সরকার অন্ধকার ঘরে কালো বিড়াল খুঁজে বেড়াচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ও ট্রাস্টি ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী। তিনি বলেন, কোভিড-১৯ পরিস্থিতি কীভাবে সমাধান করবে, সেটি সরকারের চিন্তার মধ্যে নেই। সামনের দিনগুলোতে করোনাভাইরাসের ভয়াবহতা নিয়েও সতর্ক করেন এই মুক্তিযোদ্ধা।
করোনা রোগ থেকে মুক্তি হওয়ায় কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে বৃহস্পতিবার ধানমণ্ডিতে আয়োজিত এক আলোচনাসভায় তিনি এ কথা বলেন।
ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, ‘করোনা মোকাবেলায় সরকারের কোনো চিন্তাভাবনা নেই। সরকার একটি অন্ধকার ঘরে কালো বিড়াল খুঁজে বেড়াচ্ছে।’
কোভিড-১৯ পরিস্থিতি নিয়ে সতর্ক করে দিয়ে তিনি বলেন, এখনও মূল ধাক্কা আসেনি। আসবে এ মাসের পরে। যখন গ্রামগঞ্জে ছড়িয়ে পড়বে এই মহামারী।
এ সময় গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের ট্রাস্টি বলেন, জাতীয় ওষুধ নীতির নিয়ম বদলালে ওষুধের দাম অর্ধেক হবে। এ জন্য সুস্থ স্বাস্থ্য ব্যবস্থা দরকার। এটা জনগণণের দাবি উঠানো ছাড়া সম্ভব না। এর পরিবর্তনের জন্য জনগণের পক্ষ থেকে আওয়াজ আসতে হবে।
আলোচনাসভায় ডা. ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) ডা. মামুন মোস্তাফি বলেন, জাফরুল্লাহ চৌধুরীর করোনা নেগেটিভ হলেও ফুসফুসের ৮০ শতাংশ নিমোনিয়ায় আক্রান্ত হয়েছেন। গ্রামের একজন মানুষ ও কৃষক যে সেবা নিতে পারেন না, তিনি তা গ্রহণ করেন না।
তিনি বলেন, ওনার করোনা বিজয়ী হওয়ার পেছনে সবচেয়ে বড় হলো তার মনোবল। আমরা ঢাকা মেডিকেলে তার জন্য কেবিন প্রস্তুত করেছিলাম। কিন্তু তিনি বলে দিয়েছেন, ওখানে থেকে আমার গ্রামের একজন মানুষ চিকিৎসা নিতে পারবে না, আমিও নেব না। গ্রামের কোনো মানুষের এখানে থেকে মৃত্যু হলে আমারও হবে।
মামুন মোস্তাফি বলেন, ডা. জাফরুল্লাহ আমার ৩৫ বছরের চিকিৎসা জীবনে সবচেয়ে ডিফিকাল্ট পেশেন্ট। আমি তার চিকিৎসা করার সুযোগ পেয়ে নিজেকে ভাগ্যবান মনে করেছি। এ সময় তিনি আরও বলেন, ডায়ালাইসিস রোগীদের করোনা হলে চিকিৎসা দেয়ার মতো হাসপাতাল বাংলাদেশে নেই।
তবে গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রে ডায়ালাইসিস রোগীদের করোনা চিকিৎসার জন্য আইসিইউসহ সম্পূর্ণ সুযোগ-সুবিধা সম্পন্ন একটি ইউনিট তৈরি করা হচ্ছে বলে মামুন মোস্তাফি জানান।
তিনি বলেন, দেশের সাধারণ মানুষের সঙ্গে যে ডা. জাফরুল্লাহর একাত্মবোধ তা আমি আর কারও মাঝে দেখিনি। তার প্রতি দেশের মানুষের যে ভালোবাসা ছিল, তা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ঢুকলে দেখা যায়। প্রতিটা মানুষের দোয়া ছিল– আল্লাহ তুমি এই মানুষটাকে বাঁচিয়ে রাখো।