
অত্যন্ত সুপরিকল্পিতভাবে নির্বাচনকে পিছিয়ে দেওয়ার পাঁয়তারা শুরু হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
মঙ্গলবার (২০ মে) বিকেলে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের ৪৪তম শাহাদাত বার্ষিকী উপলক্ষে কর্মসূচি প্রণয়নে এক জরুরি যৌথসভায় ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে যুক্ত হয়ে এ মন্তব্য করেন তিনি।
মির্জা ফখরুল বলেন, অত্যন্ত সুপরিকল্পিতভাবে নির্বাচনকে পিছিয়ে দেওয়া, জনগণের যে অধিকার সেটি থেকে বঞ্চিত করা এবং ভোটের অধিকার থেকে বঞ্চিত করার একটা পাঁয়তারা শুরু হয়েছে।
তিনি বলেন, হাজার হাজার ছাত্র জনতার রক্তের বিনিময়ে নতুন যে সম্ভাবনা সৃষ্টি হয়েছে গণতন্ত্রকে প্রতিষ্ঠিত করবার এবং সত্যিকার অর্থে ফ্যাসিবাদ মুক্ত আধুনিক বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা করবার.. সেখানেও আমরা দেখছি একটা কালো ছায়া এসে দাঁড়াচ্ছে।
বিভাজনের রাজনীতি আবার শুরু হয়েছে এমন অভিযোগ তুলে বিএনপি মহাসচিব বলেন, এখানে গোত্রে গোত্রে বিভাজন সৃষ্টি করার চেষ্টা করা হচ্ছে। সরকারের বিভিন্ন ইন্সটিটিউশনগুলোকে পরস্পরের মুখোমুখি দাড় করানোর চেষ্টা করা হচ্ছে।
তিনি বলেন, আমরা দেখতে পাচ্ছি কিছু মানুষ সরকারের মধ্যে অনুপ্রবেশ ঘটিয়ে বাংলাদেশকে ভিন্ন দিকে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছে, ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করার চেষ্টা করা হচ্ছে।
যারা বাংলাদেশকে গত ১৫ বছর ধরে একটা ফ্যাসিস্ট শাসনের মধ্যে রেখেছিলো তারা এখন গভীর ষড়যন্ত্র করে চলেছে সীমান্তের ওপার থেকে। বিএনপির ওপর সব সময় গুরুদায়িত্ব এসে পড়ে জানিয়ে তিনি বলেন, সেই দায়িত্ব বাংলাদেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করবার দায়িত্ব।
জিয়াউর রহমান বাংলাদেশের রাজনীতিতে সবচেয়ে বেশি অবদান রেখেছেন জানিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, ৩০ মে তার শাহাদাৎ বার্ষিকীর দিনটি শুধু আমরা শাহাদাৎ বার্ষিকী হিসেবে স্মরণ করতে চাই না, বাংলাদেশকে সত্যিকার অর্থেই একটি গণতান্ত্রিক, আধুনিক, সাম্যের রাষ্ট্রে পরিণত করবার যে শক্তি আমরা যেখান থেকে পাই সেই দিবস হিসেবে পালন করতে চাই।
১৯৭২ থেকে ৭৫ সাল পর্যন্ত আওয়ামী লীগের দুঃশাসনের চিত্র তুলে ধরে তিনি বলেন, এ সময় এক দলীয় শাসনে রূপান্তরিত হয়েছিল, বাকশাল প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। সেটাকে বাদ দিয়ে জিয়াউর রহমান জনগণের সমর্থনে বহুদলীয় গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। এর ফলেই সারা দেশে রাজনৈতিক কাঠামোর পরিবর্তন হয়েছে। একই সঙ্গে অর্থনৈতিক যে সমাজতন্ত্রের যে ভ্রান্ত ধারণা সেটাকেও তিনি পরিবর্তন করে মুক্ত বাজার অর্থনীতি নিয়ে আসেন।
জিয়াউর রহমান বাংলাদেশে সংস্কারের জনক উল্লেখ করে তিনি বলেন, তার হাত ধরেই বাংলাদেশে মৌলিক সংস্কার শুরু হয়েছে।
যৌথসভায় বিএনপি’র সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীসহ যুগ্ম-মহাসচিববৃন্দ, ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ বিএনপির আহ্বায়ক ও সদস্য সচিবগণ এবং অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠন সমূহের সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক, আহ্বায়ক,সদস্য সচিবগণ উপস্থিত ছিলেন।
উল্লেখ্য, জিয়াউর রহমানের শাহাদাতবার্ষিকী উপলক্ষে ৮ দিনের কর্মসূচি শুরু হবে ২৫ মে থেকে। এর মধ্যে ২৭ ও ২৮ মে ঢাকায় হবে তারুণ্যের সমাবেশ। ২৯ মে বিকেল ৩টায় ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হবে। তবে ওই দুই দিন শাহাদাত বার্ষিকীর অন্য কোনো কর্মসূচি থাকবে না। আর ৩০ মে সকালে জিয়াউর রহমানের সমাধিতে শ্রদ্ধা নিবেদন করবেন নেতাকর্মীরা।