সিরাজগঞ্জ জেলা প্রতিনিধিঃ মানুষের স্বপ্নের শেষ নেই, সব স্বপ্নই পূরণ হবে না জেনেও আমরা স্বপ্ন দেখি। আমরা স্বপ্ন দেখতে ভালবাসি হয়তোবা এই স্বপ্ন দেখার জন্যই আমরা বেঁচে আছি। সব স্বপ্ন পূরণ না হলেও আমরা ভাগ্যর দোহাই দিয়ে বর্তমানের মধ্যেই নিজেদের সুখকে খুঁজে নেই। তেমনই একজন মানুষ সিরাজগঞ্জের কামারখন্দ উপজেলার আবু হায়াত সেখ ছোট বেলা থেকে স্বপ্ন দেখছিলেন লেখাপড়া করে একদিন অনেক বড় মানুষ হবেন। সংসারের দুঃখ-দুর্দশা ঘুচিয়ে পরিবারের মুখ উজ্জ্বল করবেন। সমাজে নিজেকে একজন প্রতিষ্ঠিত মানুষ হিসেবে গড়ে তুলবেন।
অন্য দশটা মানুষের মতোই স্বপ্ন দেখা আবু হায়াত সেখ সংসারের অভাব অনটনের কারণে তার স্বপ্ন আর পূরণ করতে পারেননি। যে সময়টাতে তার স্কুল মাঠে বন্ধুবান্ধবের সাথে ছোটাছুটি করার কথা ছিল সেই সময়টাতে অভাবের তাড়নায় ছুটে বেড়িয়েছেন কাজের সন্ধানে। প্রথম দিকে তেমন কাজ না পেয়ে একজনের কাছে সেলুনে চুল কাটা শিখেছিলেন ধীরে ধীরে নিজের কাঁধে সংসারের ভাড় নেমে আসছিল সংসার নামের এই ঘানি টানতে না পেরে ভিন্ন পথ বেছে নেন। শুরু করেন উপজেলার জামতৈল বাজারে আখের রস বিক্রি।
প্রথমদিকে হাত দিয়ে ঘোরানো একটি এনালগ মেশিনের মাধ্যমে আখের রস বের করে উপজেলার জামতৈল রেলওয়ে স্টেশন এর আশেপাশে বিক্রি করা শুরু করেন। আখের রস বের করার প্রক্রিয়াটি আরো সহজতর করতে পরবর্তীতে ডিজেল চালিত মেশিনের মাধ্যমে আখের রস বের করতেন। বর্তমানে আরেকটু সহজ করতে ব্যাটারি চালিত মোটর এর মাধ্যমে আখের রস বের করে প্রত্যেক গ্লাস ১০ টাকা করে বিক্রি করেন যা তাকে অভাব জয়ের পথ দেখিয়েছে। আবু হায়াত সেখ উপজেলার জমতৈল গ্রামের আব্দুল কুদ্দুস শেখের ছেলে। আবু হায়াত এখন এক ছেলে ও এক মেয়ের জনক। বর্তমানে পরিবারের সবাইকে নিয়ে সুখে-শান্তিতে রয়েছেন।
আবু হায়াত জানান, অভাব অনটনের সংসারে নিজের স্বপ্ন গুলোকে পূরণ করতে পারিনি। প্রথমে অন্যের অধীনে কাজ করতাম পরবর্তীতে আমি নিজেই অল্প পুজি নিয়ে ব্যবসা শুরু করি এখন মোটামুটি ভালই সংসার চলছে। দিনে যদি ৩ হাজার টাকার মতো বিক্রি করতে পারি তাহলে দিন শেষে দেখা যায় এক হাজার থেকে ১২ শত টাকা পর্যন্ত লাভ হয়। আখের রস বিক্রির ব্যবসা টা প্রায় এক যুগ ধরে করে আসছি এ কাজে আমাকে আমার বাবা সহযোগিতা করে দুজন মিলে মূলত এই কাজটি করছি। আমার স্বপ্ন যখন পূরণ হয়নি তবে আমার ছেলেমেয়েদের স্বপ্ন অপূর্ণ রাখবো না। আমার ছেলেটা কে স্কুলে পাঠাই মেয়েটা ছোট একটু বড় হলে তাকেই স্কুলে পাঠাবো।