নিজস্ব প্রতিবেদকঃ চট্টগ্রামের মেয়ে দেওয়ান রুমানা আফরোজ। মিডিয়া জগতে পরিচিতি রুমানা আফরোজ নামে।
দেওয়ান মাকসুদ আহমেদ ও নার্গিস জাকিয়া সুলতানার নম্র ভদ্র সুশিক্ষিত ও প্রতিষ্ঠিত কন্যা রোমানা।
সংবাদ পাঠ উপস্থাপনায় মিডিয়াপাড়ায় খুব আলোচিত নাম রুমানা।
সংবাদ পাঠ উপস্থাপনায় আগমন হোন ২০০৯ সালে সময় টেলিভিশন এর মাধ্যমে। তবে ভয়েজ আর্টিস্ট হিসেবে কাজ করেন বাংলাদেশ বেতার এ ১৯৯৫ থেকে। পরে ২০০৭ থেকে চট্টগ্রামে রেডিও ফুর্তিতে রেডিও জকি হিসেবে কাজ শুরু করেন চট্টগ্রামের প্রথম আরজে হিসেবে।
তিনি মিডিয়াতে কাজ করেন একদম ছোটবেলা থেকেই। তিনি প্রথম মঞ্চে নাচ আর গান করেন ১৯৯১ সালে। শুরু থেকেই রুমানা কালচারাল পরিবেশে বড় হয়েছে।তার পরিবারে আব্বু, মেজ চাচা, চাচাতো ভাই, ছোট ভাই সকলেই মিডিয়ার বিভিন্ন সেক্টরের আছেন। বলা যায় তার পরিবারই তাকে অনুপ্রেরণা জুগিয়েছে। আর এখন সব কাজ করার মূল শক্তি তার মেয়ে।
রুমানা বর্তমানে বৈশাখী টেলিভিশনে সিনিয়র নিউজ প্রেজেন্টার হিসেবে রয়েছেন এবং সাথে “মুগ্ধ” নামে একটি জামদানীর অনলাইন পেইজের ওনার তিনি।
রুমানা সংবাদ পাঠের জন্য আলাদা কোন প্রশিক্ষণ নেননি। তবে ছোটবেলায় শুদ্ধ উচ্চারনের জন্য বোধন এ ট্রেইনিং নিয়েছিলেন।
তিনি বলেন, প্রথমে অবশ্যই সুদ্ধ উচ্চারন করতে হবে। আর বিশেষ করে আঞ্চলিকতার টান যেন না আসে তা খেয়াল রাখতে হবে।
আর এখন সংবাদ মানেই কিন্তু শুধু স্ক্রিপ্ট পড়া না, লাইভ করতে হয়, রিপোর্টারের সাথে কথা চালিয়ে যেতে হয় তাও লাইভে, সুতরাং সেই ক্ষেত্রে নিউজ সম্পর্কে অবশ্যই ধারনা থাকতে হবে। প্রতিদিনকার সংবাদ জানতে হবে। কমন সেন্স থাকতে হবে। প্রেজেন্স অফ মাইন্ড হতে হবে।
রুমানা আরও বলেন, সংবাদ পাঠিকার চট করে যে কোন প্রশ্নের জবাব সঠিক ভাবে, সঠিক শব্দ ব্যাবহার করে সর্ট টাইমে প্রেজেন্ট করার ক্ষমতা রাখতে হবে। আর অন্য দিকে উত্তরদাতার যেনো মনে হয় আপনি গল্প করছেন, প্রশ্ন নয়।
প্রতিযোগিতার এই সময়ে চ্যানেল গুলোতে সংবাদ উপস্থাপনায় বৈচিত্র আনতে আমাদের কন্টেন্ট এর অভাব। আমরা প্রশ্ন করি আক্রমণাত্মক ভাবে। তবে আমার মনে হয় গল্পের ছলে সংবাদ উপস্থাপন হলে দর্শক সহজেই গ্রহন করবেন, বুঝতে পারবেন।
