তিন বছরের শিশু কন্যাকে শ্বাসরোধ করে হত্যার পর কারাগারের মধ্যে মা সুফিয়া খাতুন সাথি (৩৭) গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যা করেছেন বলে জানিয়েছে কারা কর্তৃপক্ষ।
বুধবার দুপুরে মাগুরা কারাগারের মহিলা ওয়ার্ডের গোসলখানায় গলায় ওড়না পেঁচিয়ে আত্মহত্যা করেন তিনি। সুফিয়া খাতুন ঝালকাঠির নলছিটি উপজেলার দক্ষিণ খাজুরিয়া গ্রামের সাহাজউদ্দিন হাওলাদের মেয়ে।
এ বছরের ৮ মার্চ মাগুরা শহরের কলেজপাড়ায় ভাড়া বাড়িতে থাকা অবস্থায় সুফিয়া খাতুন সাথি তার মেয়ে মাহিকে শ্বাসরোধে হত্যার পর নিজেও গায়ে আগুন লাগিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা চালান। ঘটনার দিন পুলিশ তাকে আটক করে।
মাগুরা কারাগারের সুপারিনটেনডেন্ট তায়েফ উদ্দিন জানান, মানসিকভাবে অসুস্থ্ থাকায় তাকে খুলনা মেডিকেল কলেজে চিকিৎসার জন্য পাঠানো হয়। সেখানে ৪৭ দিন থাকার পর ব্যবস্থাপত্রসহ সম্প্রতি মাগুরা কারাগারে ফেরত এসেছেন। কিন্তু বুধবার দুপুরে মহিলা ওয়ার্ডের গোসলখানার দরজায় ওড়না পেঁচিয়ে ফাঁস নেন সুফিয়া খাতুন।
দুপুরে সাথিসহ আরও ৪ জনকে একসঙ্গে গোসলে পাঠানো হয়। কিন্তু ৪ জন ওয়ার্ডে ফিরলেও সাথি না ফেরায় খুঁজতে গিয়ে গোসলখানায় ঝুলন্ত অবস্থায় পাওয়া যায় তাকে। ঘটনার পর তাকে মাগুরা ২৫০ শয্যা হাসপাতালে পাঠানো হলে ২টার দিকে তার মৃত্যু হয়।
সাথির ঘনিষ্টজনরা জানায়, গত তিন বছর ধরে তিনি মাগুরা শহরের ফায়ার স্টেশনের পেছনে মৃত শাহাদত হোসেনের বাড়ির তিন তলায় স্বামী মননু মিয়া ও শিশু কন্যা মাহিকে নিয়ে বসবাস করতেন। কিন্তু এ বছরের জানুয়ারি মাসে স্বামীর সঙ্গে তার বিবাহ বিচ্ছেদের ঘটনা ঘটে। এরপরও সে নিজের শিশু কন্যা মাহিকে নিয়ে ওই বাড়িতেই বসবাস করতেন।
কিন্তু ৮ মার্চ তারিখ দুপুরে শিশু কন্যাকে শ্বাসরোধ করে হত্যার পর নিজে আত্মহত্যার চেষ্টা চালালে প্রতিবেশীরা তাকে উদ্ধার করে।
এলাকাবাসী জানায় পনেরো বছর আগে লক্ষ্মীপুর জেলায় আবু তালেব নামে এক ব্যবসায়ীর সঙ্গে সুফিয়ার বিয়ে হয়। সেখানে তানজিরা এবং নাজিয়া নামে তার দুটি মেয়ে রয়েছে। কিন্তু আচরণগত সমস্যা এবং অসংলগ্ন চলাফেরার কারণে বছর সাতেক আগে তাদের বিবাহ বিচ্ছেদ হয়। তারপর সুফিয়া মাগুরা শহরের বেলনগর গ্রামের মননু মিয়াকে বিয়ে করলেও সেটিও স্থায়ী হয়নি।
উৎসঃ যুগান্তর