বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আব্দুল মঈন খান বলেছেন, সরকার ক্ষমতায় থাকার জন্য জুলুম, খুন, গুম, অত্যাচার ও প্রশাসন যন্ত্র ব্যবহার করে মানুষের ওপর নির্যাতন চালাচ্ছে। সাধারণ মানুষ সেই অত্যাচার সহ্য করে যাচ্ছে।
তিনি বলেন, স্পষ্ট করে বলতে চাই, আমরা বিরোধী দলের রাজনীতি করি। কিন্তু আমরা সরকারবিরোধী নই, সরকারের অন্যায় কাজের বিরোধী। এই কথাটি দেশের জনগণকে বুঝতে হবে এবং সরকারকেও বুঝতে হবে।
সোমবার (২৬ ডিসেম্বর) ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাগর-রুনি মিলনায়তনে আয়োজিত এক প্রতিবাদ সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
সরকারের পদত্যাগ, অবৈধ সংসদ বাতিল, নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচনসহ ১০ দফা বাস্তবায়ন এবং খালেদা জিয়া, মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, মির্জা আব্বাসসহ গ্রেফতার নেতাদের মুক্তির দাবি জানানো হয় সভা থেকে। এর আয়োজন করে রাশেদ ইকবাল খান মুক্তি পরিষদ।
মঈন খান বলেন, সরকার যদি কোনো অন্যায় করে তাহলে তার জবাবদিহিতা নিশ্চিত করবে বিরোধী দল। এটি গণতন্ত্রের নিয়ম, আর বিএনপি তাই বিশ্বাস করে। এর বাইরে কিছু নয়। বিএনপি প্রতিহিংসার রাজনীতিতে বিশ্বাস করে না।
তিনি বলেন, যে দল গণতন্ত্রে বিশ্বাস করে না, তাদের কীভাবে বিশ্বাস করব। তারা (আওয়ামী লীগ) গণতন্ত্রে বিশ্বাস করে না। কিন্তু মুখে বলে, তারা নাকি মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের দল। যে দল গণতন্ত্রে বিশ্বাস করে না তারা কিভাবে স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি হয়?
বিএনপির এই নেতা বলেন, মুক্তিযুদ্ধে এ দেশের মানুষ বুকের রক্ত ঢেলে দিয়েছিল। আর সেই মুক্তিযুদ্ধের মূল কথাই ছিল গণতন্ত্র। আমরা পাকিস্তানের বিরুদ্ধে অস্ত্র ধরেছিলাম, কারণ আমরা উপলব্ধি করেছিলাম- পাকিস্তানের অপশাসনের মধ্যে কখনো গণতন্ত্র হতে পারে না এবং অর্থনৈতিক সাম্য হতে পারেন। আর এই দুই কারণেই আমরা সেদিন অস্ত্র ধরেছিলাম।
মঈন খান বলেন, বহুদলীয় গণতন্ত্রকে হত্যা করে একদলীয় বাকশাল এই আওয়ামী লীগ কায়েম করেছে। অনেকে প্রশ্ন করতে পারেন, সরকার অলিখিত বাকশাল কায়েম করেছে, আমি বলব এটি লিখিতের চেয়ে বেশি কার্যকর।
নির্বাচন নিয়ে তিনি বলেন, কেন আজকে জাতীয় সংসদে ৩০০ আসনের মধ্যে সরকার ২৯৩টি আসন দখল করে রেখেছে? এটি কি কোনো নির্বাচনের মাধ্যমে হতে পারে। এই বিষয় তো একজন বোকার কাছেও পরিষ্কার। শুধু তৃণমূলের মানুষ নয়, বিশ্বের নামিদামি মানুষ বুঝে গেছে, এ দেশে কী হয়।
বিএনপির এই স্থায়ী কমিটির সদস্য বলেন, আওয়ামী লীগ যদি জনগণের ভালোই করে থাকে, নিরপেক্ষ নির্বাচন দিতে ভয় পাচ্ছে কেন? দেশে যদি মানুষের ভোটের অধিকার দিতে হয়, তাহলে সরকারকে ক্ষমতা থেকে সরে যেতে হবে।
সভায় সভাপতিত্ব করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক আহ্বায়ক আক্তার হোসেন। সঞ্চালনা করেন ছাত্রদলের সহ-সভাপতি করিম প্রধান রনি।
বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক ব্যারিস্টার নাসির উদ্দিন আহমেদ অসীম, বিএনপির তথ্যবিষয়ক সম্পাদক আজিজুল বারী হেলাল, স্বেচ্ছাসেবক দলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আব্দুল কাদির ভুইয়া জুয়েল, ছাত্রদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আকরামুল হাসান প্রমুখ।