স্বামী-সন্তানকে নিয়ে কক্সবাজারে বেড়াতে গিয়ে ধর্ষণের শিকার হয়েছেন ঢাকার এক গৃহবধূ।
সংঘবদ্ধ একটি চক্র শহরের লাবণী পয়েন্ট থেকে ওই নারীকে তুলে নিয়ে তার স্বামী-সন্তানকে জিম্মি করে ও হত্যার হুমকি দিয়ে কয়েক দফা ধর্ষণ করে।
পরে খবর পেয়ে বুধবার রাত দেড়টার দিকে জিয়া গেস্ট ইন নামের একটি হোটেল থেকে ওই নারীকে উদ্ধার করা হয় বলে র্যাব-১৫ কক্সবাজার ব্যাটালিয়ানের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল খাইরুল ইসলাম জানান।
তিনি বলেছেন, ওই হোটেলের ম্যানজোরকে তারা জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করেছেন। হোটেলের সিসি ক্যামেরার ভিডিও দেখে জড়িতদের শনাক্ত করা হয়েছে এবং তাদের গ্রেপ্তারে অভিযান চালাচ্ছে র্যাব।
২৫ বছর বয়সী ওই নারীকে কক্সবাজার সদর হাসপাতালে ওয়ান স্টপ ক্রাইসিস সেন্টারে (ওসিসি) চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। স্বামী আর আট মাসের শিশু সন্তানকে নিয়ে ঢাকার যাত্রাবাড়ী থেকে বুধবার তিনি কক্সবাজারে এসেছিলেন বেড়াতে।
ভুক্তভোগী ওই নারী সাংবাদিকদের বলেন, বুধবার সকালে কক্সবাজারে পৌঁছে হলিডে মোড়ের একটি হোটেলে ওঠেন তারা। বিকালে সৈকতের লাবনী পয়েন্টে এক মার্কেটে ভিড়ের মধ্যে অপরিচিত এক যুবকের সঙ্গে তার স্বামীর ধাক্কা লাগলে কথা-কাটাকাটি হয়।
পরে সন্ধ্যার দিকে পর্যটন গলফ মাঠের সামনে থেকে তার শিশু সন্তান ও স্বামীকে অটোরিকশায় করে তুলে নিয়ে যায় কয়েকজন যুবক।
আর তিন যুবক আরেকটি অটোরিকশায় করে ওই নারীকে তুলে নিয়ে গিয়ে গলফ মাঠের পেছনে নির্জন স্থানে নিয়ে ধর্ষণ করে।
ওই নারী বলছেন, ওই তিন যুবক তাকে পরে নিয়ে যায় জিয়া গেস্ট ইন হোটেলে। তৃতীয় তলার একটি কক্ষে আটকে রেখে তাকে আরেক দফা ধর্ষণ করা হয়। ঘটনা কাউকে জানালে সন্তান ও স্বামীকে ‘হত্যা করা হবে’ বলে হুমকি দিয়ে বাইরে থেকে রুম আটকে চলে যায় ওই তিন যুবক।
পরে হোটেলের তৃতীয় তলার জানালা দিয়ে ডেকে এক ব্যক্তির সহায়তায় কক্ষ থেকে বের হন ওই নারী। স্থানীয়দের সহায়তায় ফোন করে র্যাবে অভিযাগ জানান। পরে ওই হোটেলে গিয়ে তাকে উদ্ধার করে র্যাব। আর তার স্বামী ও সন্তানকে উদ্ধার করা হয় পর্যটন গলফ মাঠের সামনে থেকে।
র্যাব কর্মকর্তা খায়রুল ইসলাম বলেন, “এ ঘটনার সঙ্গে যারাই জড়িত থাকুক, তাদের কঠোর শাস্তি পেতে হবে। বিষয়টি নিয়ে তদন্ত চলছে। মামলাও প্রক্রিয়াধীন।’
ভুক্তভোগী ওই নারী অভিযোগ করেন, এ বিষয়ে পুলিশের জরুরি সেবার নম্বর ৯৯৯ এ ফোন করে তিনি কোনো সহায়তা পাননি। পুলিশের উপ-পরিদর্শক (এসআই) পদের এক সদস্য তাকে থানায় গিয়ে লিখিত অভিযোগ দিতে বলেন। পরে স্থানীয়দের সহায়তায় তিনি র্যাবের সঙ্গে যোগাযোগ করেন।
কক্সবাজার সদর থানার ওসি শেখ মুনীর-উল-গীয়াস বলেন, ভুক্তভোগী ওই নারীকে কক্সবাজার সদর হাসপাতালের ওয়ান স্টপ ক্রাইসিস সেন্টারে (ওসিসি) চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। তার লিখিত অভিযোগ পেলে মামলা নথিভুক্ত করা হবে।
জরুরি সেবার নম্বরে ফোন কর সহায়তা না পাওয়ার অভিযোগের বিষয়ে প্রশ্ন করলে ওসি বলেন, বিষয়টি তার জানা নেই। তিনি খোঁজ নিয়ে দেখবেন।