
মজিবর রহমান। পেশায় ইজিবাইক চালক। একমাত্র বৃদ্ধা মাকে নিয়ে বসবাস করেন নরসিংদী শহরের নাগরিয়াকান্দি এলাকায়। বাবা জয়নাল গাজী মারা গেছেন প্রায় ২০ বছর আগে। ইজিবাইক চালিয়ে সংসার চালান।
কয়েক বছর আগে রায়পুরা উপজলোর মরজাল কামারটকে এলাকার নজরুল ইসলামের বড় মেয়ে সুমি বেগমের সঙ্গে পরিচয় হয় মজিবরের। একপর্যায়ে তাদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে। সেই সম্পর্ক শেষ পর্যন্ত বিয়েতে গড়ায়। নরসিংদীর একটি কাজি অফিসে বিয়ে হয় তাদের।
মজিবর তার নিজ বাড়িতে স্ত্রী ও একমাত্র বৃদ্ধা মাকে নিয়ে সুখেই দিন পার করছিলেন। এভাবেই কেটে যায় আরো দেড় বছর। মজিবর সারাদিন ইজিবাইক চালিয়ে যা আয় করেন তাই দিয়ে তিনজনের সংসার ভালোই চলছিল।
প্রায় দেড়মাস আগে মজিবর রোজগারের সন্ধানে ইজিবাইক নিয়ে বের হয়ে বাড়ি ফিরে দেখেন প্রিয়তমা স্ত্রী ঘরে নেই। মার কাছ থেকে জানতে পারেন- সুমি তার বাবার বাড়ি চলে গেছেন। পরদিন ছুটে যান শ্বশুরবাড়ি। সেখানেই সুমির সন্ধান পান। স্ত্রীকে আনতে চাইলেও বাধা দেন শাশুড়ি লিলি বেগম। এ সময় জানতে পারেন- শাশুড়ি ফুসলিয়ে সুমিকে তার স্বামীর বাড়ি থেকে নিয়ে আসেন। পরিবারের বড় হওয়ায় সুমিকে শিবপুর উপজেলার বিসিক আমতলার একটি গার্মেন্টে চাকরি দেন মা লিলি বেগম।
স্ত্রী না আসায় মজিবর একপ্রকার পাগলপ্রায় হয়ে পড়েন। প্রিয়তমা স্ত্রীকে ফিরে পেতে নরসিংদী শহর ও সুমির সম্ভাব্য যাতায়াত পথসহ বিভিন্ন স্থানে বেশ কিছু বিলবোর্ড টানিয়েছেন মজিবর। কতটি বিলবোর্ড টানিয়েছেন এমন প্রশ্নের জবাবে মজিবর জানান, ২৫টি বিলবোর্ড টানিয়েছেন। কেন টানিয়েছেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, দীর্ঘ দেড় বছরের প্রেম, তারপর বিয়ে, সুমিকে অনেক ভালোবাসেন তিনি। বিয়ের দেড় বছরে একবারও ঝগড়া হয়নি। হয়নি কোনো গালমন্দও। তাকে না পেলে বাঁচবেন না।
লোকজন বিলবোর্ড দেখে তাকে যেন সবাই সুমির খবর দেয়। এছাড়া সুমির চোখে পড়লে সেও যেন তার কাছে চলে আসে। তার জন্য এই অভিনব বিলবোর্ড টানিয়েছেন তিনি। থানায় কোনো অভিযোগ করেছেন কিনা জানতে চাইলে মজিবর জানান, সে তার বাবার বাড়ি আছে, তাই অভিযোগ করার প্রয়োজন মনে হয়নি। ভালোবাসার টানে সুমি চলে আসবে- সেই অপেক্ষায় প্রহর গুনছেন মজিবর।
উৎসঃ মানবজমিন