সংসদের দক্ষিণ প্লাজায় দেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী, অস্থায়ী রাষ্ট্রপতি, উপ-রাষ্ট্রপ্রতি ও সাবেক মন্ত্রী ব্যারিস্টার মওদুদ আহমেদের জানাজার জন্য অনুমতি চেয়ে তা পাননি তার পরিবার। করোনার কারণ দেখিয়ে জানাজার অনুমতি দেয়া হয়নি বলে নয়া দিগন্তকে জানিয়েছেন বিএনপি চেয়ারপারসনের মিডিয়া উইং কর্মকর্তা শায়রুল কবির খান।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও সংসদের সাবেক বিরোধীদলীয় চিফ হুইপ জয়নুল আবেদিন ফারুক নয়া দিগন্তকে বলেন, ‘আমি গতকাল সাড়ে ৯টায় পরিবারের পক্ষ থেকে সংসদের দক্ষিণ প্লাজায় জানাজা অনুষ্ঠানের জন্য লিখিত আবেদন করেছি। সংসদের বর্তমান চিফ হুইপ আমাকে কোভিড ইস্যু দেখিয়ে ফোনে অপারগতা জানিয়েছেন। তিনি বলেছেন, ফারুক ভাই কোভিড বেড়ে গেছে। আমরা কাউকে অনুমতি দিচ্ছি না। এটাও হয়তো হবে না।’ তাই আমরা মওদুদ আহমেদের জানাজার ওই সূচি করেছি সেখানে সংসদ ভবনে জানাজার কথা উল্লেখ নেই।
এ বিষয়ে সংসদ সদস্য ব্যারিস্টার রুমিন ফারহানা নয়া দিগন্তকে বলেন, ‘এর চাইতে নোংরা রাজনীতি আর কিছু হতে পারে না। আমরা ন্যূনতম যে শিষ্টাচার আশা করেছিলাম সেটাও অবশিষ্ট নেই। তিনি বলেন, একজন মানুষ যখন মৃত্যুবরণ করেন তখন তার কোনো পরিচয় থাকে না। তিনি আল্লাহর মেহমান হয়ে যায়। তাই যে ঘটনাটি ঘটেছে তার চাইতে লজ্জাকর কিছু হতে পারে না।’
এ বিষয়ে সংসদ সদস্য বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব হারুন উর রশিদ নয়া দিগন্তকে বলেন, ‘আমি নিজেও এ বিষয়ে স্পিকারের সাথে কথা বলেছি। বিষয়টি মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নলেজেও আছে। কোভিডের কারণে অনুমতি দেয়া হয়নি। বিষয়টি এমন না যে কাউকে অনুমতি দেয়া হচ্ছে আর কাউকে দেয়া হচ্ছে না।
এ বিষয়ে মতামত জানতে চাইলে প্রবীণ আইনজীবী ও বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান খন্দকার মাহবুব হোসেন নয়া দিগন্তকে বলেন, একজন প্রবীণ আইনজীবী, একাধিকবারের সংসদ সদস্য, সাবেক মন্ত্রীর জানাজার জন্য সংসদে অনুমতি মিলেনি। এর চাইতে লজ্জাজনক কী হতে পারে? যারা অনুমতি দেয়নি তারা প্রতিটি ক্ষেত্রে রাজনীতিকে ব্যবহার করছে। যেটা একসময় তাদের জন্য কাল হয়ে দাঁড়াবে। কারণ ক্ষমতার পরিবর্তন যখন হবে তখন এগুলো তাদের ঘাড়ে এসে পড়বে।
উল্লেখ্য, বিকেলে দেশে ফিরছে বরেণ্য রাজনীতিবীদ ব্যারিস্টার মওদুদ আহমেদের লাশ। বৃহস্পতিবার বিকেল ৫টা ৪৫ মিনিটে বাংলাদেশ বিমানে তার লাশ হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে এসে পৌঁছাবে।
লাশ দেশে ফেরার পর ইউনাইটেড হাসপাতালে হিমঘরে রাখা হবে। পরদিন শুক্রবার সকাল ৯টায় সর্বস্তরের জনগণের শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য তার লাশ কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে রাখা হবে। পরে সকাল ১০টায় হাইকোর্ট প্রাঙ্গণে নামাজের জানাজা শেষে নয়া পল্টন বিএনপি কেন্দ্রীয় অফিসের সামনে নিয়ে আসা হবে। সেখানে সকাল ১১টায় নামাজের জানাজার পর হেলিকপ্টারে নোয়াখালী উদ্দেশে লাশ নিয়ে যাওয়া হবে।
নোয়াখালী বসুরহাট ও কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা মাঠে নামাজের জানাজা শেষে পারিবারিক করবস্থানে মা-বাবার কবরের পাশে দাফন করা হবে।
উৎসঃ নয়া দিগন্ত