সুনামগঞ্জ-১ আসনের সংসদ সদস্য ইঞ্জিনিয়ার মোয়াজ্জেম হোসেন রতনকে নিয়ে ফেসবুকে পোস্ট দেওয়ার অভিযোগে সুনামগঞ্জে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলার পর এক সাংবাদিককে গ্রেফতার করা হয়েছে। সোমবার (৪ মে) দিনগত রাত ২টার দিকে সুনামগঞ্জ পৌর শহরের বলাকা আবাসিক এলাকার বাসা থেকে সাংবাদিক মাহতাব উদ্দিন তালুকদারকে (৪০) গ্রেফতার করা হয়। ধরমপাশা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ দেলোয়ার হোসেন বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
মাহতাব বেসরকারি টেলিভিশন এসএটিভির সুনামগঞ্জ জেলা প্রতিনিধি। এছাড়া তিনি সুনামগঞ্জ থেকে প্রকাশিত দৈনিক হাওরাঞ্চলের কথা পত্রিকার প্রকাশক ও সম্পাদক।
সোমবার রাতে জেলার ধরমপাশা থানায় মামলাটি করেন ধরমপাশা উপজেলার সেলবরষ ইউনিয়নের উত্তরবীর গ্রামের বাসিন্দা ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বেনুয়ার হোসেন খান।
মামলা প্রসঙ্গে বাদী বেনুয়ার হোসেন খান বলেন, ‘তিনি সুনামগঞ্জ-১ আসনের সংসদ সদস্য ইঞ্জিনিয়ার মোয়াজ্জেম হোসেন রতনের বিপক্ষে অসত্য তথ্য ফেসবুকে প্রকাশ করায় তার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছি। আমি আদালতে ন্যায়বিচার প্রার্থনা করি।’
ধরমপাশা থানার ওসি বলেন, ‘বাদী মামলার এজাহারে অভিযোগ করেছেন, মাহতাব উদ্দিন তালুকদার সংসদ সদস্যকে নিয়ে ফেসবুকে মিথ্যাচার করে পোস্ট দিয়েছেন। এ ধরনের মিথ্যাচারে সংসদ সদস্যের সম্মানহানি হয়েছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘মামলা দায়েরের পর বিষয়টি তারা সুনামগঞ্জ সদর মডেল থানা পুলিশকে জানান। পরে সদর থানার পুলিশ ধরমপাশা থানার পুলিশের সহায়তায় আসামিকে গ্রেফতার করে।
কোর্ট পুলিশের সিএসআই মো. আশিক সোজা মামুন বলেন, ‘সাংবাদিক মাহতাব উদ্দিন তালুকদারকে মঙ্গলবার সকালে আদালতে নিয়ে আসা হয়। পরে বিকালে আদালত থেকে সুনামগঞ্জ জেলা কারাগারে পাঠানো হয়।’
এ বিষয়ে সুনামগঞ্জ প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক অধ্যক্ষ শেরগুল আহমদ বলেন, ‘আইনি সুরক্ষা পাওয়ার অধিকার দেশের যেকোনও নাগরিকের রয়েছে। এ ঘটনায় সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে দোষী প্রমাণিত হলে আইন অনুযায়ী বিচার হবে।’
সাংবাদিক মাহতাব উদ্দিন তালুকদারের স্ত্রী সানজিদা খানম বলেন, ‘আমার স্বামীর বিরুদ্ধে দীর্ঘদিন যাবৎ একটি প্রভাবশালী মহল ষড়যন্ত্র করে আসছে। তার ফেসবুক আইডি হ্যাক হয়েছিল। এটি ষড়যন্ত্রমূলক ঘটনা। এর সঙ্গে তিনি জড়িত নন।’ তিনি আদালতে ন্যায়বিচার প্রার্থনা করেন।
বিবাদী পক্ষের আইনজীবী রজত কান্তি সরকার বলেন, ‘আমরা জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট খালেদ মিয়ার আদালতে জামিনের আবেদন করেছিলাম। আদালত জামিন শুনানি শেষে আবেদন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।’