পরীক্ষার হলে ফেসবুকে লাইভ দিতে নিষেধ করলেও শোনেননি ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলা ছাত্রলীগের সদ্য বিলুপ্ত কমিটির সাধারণ সম্পাদক মনির হোসেন সুমন।
এমনই তথ্য জানিয়েছেন পরীক্ষার সময় ছাত্রলীগ নেতার ফোন ধরে থাকা নওরিন রেনু নামের ওই নারী। তিনি প্রিজম কম্পিউটার ট্রেনিং সেন্টারের অ্যাকাউন্টস বিভাগে চাকরি করেন।
সোমবার দুপুরে এ প্রতিবেদকের সঙ্গে কথা হয় নওরিন রেনুর। তিনি জানান, শুক্রবার সকালে প্রিজম কম্পিউটারের ছাত্রছাত্রীদের নিয়ে গিয়েছিলাম। সঙ্গে অফিসের ট্রেইনার সমির দাসও ছিলেন। প্রাকটিক্যাল পরীক্ষা চলছিল। ওই সময় হলে দায়িত্বরত কোনো শিক্ষক ছিলেন না। বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে যাওয়া ব্যক্তিরা হলে প্রবেশ করে।
ওই সময় তিনি ও সমির দাস প্রবেশ করেন। হলে ঢুকেই দেখেন একটি ছেলে লাইভ করছে। কাছে গিয়ে দেখেন তিনি তাদের প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী। এ সময় তাকে নিষেধ করেন।
পরীক্ষার হলে ফেসবুক লাইভ করলে সমস্যা হবে বলে তাকে জানান। কিন্তু ছাত্রলীগ নেতার তার কথা শোনেননি। এর পর ওই ছাত্র রেনুকে ফোনটি ধরে লাইভে দেখানোর জন্য অনুরোধ করেন।
তিনি আরও জানান, ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সুমনের ভয়েই তিনি ফোনটা হাতে নিয়ে লাইভ ধরেন। কারণ তিনি তো প্রভাবশালী।
পরীক্ষার হলে উপস্থিত প্রিজম কম্পিউটারের ট্রেইনার সমির দাস বলেন, সুমন ভাই যখন লাইভ করছিল, তখন তিনি হলে ছিলেন। শিক্ষার্থীদের স্বাক্ষর করানোর কাজে ব্যস্ত ছিলেন। হঠাৎ তাকিয়ে দেখেন একজন লাইভে হাসাহাসি করছে। ছাত্রলীগ নেতা হওয়ায় ভয়ে তিনি কিছু বলেননি।
গত শুক্রবার দুপুরে কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের অধীনে ঝিনাইদহ পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট কেন্দ্রে কম্পিউটার অফিস অ্যাপ্লিকেশন বিষয়ের পরীক্ষা দেওয়ার সময় ৯ মিনিট ৩৮ সেকেন্ডের একটি লাইভ করেন তিনি। এর পর ফেসবুকে লাইভটি মুহূর্তের মধ্যেই ভাইরাল হয়ে যায়। শুরু হয় আলোচনা-সমালোচনা।
গণমাধ্যমে বিষয়টি নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশিত হলে শনিবার রাতে কালীগঞ্জ উপজেলা ছাত্রলীগের কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা করা হয়। কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয় ও সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্য্য স্বাক্ষরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।