আবু তালহা, সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধিঃ সিরাজগঞ্জের কামারখন্দে চলতি মৌসুমে আমন ধানের চাষাবাদ শুরু করেছে কৃষক। প্রতি শতক ফসলী জমিতে ১৮-২০ টাকা বেশি দামে পাওয়ার টিলার (ট্রাক্টর) দিয়ে জমি প্রস্তুত করে চাষাবাদ শুরু করেছে । চলতি আমন মৌসুমে উৎপাদন ব্যয় উঠবে কিনা-তা নিয়ে সন্দেহ রয়েছে। কৃষক বলেছেন, সারের দাম বৃদ্ধি, শ্রমিক ব্যয় ও আনুষঙ্গিক যে ব্যয় হবে, তাতে চলতি মৌসুমে আমন চাষে লোকসান হবে।
উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর জানায়, ইউরিয়া সার কেজিতে ৬ টাকা বাড়ানো হয়েছে এর ব্যবহার কমানোর জন্য। কৃষক শতাংশে ১ থেকে দেড় কেজি ইউরিয়া সার ব্যবহার করে যেখানে ৭৫০ গ্রাম ব্যবহার করলেই যথেষ্ট এজন্য সরকার ইউরিয়ার দাম বাড়িয়েছে। এদিকে ডিএপি সার ২৫ টাকা ছিল সেটা ৯ টাকা কমিয়ে ১৬ টাকা বিক্রি হচ্ছে। অর্থাৎ ইউরিয়া সারের ব্যবহার কমানো ও ডিএপি সারের মাধ্যমে ফসল উৎপাদন বাড়ানোর জন্যই সরকার ইউরিয়া সারের মূল্য বাড়িয়েছে। জ্বালানি তেলের জন্য কৃষকের সমস্যা হতে পারে তবে সারের জন্য সমস্যা হবে না।
আইয়ুব আলী প্রামাণিক বলেন , ডিজেলের দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় প্রতি ডিসিমাল জমিতে ৩৫-৪০ টাকায় পাওয়ার টিলার (ট্রাক্টর) দিয়ে জমির হাল চাষ করা হচ্ছে। যে হালচাষ গতবার ছিল ২০-২২ টাকা অর্থাৎ প্রতি ডিসিমাল জমিতে ১৮-২০ টাকা বেশি দিয়ে হাল চাষ করা হচ্ছে। এদিকে ইউরিয়া সারের দাম কেজিতে ৬ টাকা বেড়েছে।
কৃষক গোলবার বলেন, আবহাওয়া ঠিক থাকলে এক বিঘা জমিতে ধান চাষে খরচ হয় প্রায় সাড়ে ৪ হাজার টাকা। ধান উৎপাদন হয় প্রায় ৮ হাজার টাকার মতো। এ বছর সারের দাম বেড়েছে। তুলনা মূলকভাবে বৃষ্টি নেই। এরপর সেচ কাজে ব্যবহৃত ডিজেলের দামও বাড়ানো হয়েছে। খরচ ওঠানোই দায়।
উপজেলার রায়দৌলতপুর ইউনিয়নের কৃষক সামছেল সরকার বলেন,একে তো বৃষ্টির অভাবে আমরা রোপা আমন লাগাতে পারছি না। তার উপরে বেড়েছে ইউরিয়া সারের দাম। এতে আমন উৎপাদন খরচ অনেক বেড়ে যাবে।
কৃষক আব্দুস সামাদ বলেন,রোপা আমন বপনের কাজ শুরু করেছি। সেচ দিয়েই চাষ শুরু করেছি। সারের পাশাপাশি জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় সেচ খরচও বেড়ে যাবে। কৃষকরা বাড়তি চাপে পড়বে।
ট্রাক্টর চালক রহমত আলী বলেন, ডিজেলের দাম হঠাৎ করে বেড়েছে গত বছর ২০-২২ টাকা ডিসিমাল করে চাষ দিয়েছি এবার ৩৫ টাকায় চাষ দেওয়া হচ্ছে।
কামারখন্দ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আনোয়ার সাদাত বলেন, চলতি মৌসুমে আমন ধানের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়ে ৫ হাজার ২৮০হেক্টর। ইতোমধ্যে ২ হাজার ৮০ হেক্টর জমিতে চারা বপন করা হয়েছে। সারের কোন সংকট নেই।
সারের বাজারে নিয়মিতই মনিটরিং করা হচ্ছে। এবার আবহাওয়া অনুকুলে থাকলে আমনের বাম্পার ফলন হবে।