্তানিকে যুগোপযোগী করতে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা পেয়েছি। দক্ষ কর্মী বিদেশে যাবে। তাই প্রশিক্ষণের পাঠ্যসূচিকে যুগোপযোগী করার চেষ্টা চলছে। কর্মী পাঠাতে মাল্টা ও ইতালির সঙ্গে সমঝোতা স্মারক সই হতে যাচ্ছে। রাশিয়ায়ও যাবে বাংলাদেশি কর্মী।
সর্বোচ্চ রেমিট্যান্স পাঠানো এবং অনাবাসী ব্যবসায়ী খাতে অনুষ্ঠানে ৬৭ প্রবাসীকে সিআইপির ক্রেস্ট ও সনদ দেওয়া হয়। প্রবাসী কর্মীর ১ হাজার ৬৮৮ সন্তানকে শিক্ষা বৃত্তি দেওয়া হয়। শেষে আয়োজন করা হয় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের।
অনুষ্ঠানে আরও বক্তৃতা করেন আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থার (আইওএম) চিফ অব মিশন আব্দুর সাত্তার ইসোয়েভ, ওয়েজ আর্নার্স কল্যাণ বোর্ডর মহাপরিচালক হামিদুর রহমান, জনশক্তি কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরোর মহাপরিচালক শহীদুল আলম, রিক্রুটিং এজেন্সিগুলোর সংগঠন বায়রা সভাপতি আবুল বাশার, অনাবাসী সিআইপি অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মাহতাবুর রহমান।
চট্টগ্রাম ব্যুরো জানিয়েছে, জেলা কর্মসংস্থান ও জনশক্তি কার্যালয়ের আয়োজনে বন্দরনগরীতেও পালিত হয়েছে অভিবাসী দিবস। সার্কিট হাউসের অনুষ্ঠানে জানানো হয়, চলতি বছর চট্টগ্রাম জেলার ৬৫ হাজার ৮৬৩ জন কর্মী বিদেশ গিয়েছেন। গত অর্থবছরে চট্টগ্রাম জেলায় সর্বোচ্চ রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন সুইডেন প্রবাসী শামসুন নাহার ৪৩ লাখ ৮০ হাজার ২৮৬ টাকা। সিঙ্গাপুর প্রবাসী শোয়েব হোসাইন পাঠিয়েছেন ৩৬ লাখ ৮৭ হাজার ৯৬৫ টাকা।