আবদুল্লাহ আল মামুন, সাতক্ষীরা জেলা প্রতিনিধি: সাতক্ষীরার কলারোয়া সীমান্ত রেখার এপাশে ওপাশে প্রতি কেজি গরুর মাংসের দামের পার্থক্য সাড়ে ৫শ’ টাকা। ফলে ফেরি করে সাড়ে ৪শ’ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে পাচার হয়ে আসা রোগাক্রান্ত নিন্মমানের ভারতীয় গরুর মাংস।
জানা গেছে, কলারোয়া সীমান্ত সংলগ্ন ভারতের আমুদিয়া, তারালি, নিত্যানন্দকাটি, হাকিমপুর, দরকান্দা, পদ্মবিল, আশ-শিকড়ী, গণরাজপুর, গোবরা, গোবিন্দপুর, কালাঞ্চি গ্রামের মানুষ ১৮০ রুপি কেজি দরে গরুর মাংস কিনে খাচ্ছে। অর্থাৎ বাংলাদেশী ২৩০ টাকা কেজি দরে ভারতে গরুর মাংস বিক্রি হচ্ছে। আর কলারোয়া সীমান্ত সংলগ্ন গ্রামগুলোতে গরুর মাংস বিক্রি হচ্ছে ৭২০ টাকা থেকে সাড়ে ৭শ’ টাকা কেজি। দেয়াড়া গ্রামের টুকু বলেন, ৬০ কেজির বস্তা মোটা ধান ১৮০০ টাকা এবং চিকন ধান ২হাজার ৫০ টাকা। ফলে ২৪ কেজি মোটা ধান বা ২২ কেজি চিকন ধান বিক্রি করে এককেজি গরুর মাংস কিনতে হয়। অর্থাৎ ৬০ কেজির এক বস্তা মোটা ধান বিক্রি করে আড়াই কেজি আর একই পরিমাণ চিকন ধান বিক্রি করে পৌনে তিন কেজি গরুর মাংস কেনা যায়।
সুতরাং মন চাইলেও টাকার অভাবে গরু মাংস কিনতে পারিনা। তাই বাড়ির শিশুরা মাংসের জন্য বায়না ধরলে খারাপ বুঝেও ভারতীয় মাংস খেতে হয়। সোনাবাড়িয়ার রফিকুল বলেন, সীমান্ত রেখার ওপারে বাংলাদেশী টাকায় ২৩০ টাকা কেজির গরুর মাংস এপারে ৭২০ টাকায় বিক্রি হয়। টাকার অভাবে সীমান্ত পথে পাচার হয়ে আসা রোগাক্রান্ত নি¤œমানের গরুর মাংস কিনে খেতে বাধ্য হচ্ছি। ফলে চোরাই পথে আসা ভারতীয় মাংসের চাহিদা বৃদ্ধি পেয়েছে। চাহিদা বাড়ার কারণে চোরাই পথে পাচার হয়ে আসা মাংস স্থান বিশেষে সাড়ে ৪শ’ টাকা বেড়ে সাড়ে ৫শ’ টাকা বিক্রি হচ্ছে। আবার এই সুযোগে চোরাচালানী চক্র রুগ্ন মরণাপন্ন গরু সংগ্রহের পর গভীর রাতে জবাই করে সেই মাংস বাংলাদেশে পাঠাচ্ছে বলে সুত্র জানায়। ২৩০ টাকা কেজির ভারতীয় মাংস চোরাই পথে এসে সাড়ে ৫শ’ টাকা পর্যন্ত বিক্রির নেপথ্যে রযেছে দু’দেশের অসাধু সীমান্তরক্ষী ও ক্ষমাতাসীন দলের নেতাদের বখরা এবং চোরাচালানীদের অতি মুনাফা। শেষ রাতে পাচার হয়ে আসা এই মাংস সীমান্ত সংলগ্ন গ্রামে বাড়ি বাড়ি ফেরি করে বিক্রি হচ্ছে। কলারোয়ার বালিয়াডাঙ্গা, ভাদিয়ালী, সোনাবাড়িয়া, কাজিরহাট, খোরদো, সরসকাটি, মাংসের দোকানে দেশীয় মাংসের সংগে ভেজাল দিয়ে ভারতীয় মাংস বিক্রি করা হচ্ছে বলে সূত্র জানায়। তবে রোগাক্রান্ত গরুর নিন্মমানের মাংস খাওয়ার কারণে জনস্বাস্থ্য মারাত্মক হুমকির মুখে পড়তে পারে বলে অনেকেই ধারণা করেছেন।