তিমির বনিক, মৌলভীবাজার প্রতিনিধি: হবিগঞ্জের ইমাম-বাওয়ানী চা বাগানে বকেয়া মজুরি-বোনাসসহ ৭ দফা দাবি নিয়ে শ্রম অধিদপ্তরে ত্রি-পক্ষীয় বৈঠক বসেছে বাগান মালিকপক্ষ ও শ্রমিকপক্ষ।
এ নিয়ে গত ২৬ জুন বাগান ব্যবস্থাপনা বরাবর স্বারকলিপি প্রদান। আর অনুলিপি প্রদান করেন জেলা প্রশাসক বরাবরে
মঙ্গলবার বিকাল সাড়ে ৩টার দিকে মৌলভীবাজার জেলার শ্রীমঙ্গলস্থ শ্রম অধিদপ্তরে শ্রম অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মোহাম্মদ নাহিদুল ইসলামের সভাপতিত্বে এ বৈঠক অনুষ্ঠিত। তবে সন্ধ্যা সাতটা পর্যন্ত চলা এ বৈঠকে কোনো সিন্ধান্তে পৌঁছতে পারেননি।
শ্রীমঙ্গলস্থ বাংলাদেশ চা শ্রমিক ইউনিয়নের সাংগঠনিক সম্পাদক বিজয় হাজরা (মঙ্গলবার সন্ধ্যা সাতটায়) বলেন, আমরা বৈঠকে বসে আছি এখনো সিন্ধান্ত দিতে পারেননি মালিকপক্ষ। শুধু টালবাহানা করছে।
চা শ্রমিকদের অভিযোগ, উপজেলার পানিউমদা ইউনিয়নের ইমাম ও বাওয়ানী চা বাগানের ৩৬০ জন শ্রমিকের চা-বাগান মালিকদের সংগঠন বাংলাদেশীয় চা-সংসদ ও বাংলাদেশ চা-শ্রমিক ইউনিয়নের মধ্যে সম্পাদিত শ্রমচুক্তি মোতাবেক শ্রমিকদের বকেয়া মজুরি মালিক পক্ষ পিএফ কার্যালয়ে জমা না দেওয়ায় করার ফলে অবসরপ্রাপ্ত শ্রমিকগণ পিএফ অর্থ পাচ্ছেন না। এছাড়া চা শ্রমিকদের রোদ-বৃষ্টিতে বাসস্থানে অবস্থান করতে দুর্ভোগ পোহাতে হয়। ডাক্তার না থাকায় চিকিৎসা সেবা থেকেও বি ত তারা। গত ২৫ জুন চা শ্রমিকদের ৭ দফা দাবি বাস্তবায়ন করার জন্য ইমাম টি এস্ট্রেট লিমিটেডের চেয়ারম্যান ও ব্যবস্থাপনা পরিচালকের বরাবর লিখিত জানানো হয়। মালিকপক্ষ সাড়া না দেওয়ায় ৩ জুলাই থেকে ১১ জুলাই গতকাল মঙ্গলবার পর্যন্ত কর্মবিরতি পালন করছেন তারা।
দাবিগুলো হলো-২০১৯-২০ ও ২০২০-২১ সালের বকেয়া বোনাস (পাওনা) পরিশোধ, রেশন, চিকিৎসা এবং স্থায়ী বাসস্থান নিশ্চিত করা।
ইমাম চা বাগানের সভাপতি রামভজন রবিদাশ বলেন, ‘ইমাম ও বাওয়ানী দুই চা বাগানের ৬০০ নারী-পুরুষ চা শ্রমিক ও তাদের পরিবারসহ প্রায় দুই হাজার লোকের বসবাস পানিউমদা ইউনিয়নে। দীর্ঘদিন ধরে এ দুটি বাগানের কার্যক্রম ম্যানেজার ছাড়াই চলছে।’
ইমাম- বাওয়ানী চা বাগানের শ্রমিক প ায়েত কমিটি জানান, ২০১৯-২০২০ সালের শ্রমিকদের মজুরি এরিয়া টাকা ও শ্রমিকদের বকেয়া বোনাসের ৩১ লাখ ৭৩ হাজার ৪০ টাকা, ২০২১-২০২২ সালের ৫৫ লাখ ৭২ হাজার ৮০০ টাকা পরিশোধ করেনি মালিক পক্ষ। শ্রমিকদের বকেয়া পাওনা পিএফ ফান্ড ৬৮ লাখ টাকা।
বাওয়ানী চা বাগানের সভাপতি গোপেন ঝড়া জানান, বিষয়টি বাংলাদেশ চা বোর্ড ও হবিগঞ্জ জেলা প্রশাসক-কে লিখিতভাবে জানানো হয়েছে। কিন্তু এতেও সমাধান না হওয়াতে কর্মবিরতি পালন করছে চা-শ্রমিকরা।
এ বিষয়ে নবীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ইমরান শাহরীয়ার বলেন, ‘বাগানের মালিক পক্ষ বেতন, বকেয়া বোনাস না দেওয়ার শ্রমিকরা কর্মবিরতি পালন করছেন। আমারা এ বিষয়টি সমাধানের জন্য মালিক পক্ষের সঙ্গে কথা বলেছি।’ ইমাম ও বাওয়ানী চা বাগানের মালিক পক্ষের কাছে সরকারের খাজনা বাবদ প্রায় ৬৫ লাখ টাকা বকেয়া আছে।’
ইমাম টি এস্ট্রেট লিমিটেডের চেয়ারম্যান মাঈন উদ্দিন চৌধুরী বলেন,‘আমি শুরু থেকে বলে আসছি এরিয়া অর্থ, বোনাস ও পিএফের টাকা পর্যায়ক্রমে পরিশোধ করা হবে। তবে চা শ্রমিকদের নিয়মিত বেতনসহ যাবতীয় সুযোগ-সুবিধা অব্যাহতভাবে দেওয়া হচ্ছে। তিনি বলেন, শ্রমিক নেতা ও শ্রম অধিদপ্তরে বৈঠক বসেছে।’
শ্রীমঙ্গলস্থ শ্রম অধিদপ্তরে শ্রম অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মোহাম্মদ নাহিদুল ইসলাম বলেন,‘ আমরা বৈঠকে আছি এখনো সূরাহা হয়নি।’