রুমানা বর্তমানে বৈশাখী টেলিভিশনে কর্মরত আছেন, সিনিয়র নিউজ প্রেজেন্টার হিসেবে। ২০১২ থেকে এখনো পর্যন্ত এই প্রতিষ্ঠানে সম্মানের সাথে কাজ করছেন।
বর্তমানে তিনি সংবাদ পাঠের পাশাপাশি জামদানী নিয়ে কাজ করছেন।বাংলাদেশের এই ঐতিহ্যবাহী পন্যকে দেশ ও দেশের বাহিরে সমৃদ্ধ করাই তার প্রচেষ্টা থাকবে।
রুমানা সম্প্রতি ইউএসএর ইউএস ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট সংবাদ উপস্থাপিকা হিসেবে এশিয়ার সেরা সংবাদ পাঠিকা হিসেবে এওয়ার্ড অর্জন করেন।তিনি মনে করেন দেশের পাশাপাশি দেশের বাহিরেও আমার কাজের এই সিকৃতি আমার কাজ, প্রতিষ্ঠান আর দেশকে আলাদা সম্মান এনে দিয়েছে।
রুমানার স্মরণীয় মুহূর্ত হলো তার মেয়ে যখন পৃথিবীতে আলোর মুখ দেখে বা জন্ম নেয়। রুমানার মেয়ে “মালিয়াত আলম” এখন তার পুরো পৃথিবী।
তিনি বলেন, সুখের স্মৃতি বলবো কিনা জানিনা তবে সব এচিভমেন্ট ই আমার জন্য সুখের, সেই ছোট বেলার খেলাঘর এর প্রতিযোগিতায় প্রথম পুরষ্কার নেয়া থেকে শুরু করে, জাতীয় পর্যায়ে পুরষ্কার পাওয়া হোক, আর লাক্স চ্যানেল আই সুপার স্টার ২০০৫ এর টপ ১২ তে থাকা হোক, আর আমার করা নিউজ রিপোর্ট সমাদৃত হওয়া। অথবা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী সফর সংগি হয়ে বিভিন্ন দেশ ভ্রমন করা আর সংবাদ সংগ্রহ করা যাই হোক না কেন, আমার কাছে সবই সুখের মুহুর্ত। তবে আমি মনে করি আমি অনেক লাকি। কারন বিয়ের আগে বাবা মা এর ব্যাকআপ পেয়েছি একদন কোন বাধা ছাড়া। আর বিয়ের পর পাচ্ছি স্বামীর। মেয়েদের কাজ করার ব্যাপারে কিন্তু পরিবার অনেক বড় ফ্যাক্ট। আমি সেই ক্ষেত্রে অনেক ভাগ্যবান।
দেওয়ান রুমানা আফরোজ শেষে আরও বলেন,চট্টগ্রামের সাংস্কৃতিক অঙ্গন অনেক রিচ কালচারের দিকে। আসলে আমার কাছে মনে হয় সংকৃতিক যে রুট সেইটা আমাদের চট্টগ্রামি ধারন করে আর লালন করে। আজকে আমি যাই করছি না কেন, তা আমি মনে করি ডিসি হিল এ নজরুল জয়ন্তী অথবা পহেলা বৈশাখ, অথবা বিভিন্ন পালা পর্বনে অনুষ্ঠান করার সুযোগ পাওয়ার কারনেই নিজেকে তৈরি করতে পেরেছি।চট্টগ্রামের এত্ত বড় মঞ্চ যে কোন মিডিয়া ব্যাক্তিত্বের জন্য এ্যসেট। তবে স্পেশালি সংবাদ পাঠ এর জন্য আমি মনে করি চট্টগ্রামের ভাষা আর তার আঞ্চলিকতার টান থেকে বের হতে পারাটা অনেক বড় চ্যালেঞ্জ।