অনলাইন ডেস্কঃ করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের কারণে এবার বহিঃবিশ্বের মুসলমানরা পবিত্র হজে অংশ নিতে পারছেন না। শুধু সৌদি আরবে অবস্থানরত স্থানীয় নাগরিক ও আরো প্রায় ১৬০টি দেশের নাগরিকরা অংশ নিচ্ছেন। বিদেশি নাগরিক ৭০ শতাংশ ও স্থানীয় নাগরিক ৩০ শতাংশ মিলে মোট ১০ হাজার হজযাত্রী নিয়ে ইতোমধ্যে হজের আনুষ্ঠানিকতার প্রথম ধাপ শুরু হয়েছে।
আজ রোববার থেকে হজযাত্রীদের সাতদিনের হোম কোয়ারেন্টাইনে পাঠিয়েছে সৌদি কর্তৃপক্ষ। এই প্রক্রিয়া শেষে আগামী ৩ জিলহজ মক্কায় এসে আরো চারদিনের কোয়ারেন্টাইনে থাকবেন হজযাত্রীরা। এরপর ৮ জিলহজ বাদ ফজর মিনার উদ্দেশ্যে রওনা দেবেন তারা। এর মধ্য দিয়ে শুরু হবে হজের মূল আনুষ্ঠানিকতা। ১২ জিলহজ পর্যন্ত মিনা, মুজদালিফা, আরাফাতের ময়দান ও মক্কায় হজের বিভিন্ন আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন হবে।
করোনার সংক্রমণ ঠেকাতে ও হজযাত্রীদের স্বাস্থ্যগত নিরাপত্তার স্বার্থে ইতোমধ্যে প্রত্যেক হজযাত্রীর স্বাস্থ্য পরীক্ষা সম্পন্ন হয়েছে। দেয়া হয়েছে প্রয়োজনীয় ভ্যাকসিন। হজ ও ওমরাহ মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে হজযাত্রীদের জন্য প্রয়োজনীয় সামগ্রী পাঠানো হয়েছে। এসব সামগ্রীর বাইরে অন্য কিছু বহন করা যাবে না।
সামগ্রীগুলোর মধ্যে রয়েছে- চিপ লাগানো একটি স্মার্ট ব্রেসলেট, দুই সেট ইহরামের কাপড়, ব্যক্তিগত প্রয়োজনীয় সরঞ্জামাদি, জামারাতে নিক্ষেপের জন্য জীবাণুমুক্ত কঙ্কর, জুতা, ফোনের চার্জার, জায়নামাজ, জুতার ব্যাগ, হাতব্যাগ এবং হজের বিধি-বিধানসহ প্রাসঙ্গিক বই-পত্র ও স্বাস্থ্যবিধি সম্বলিত নির্দেশিকা।
এদিকে আজ ভোর থেকেই মক্কার নির্দিষ্ট এলাকাসহ মিনা, মুজদালিফা ও আরাফাতে জনসাধারণের প্রবেশ নিষিদ্ধ করা হয়েছে। এসব স্থানে অনুমোদিত ব্যক্তি ছাড়া কেউ প্রবেশ করতে পারবে না। অন্যথায় ১০ হাজার সৌদি রিয়াল জরিমানা করা হবে। প্রবেশ পথসহ বিভিন্ন সড়কে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর টহল জোরদার ও চেকপোস্ট বসানো হয়েছে।
মিনা, জামারাত, মুজদালিফা ও আরাফাতের ময়দান জীবাণূমুক্ত করা হয়েছে। মসজিদুল হারামের ভেতরে ও বাইরের অংশে নামাজের কাতারে শারীরিক দূরত্ব নিশ্চিত করার জন্য স্টিকার লাগানো হয়েছে। নিরাপত্তার স্বার্থে যাতায়াতের জন্য প্রতি ২০ জন করে একটি দল করা হয়েছে। নির্ধারিত বাসগুলোতে ২০ জন করে হজযাত্রী থাকবেন।
এ বছর হাজিরা মিনার তাঁবুতে থাকতে পারবেন না। তারা মিনার নির্দিষ্ট ভবনগুলোতে অবস্থান করবেন। ওই ভবনগুলো জামারাত থেকে মুজদালিফা যাওয়ার পথে পড়ে। সেখান থেকে নিকট দূরত্বে মসজিদে খাইফ ও কংকর মারার স্থান। আবার এখান থেকে আরাফা ও মুজদালিফায় সহজেই যাওয়া যায়।
হজ পালনকালে কাবা শরীফ স্পর্শ ও হাজরে আসওয়াদে চুমু দিতে পারবেন না হজযাত্রীরা। অন্তত দেড় মিটার দূরত্ব বজায় রেখে তাওয়াফ ও সায়ী সম্পন্ন করতে হবে। নামাজ পড়ার সময়ও একই দূরত্ব বজায় রাখতে হবে। সকল হজযাত্রীর মাস্ক পরা বাধ্যতামূলক।