সরকারের সর্বোচ্চ পর্যায়ে আলোচনা করে স্বাস্থ্য অধিদফতরের নতুন মহাপরিচালক (ডিজি) নিয়োগ দেয়া হবে বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী জাহিদ মালেক। বুধবার (২২ জুলাই) সচিবালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে মন্ত্রী এ কথা জানান।
তিনি বলেন, ‘আমাদের ডিজি মহোদয় (স্বাস্থ্য অধিদফতরের ডিজি অধ্যাপক ডা. আবুল কালাম আজাদ) পদত্যাগ করেছেন। নিয়ম আছে, সেই নিয়ম অনুযায়ী এটা জনপ্রশাসনে গেছে। জনপ্রশাসন সিদ্ধান্ত নেবে পরবর্তী পদক্ষেপ তারা কী নেবেন।
নতুন ডিজি নিয়োগের বিষয়ে জানতে চাইলে মন্ত্রী বলেন, ‘পদত্যাগপত্র যেটা জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে গেছে এ বিষয়ে আগে আমাদের কাছে সব সিদ্ধান্ত আসুক তারপর আমরা চিন্তা-ভাবনা করে, আরও উচ্চপর্যায়ে আলোচনা করে সে সিদ্ধান্ত নিতে পারব।’
নতুন মহাপরিচালক নিয়োগের বিষয়ে সতর্ক থাকবেন কিনা- জানতে চাইলে জাহিদ মালেক বলেন, ‘অবশ্যই সবাই মিলে আলোচনা করেই সিদ্ধান্ত নেয়া হবে। সর্বোচ্চ পর্যায়ে আমরা আলোচনা করব, দরকার হলে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সাথে এ বিষয়ে আলোচনা করে নেব।’
অনিয়মের সঙ্গে জড়িত স্বাস্থ্য অধিদফতরের আরও কিছু কর্মকর্তার নাম এসেছে, তাদের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা নিয়েছেন কিনা- জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমরা দেখব যেখানে প্রয়োজন পরিবর্তনের, আমরা সে বিষয়গুলো অবশ্যই দেখব। আমরা চাই এখানে সুষ্ঠু পরিচালনা হোক, মানুষ সেবা পাক। আমরা তো মানুষের সেবা নিয়েই গত পাঁচ মাস কাজ করে গেছি। মাঠে কিন্তু স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ই ছিল, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সাথে অনেকে সাহায্য করেছে।’
তিনি বলেন, ‘আমরা ভালো করেছি কিনা সেটা সাংবাদিক ভাইয়েরা ভালো বুঝতে পারবেন। পরীক্ষায় কত নম্বর পেলেন এটার ওপর ডিপেন্ড করে পরীক্ষা কেমন দিয়েছেন। আমি মনে করি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ভালো নম্বর পেয়েছে। নম্বরটা কী? আমাদের মৃত্যুহার দেড় পার্সেন্ট। যেটা আমেরিকায় ৬ পার্সেন্ট, ইউরোপে ১০ পার্সেন্ট, পৃথিবীরটা হলো ৬ পার্সেন্ট।’
স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ‘করোনায় এখন আমাদের মৃত্যুহার পৃথিবীর মধ্যে ঘনবসতিপূর্ণ যত দেশ আছে, এর মধ্যে সবচেয়ে কম। আরও ভালো সংবাদ হলো, রোগীর সংখ্যা বিশেষ করে ঢাকা শহরে অর্ধেকে নেমে গেছে। ঢাকায় তিন হাজারেরও বেশি বেড খালি আছে।’
আরও ২ হাজার চিকিৎসক ও ৩ হাজার টেকনিশিয়ান নিয়োগের প্রক্রিয়া চলছে বলেও জানান স্বাস্থ্যমন্ত্রী।
চিকিৎসা ব্যবস্থা ভালো হওয়ায় কোভিড রোগী কমে গেছে দাবি করে জাহিদ মালেক বলেন, ‘ঘরে বসে লোকে চিকিৎসা নিচ্ছে। টেলিমেডিসিন যেটা আমরা দিচ্ছি, সেটা খুব ভালো কাজ করছে। চার হাজারে বেশি চিকিৎসক টেলিমেডিসিন দিচ্ছেন। মেডিসিনের যে প্রয়োগ সেটাও খুব ভালো হচ্ছে। সেজন্য মানুষ ঘরে বসেই সেবা পাচ্ছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘৭৮টি অক্সিজেন সেন্ট্রাল লাইন আমরা হাসপাতালে স্থাপন করছি, যেটা আগামী এক দেড় মাসের মধ্যে সব হাসপাতালে লেগে যাবে, যেটা আগে ছিল না।’
ভ্যাকসিন যেটা ভালো হয় সেটাই গ্রহণ করব
পৃথিবীর অনেক দেশেই করোনার প্রতিষেধক ভ্যাকসিন তৈরি হচ্ছে জানিয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ‘যারা ভ্যাকসিন তৈরি করছে, থার্ড স্টেজে চলে আসছে, তাদের সাথে আমাদের যোগাযোগ আছে। সবারটাই আমরা মাথায় রেখেছি। চীন থেকে যারা আসছে তারাও যোগাযোগ করেছে। যেটা ভালো হয় আমরা সেটাই গ্রহণ করব। আমরা কখন নেব, কাদেরটা নেব, সেটা সরকারি সিদ্ধান্ত। সে সিদ্ধান্তের জন্য আমরা অপেক্ষা করব।’