হুথি বিদ্রোহীদের চালানো মঙ্গলবারের হামলা প্রতিহত করার কথা জানিয়েছে সৌদি আরব। ইয়েমেনে যুদ্ধরত সৌদি নেতৃত্বাধীন জোটের একজন মুখপাত্র দাবি করেছেন, রিয়াদ লক্ষ্য করে চালানো ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলা রুখে দেওয়া হয়েছে। কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আলজাজিরার প্রতিবেদন থেকে এসব তথ্য জানা গেছে।
ইয়েমেনের বিদ্রোহী গোষ্ঠী হুথির মুখপত্র আল মাসিরাহ টেলিভিশনে দাবি করা হয়েছে, সৌদি আরবের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের সদর দফতর, বাদশাহ সালমান বিমান ঘাঁটি এবং রিয়াদের একটি গোয়েন্দা ভবন লক্ষ্য করে হামলা চালানো হয়েছে। এছাড়াও সৌদি আরবের দক্ষিণাঞ্চলের নাজরান এবং জিজান অঞ্চলের আরও কয়েকটি সামরিক ভবন লক্ষ্য করে হামলা চালানো হয়েছে। হুথি সামরিক বাহিনীর মুখপাত্র ইয়াহাই সারেই এক বিবৃতিতে বলেন, হামলা চালাতে ব্যালেস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন ব্যবহার করা হয়েছে।
হামলা প্রসঙ্গে সৌদি জোটের মুখপাত্র তুর্কি আল মালিকি দেশটির রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যমকে বলেছেন, ‘ইচ্ছাকৃত বৈরী অভিযানে রিয়াদ লক্ষ্য করে সানা থেকে সন্ত্রাসী হুথি যোদ্ধাদের চালানো ব্যালেস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিহত এবং ধ্বংস করতে সক্ষম হয়েছে জোট বাহিনী।’ এছাড়াও সৌদি সেনাবাহিনীর তরফে বলা হয়েছে আটটি ড্রোন ভূপাতিতের পাশাপাশি ইয়েমেনের সাদা অঞ্চল থেকে সৌদি আরব লক্ষ্য করে চালানো তিনটি ব্যালেস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিহত করা হয়েছে।
ইরান সমর্থিত হুথি বিদ্রোহীরা ২০১৫ সাল থেকে সৌদি নেতৃত্বাধীন সামরিক জোটের সঙ্গে লড়াই চালিয়ে যাচ্ছে। আন্তর্জাতিক সমর্থনপুষ্ট সরকারকে হটিয়ে হুথি বিদ্রোহীরা রাজধানী দখল করে নিলে এই সংঘাত শুরু হয়। ইয়েমেনযুদ্ধকে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় আঞ্চলিক শক্তি ইরান ও সৌদি আরবের মধ্যকার ছায়াযুদ্ধ হিসেবে দেখে থাকে। এ বছরের শুরুতে ইয়েমেনের উত্তরাঞ্চলের আল জাওয়াফ প্রদেশের নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে হুথি বিদ্রোহীরা।
রিয়াদ ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিহতের দাবি করলেও সাম্প্রতিক এই হামলার ঘটনা সৌদি আরবের অনিরাপদ বোধ করার জন্য যথেষ্ট বলে মনে করেন বিশ্লেষকরা। জর্ডান বিমানবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত জেনারেল মামুন আবু নওয়ার বলেছেন, ‘নির্ভুলভাবে রিয়াদে পৌঁছানো এবং প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় ও অন্য সেনাঘাঁটি লক্ষ্য করে হামলা চালানো বড় ধরনের উত্তেজনা বৃদ্ধি কারণ হুথিরা এখন জাওয়াফ ও ইয়েমেনের আরও কয়েকটি অংশে জয় পেয়েছে।’
উল্লেখ্য, করোনাভাইরাসের মহামারির কারণে সৌদি আরব ও হুথিদের মধ্যে ছয় সপ্তাহের যুদ্ধবিরতি গত মাসে শেষ হয়েছে। এরপরই সৌদি শহর লক্ষ্য করে ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলা চালায় হুথি বিদ্রোহীরা। অপর দিকে বিমান হামলার মাধ্যমে এসবের জবাব দেয় সৌদি নেতৃত্বাধীন সামরিক জোট।