আবদুল্লাহ আল মামু, সাতক্ষীরা জেলা প্রতিনিধিঃ সাতক্ষীরা সদর উপজেলার ভোমরা ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রের উপ-সহকারী কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার ডা: মোজাম্মেল হোসেন দীর্ঘদিন একস্থানে চাকরি করার সুবাদে বিভিন্ন অনিয়ম-দুর্নীতির সাথে জড়িয়ে পড়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
৩০ বছরেরও বেশি সময় ধরে চাকরি করছেন তিনি। তার বাড়ি থেকে অফিসের দূরত্ব মাত্র ৭ কিলোমিটার।
তথ্যানুসন্ধানে জানা গেছে, সেবা প্রত্যাশীরা তার কাছে গেলে তিনি দুর্ব্যবহার করেন। তার ব্যক্তিগত চেম্বারের ঔষধ হাসপাতালে বিক্রি করেন। এসব ঔষধ রোগীদের কিনতে বাধ্য করান তিনি। তার উদ্ধর্তন কোনো অফিসারকে মানেন না বলে অভিযোগ করেন স্থানীয়রা।
স্থানীয়রা জানান, হাসপাতালে কোনো গর্ভবতী রোগী গেলে তার পছন্দের দুই ক্লিনিকে (সাতক্ষীরা নাহার ডায়াগনস্টিক সেন্টার এবং কুলিয়া হাবিবা সার্জিক্যাল ক্লিনিক) গিয়ে আল্ট্রাসনোগ্রাম করতে বাধ্য করান। অন্য কোথাও গেলে আল্ট্রাসনোগ্রাম চলবে না বলে রোগীকে জানান ডা: মোজাম্মেল হোসেন। এছাড়া প্রত্যেক গর্ভবতী রোগীকে নাকি বাধ্যতামূলক রক্তের স্যালাইন দিতে হবে। যেটা তিনি তার ব্যক্তিগত চেম্বার থেকে নিয়ে যান।
তার ব্যক্তিগত চেম্বারের প্রসার-প্রচার করার জন্য সরকারের দেওয়া রেজিস্ট্রার খাতায় সেবাপ্রত্যাশীদের নাম ঠিকানা লিখেন ঠিকই কিন্তু ঔষধপত্র তার ব্যক্তিগত প্যাডে লিখে দেন, যেনো তার ফার্মেসী থেকে ঔষধ কিনতে বাধ্য হয়। এছাড়া উপজেলা অফিস থেকে হাসপাতালের জন্য যেসব মালামাল দেওয়া হয় তার অধিকাংশ নাকি তিনি বাড়িতে নিয়ে যান।
ডা: মোজাম্মেল হোসেন বাংলাদেশ ডিপ্লোমা মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশনের সাতক্ষীরা জেলার সাধারণ সম্পাদক হওয়ায় জেলা পরিবার পরিকল্পনার ডিডি, মেডিকেল অফিসারসহ উদ্ধর্তন কর্মকর্তাদের কাউকে মানেন না বলে অভিযোগ করেন অনেকেই। সম্প্রতি একটা ঘটনাকে কেন্দ্র করে ডা: মোজাম্মেল হোসেন জেলা ডিডি অফিস ঘেরাও করার হুমকি দেন বলে জানা গেছে।
মোজাম্মেল হোসেনের সীমাহীন অপকর্মের বিরুদ্ধে স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের পরিচালক (প্রশাসন) বরাবর ভোমরার স্থানীয়রা অভিযোগপত্র পাঠিয়েছেন। অভিযোগপত্রে মোজাম্মেল হোসেনের অসৎ ব্যবহার, দুর্নীতি, রাম রাজত্ব, যৌন নির্যাতন, আর নানা অপকর্মের বিচারের দাবি করেছেন। অভিযোগ পত্রে আরো উল্লেখ আছে, এই মোজাম্মেল হোসেন জেলার উদ্ধর্তন কাউকেই তোয়াক্কা করেন না। তাই যাতে বিষয়গুলো তদন্ত করে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয় সেজন্য স্থানীয়রা দাবি জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নিকট।
এ ব্যাপারে মোজাম্মেল হোসেনের মুঠোফোনে কয়েকবার যোগাযোগ করেও তাকে পাওয়া যায়নি।