২০২১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতার ৫০ বছর পূর্তি উৎসব যৌথভাবে পালন করবে বাংলাদেশ ও ভারত। পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. একে আবদুল মোমেন এ তথ্য জানান।
তিনি বলেন, ‘ভারত আমাদের কাছের প্রতিবেশী। তাদের সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক ঐতিহাসিক। বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে তারাও রক্ত দিয়েছে। আগামী বছর আমরা স্বাধীনতার ৫০ বছর পূর্তি উৎসব করব। এ উৎসবে অনেক অনুষ্ঠান দু’দেশ মিলে করবে। এজন্য আলাপ-আলোচনাও চলছে।’
বুধবার সকালে সিলেট জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে স্থাপিত জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর ম্যুরাল উদ্ধোধনী অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের তিনি এসব কথা বলেন।
এ সময় তিনি সংযুক্ত আরব আমিরাতের প্রবাসী শ্রমিকদের ফেরত পাঠানো নিয়ে সৃষ্ট জটিলতার ব্যাখ্যা দেন। তিনি বলেন, ‘সংযুক্ত আরব আমিরাতের নতুন নতুন আইন-ই জটিলতার কারণ। তবে এসব জটিলতা নিরসনে সরকার কাজ করছে।’
পররাষ্ট্রমন্ত্রী ৩ দিনের সফরে মঙ্গলবার দুপুরে নিজ এলাকায় পৌঁছেন। বুধবার সকালে তিনি জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে স্থাপিত বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতি উন্মোচনের পরে তাতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন। এসময় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানসহ ১৫ আগস্ট শাহাদতবরণকারী সবার রুহের মাগফিরাত কামনা করে মোনাজাত করা হয়।
অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে সিলেটের জেলা প্রশাসক এম কাজী এমদাদুল ইসলাম, আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক সফিউল আলম নাদেল, মহানগর আওয়ামী লীগ সভাপতি মাসুক উদ্দিন আহমেদ, সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক জাকির হোসেন, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নাসির উদ্দিন খানসহ জেলা প্রশাসনের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
পরে স্থানীয় গণমাধ্যমকর্মীদের সঙ্গে কথা বলেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী। ভারতের পররাষ্ট্র সচিব হর্ষবর্ধন শ্রিংলার বাংলাদেশ সফরের বিষয়ে
মন্ত্রী বলেন, ‘পররাষ্ট্র সচিব পর্যায়ের আলোচনায় দুই দেশের করোনাভাইরাস সংক্রমণ পরিস্থিতি গুরুত্ব পাবে। ভারতে কোভিডের ভ্যাকসিন তৈরির সম্ভাবনা আছে। সেটা আমরা কিভাবে পেতে পারি এটা নিয়েও আলোচনা হতে পারে। তবে আমরা অন্যান্য দেশ থেকেও কোভিডের ভ্যাকসিনের ব্যবস্থা করার চেষ্টা চালাব।’
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ভারতীয় পররাষ্ট্র সচিবের সঙ্গে দু’দেশের স্বার্থসংশ্লিষ্ট নানা বিষয়াদি নিয়ে আলোচনা হবে। প্রতিবেশী দেশ হিসেবে ভারতের সঙ্গে আমাদের অনেক কিছু আলোচনার আছে। কোভিডের কারণে পশ্চিমবঙ্গ সরকার কড়াকড়ি করায় দু’দেশের অনেক পণ্যবাহী ট্রাক আটকা পড়েছিল। পরে ট্রাকের পরিবর্তে ট্রেন ও জাহাজ দিয়ে পণ্য পরিবহন করা হয়েছে। ভারতের সঙ্গে ভালো সম্পর্ক থাকায় এসব সমস্যা সহজে দূর করা সম্ভব হচ্ছে।
এ সময় প্রবাসী শ্রমিকদের ফিরে যাওয়া নিয়ে জটিলতার বিষয়ে মন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে তিনি বলেন, করোনা পরিস্থিতিতে সংযুক্ত আরব আমিরাত ফেরত প্রবাসী শ্রমিকদের কর্মস্থলে ফেরত নেয়ার জটিলতাগুলো সমাধানের চেষ্টা চলছে।
তিনি বলেন, ‘করোনা পরিস্থিতিতে বিভিন্ন দেশ বলেছিল ভিসার মেয়াদ বা ইকামা বিনা পয়সায় স্বয়ংক্রিয়ভাবে নবায়ন হবে। কিন্তু কয়েকটি দেশ, যেমন একটি দেশ ইউএই (সংযুক্ত আরব আমিরাত) তারা নতুন নতুন আইন দিচ্ছে। এখন তারা বলছে, শুধু ভিসার মেয়াদ নয়; ভ্যালিড ভিসা থাকতে হবে, তারপর যে কফিল রয়েছেন, তার গ্রিন সিগন্যাল লাগবে। এই অবস্থায় কিছু লোক পাঠানো হলেও কফিলের গ্রিন সিগন্যাল না থাকায়, তাদের ফেরত দিয়েছে। এ বিষয়টি বেশ ঝামেলা তৈরি করছে। তবে এ সমস্যা সমাধানের চেষ্টা চলছে।