আমার বাবা সৌদি গেছে। মাসে মাসে আমার কাছে টেহা পাডাইছে। বাবাডার সঙ্গে প্রতিদিন কতা না কইলে আমার রাইতে ঘুম অয় না। আইন্নেরা আমার পোলাডার সঙ্গে একবার কতা কউয়াইয়া দেইন। তার মুখটা আমারে একবার দেহাইন। আমি আর সইবার পাইরতাছিনা।’
মারা যাওয়া সন্তানকে এক নজর দেখতে রোববার এভাবেই আহাজারি করেন শেরপুরের নকলা উপজেলার কদবানু বেগম। উপজেলার উরফা ইউনিয়নের কদ বানুর ছেলে দুলাল উদ্দিন সৌদি আরবে কর্মরত অবস্থায় মারা গেছেন। প্রায় ২ মাস ধরে এভাবেই কেঁদে কেঁদে বুক ভাসাচ্ছেন আর সামনে যাকেই পাচ্ছেন তাকেই আহাজারি করে ছেলের মুখটা একবার দেখার জন্য করুণ আকুতি জানাচ্ছেন।
জানা যায়, পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম দুলাল উদ্দিন ৩ বছর আগে সৌদি আরবে পাড়ি জমান। সেখানে নির্মাণ শ্রমিকের কাজে নিয়োজিত ছিলেন। চলতি বছরের ২০ জুলাই কর্মরত অবস্থায় সেখানে তিনি মারা যান। তবে মারা যাওয়ার প্রায় দুই মাস পার হলেও অজ্ঞাত কারণে তার লাশ বাংলাদেশে আসছে না। ছেলের লাশের অপেক্ষায় দিনরাত এভাবেই কাঁদছেন মা।
লাশ বাংলাদেশে আনার বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য বড়ভাই মো. আবুল হোসেন, জেলা কর্মসংস্থান ও জনশক্তি অফিস জামালপুরের সহকারী পরিচালকের মাধ্যমে ওয়েজ আর্নার্স কল্যাণ বোর্ডের মহাপরিচালক বরাবর আবেদন করেছেন। এতেও কোনো আশার আলো না দেখে হতাশ হয়ে পড়েছে পরিবার।
আবুল হোসেন জানান, ভাইয়ের মুখটা মা-বাবাকে শেষবারের মতো দেখাতে পারলে আমরা শান্তি পেতাম। তা না হলে মা-বাবা কেঁদে কেঁদে মারা যাবে।
উরফা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নুরে আলম তালুকদার ভুট্টো বলেন, ছেলেকে হারিয়ে পরিবারটি দিশেহারা। বাবা-মা এখন দুলাল উদ্দিনের লাশ ফিরে পেতে চান।