আবদুল্লাহ আল মামুন, সাতক্ষীরা জেলা প্রতিনিধি: সুন্দরবনে বনদস্যু ও জলদস্যু দমনে ‘জিরো টলারেন্স’ নীতি বাস্তবায়নে বিশেষ অভিযান শুরু করেছে বন বিভাগ। প্রয়োজন হলে যৌথ বাহিনী ও র্যাবও এ অভিযানে যুক্ত হবে বলে জানিয়েছে সংশ্লিষ্টরা।
বনবিভাগ ও স্থানীয় সূত্র জানায়, ২০২৪ সালের আগস্ট থেকে সুন্দরবনে দস্যুতির প্রবণতা বেড়ে যাওয়ায় জেলে, বাওয়ালি ও বনজীবীরা দীর্ঘদিন ধরে চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছিলেন। জিম্মি করে মুক্তিপণ আদায়, নৌযান আটকে রাখা ও বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে দস্যুরা সক্রিয় হয়ে ওঠে। উপকূলবাসীর দাবি—দস্যুমুক্ত সুন্দরবন ফিরিয়ে আনা জরুরি।
শনিবার (২২ নভেম্বর) বিকাল থেকে সুন্দরবনের বিভিন্ন খালে–বনে অভিযান শুরু করে বন বিভাগ। নৌকা, ট্রলার ও লঞ্চে তল্লাশি চালিয়ে দস্যুতা ও জলদস্যুতির বিষয়ে তথ্য সংগ্রহ করা হচ্ছে। লক্ষ্য—সুন্দরবনের ভেতরে থাকা সব ধরনের অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড নির্মূল করা।
সুন্দরবন সাতক্ষীরা রেঞ্জের বুড়িগোয়ালিনী স্টেশনের স্টেশন অফিসার জিয়াউর রহমান বলেন,
“সুন্দরবন, বনের প্রাণী, জেলে–বাওয়ালি ও বনজীবীদের সুরক্ষায় এ অভিযান পরিচালিত হচ্ছে। সম্প্রতি দস্যুতা বেড়ে যাওয়ায় কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। যেখানে দস্যুতা বেশি, সেখানে বিশেষ টহল টিম কাজ করছে। দস্যুদের কঠোর হাতে দমন করা হবে।”
সাতক্ষীরা রেঞ্জের কাছিকাটা টহল ফাঁড়ির ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. শফিকুল ইসলাম শাহীন জানান,
“বিশ্বের বৃহত্তম ম্যানগ্রোভ সুন্দরবন রক্ষায় বনবিভাগ সবসময় সতর্ক। জেলে, বাওয়ালি ও বনজীবীদের নিরাপত্তায় এবং দস্যুবাহিনী নির্মূলে শনিবার বিকাল থেকে অভিযান শুরু হয়েছে। প্রয়োজনে যৌথ বাহিনী ও র্যাবও যুক্ত হবে। একটি চৌকস টিম ইতোমধ্যে ভেতরে অভিযান চালাচ্ছে। সন্দেহ হলে যেকোনো নৌযান বা ব্যক্তিকে তল্লাশি করা হচ্ছে।”
তিনি আরও বলেন, “অনেক সময় জেলে নৌকায় বনদস্যুদের খাবার ও প্রয়োজনীয় জিনিস আনা–নেওয়া হয়। তাই কারও বিরুদ্ধে সন্দেহ দেখা দিলে সঙ্গে সঙ্গে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। পাশাপাশি জেলেদের পাস-পারমিট ঠিক আছে কি না—সেটাও কঠোরভাবে যাচাই করা হচ্ছে।”
সুন্দরবনকে নিরাপদ রাখতে বনবিভাগের এই অভিযান অব্যাহত থাকবে বলে জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ।
