আবদুল্লাহ আল মামুন, সাতক্ষীরা জেলা প্রতিনিধি: সাতক্ষীরার তালা কলেজ ছাত্রলীগের কমিটি চলছে বিবাহিত,অছাত্র,হত্যা মামলার আসামী নিয়ে। ১ বছর মেয়াদী ২ সদস্য বিশিষ্ট কমিটির ৬ বছর অতিক্রম করেছে ইতিমধ্য। কমিটির দুই নেতারই নেই ছাত্রত্ব। ছাত্রত্ব না থাকায় চাকরিতে প্রবেশ করেছেন কমিটির সাধারণ সম্পাদক।
এমনকি সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক বিয়ে করে সংসারও শুরু করেছেন। ফলে বিবাহিত ও চাকরিজীবীর সহ হত্যা মামলার আসামীর দখলেই থাকায় আওয়ামীলীগের এই ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠন বাংলাদেশ ছাত্রলীগ তালা সরকারী কলেজ শাখার সাংগঠনিক কাঠামো যেমন ভেঙ্গে পড়েছে তেমনি কার্যক্রম চলছে খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে।
ছাত্রলীগের গঠনতন্ত্রের ৫ (ক) অনুচ্ছেদে বলা আছে, অনূর্ধ্ব ২৭ বছর বয়সী বাংলাদেশের যে কোনও বিশ্ববিদ্যালয় বা শিক্ষা বোর্ড কর্তৃক স্বীকৃত যে কোনও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ছাত্র বা ছাত্রী বাংলাদেশ ছাত্রলীগের প্রাথমিক সদস্য হতে পারেন। প্রতি শিক্ষাবর্ষে সদস্যপদ নবায়ন করা বাঞ্ছনীয়।
কোনও চাকরিজীবী ছাত্রলীগের নেতৃত্বে থাকতে পারবেন না, সে কথাও পরিষ্কার করে উল্লেখ করা হয়েছে। গঠনতন্ত্রের ৫ (গ) অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, যে কোনও নিয়মিত ছাত্র (৫ এর ক উপধারা অনুযায়ী) ছাত্রলীগের কর্মকর্তা ও কেন্দ্রীয় নির্বাহী সংসদের সদস্য হতে পারে। সরকারি চাকরিতে নিয়োজিত কোনও ছাত্র ছাত্রলীগের কর্মকর্তা হতে পারবে না। বিবাহিতদের বিষয়ে গঠনতন্ত্রে কিছু বলা নেই। তবে শেখ হাসিনার নির্দেশের কারণে বিবাহিতদের কোনও পদে না রাখা অলিখিত নিয়ম বলেই মনে করা হয় ছাত্রলীগে। ছাত্রলীগের গঠনতন্ত্রের কোন নিয়ম না মানলেও বহাল তবিয়েত আছে তালা সরকারী কলেজ ছাত্রলীগের কমিটি।
তথ্যমতে,২০১৬ সালেই ৫ ই সেপ্টেম্বর সাতক্ষীরা জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি তানভীর হুসাইন সুজন ও সাধারণ সম্পাদক শেখ এহসান হাবীব অয়ন স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে শেখ তুহিনকে সভাপতি, আল-মামুন হোসেনকে সাধারণ সম্পাদক করে তালা সরকারি কলেজ শাখা ছাত্রলীগের কমিটি অনুমোদন দেন। বিজ্ঞপ্তিতে আরও উল্লেখ করা হয়, এ কলেজ ছাত্রলীগের কমিটির মেয়াদ শেষ হওয়ায় দীর্ঘদিন ধরে এখানে ছাত্রলীগের কোনো কার্যক্রম নেই। তাই এক বছরের জন্য আংশিক কমিটির অনুমোদন দেওয়া হলো। যে জেলা ছাত্রলীগ তালা সরকারী কলেজ ছাত্রলীগ কমিটি ঘোষনা করেন সেই কমিটির মেয়াদ শেষে হয়েও ২-৩ বার জেলা কমিটি পরিবর্তন হয়েছে।
কিন্তু সেই কলেজ ছাত্রলীগের একবছরের কমিটি রয়ে গেছে বছরের পরে বছর। উক্ত একবছরের কমিটি ৬ বছর পার হলেও জেলা ছাত্রলীগের নেতারা যেনো দেখেও দেখতে পাচ্ছেন না। মেয়াদ উত্তীর্ণ কমিটির বর্তমান সাধারণ সম্পাদক সরদার মামুন বিবাহ করেন কয়েক বছর আগে এমনকি তালা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স মাস্টার রোলে চাকুরীজীবি হিসেবে কর্মরত ছিলেন। একই কমিটির সভাপতি শেখ তুহিন ছিলেন তালা উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি প্রার্থী। কিন্তু গত ২৬ অক্টোবার ঘোষিত উপজেলা ছাত্রলীগের কমিটিতে পদ না পেয়ে তার কিছু দিন পরে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন। আবার এই নেতা তালার বহুল আলোচিত লুৎফর নিকারী হত্যা মামলার আসামী এবং এই মামলায় জেলও খেটেছেন কয়েক মাস। এদিকে দীর্ঘদিন কমিটি না হওয়ায় হতাশ হয়ে পড়েছেন পদপ্রত্যাশী নেতাকর্মীরা। অনেকের পদের আশায় কলেজ জীবন শেষ করতে চলেছেন। সভাপতি শেখ তুহিনের ভোটার আইডির তথ্য মতে ২৮ বছর ১০ মাস অতিক্রম হয়েছে তার বয়স। সাধারণ সম্পাদক সরদার মামুনের বয়স অতিক্রম না করলেও করেছেন বিবাহ ও সরকারী প্রতিষ্ঠানে মাস্টাররোল কর্মচারী হিসেবে কর্মরত ছিলেন।
কলেজ ছাত্রলীগের পদপ্রত্যাশী নেতাকর্মীরা বলেন, গত ৬ বছরে এ কমিটির সভাপতি/সাধারণ সম্পাদক বিবাহিত ও চাকুরীজীবি। তারা সংগঠনকে গতিশীল করতে কোন কার্যক্রম পরিচালনা করেন না। সে কারণে তালা সরকারী কলেজ ছাত্রলীগের নেতৃত্বের শূন্যতা তৈরি হয়েছে। অতিদ্রুত তালা সরকারী কলেজ ছাত্রলীগের কমিটি ঘোষনা করতে জেলা ছাত্রলীগের কাছে আহব্বান জানাচ্ছি।
এবিষয়ে সাতক্ষীরা জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সুমন হোসেন বলেন, তালা সরকারী কলেজ ছাত্রলীগ ছাত্রলীগের কমিটির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক বিবাহিত সেটিও জানি।অতিদ্রুত সম্মেলনের মাধ্যমে তালা সরকারী কলেজ শাখার কমিটি ঘোষনা করা হবে।