October 30, 2024, 11:14 pm

শিক্ষা কর্মকর্তার বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ, মামলা না নিয়ে ওসির পক্ষপাতিত্ব আচরণ

  • Last update: Wednesday, October 30, 2024

ফরিদপুর প্রতিনিধিঃ মুকসুদপুরে পূর্ব শত্রুতার জের ধরে বাড়িঘর ভাঙচুর, লুট ও হত্যার চেষ্টার ঘটনা ঘটেছে। গত শনিবার ২৬ অক্টোবর গোপালগঞ্জ জেলার মুকসুদপুর উপজেলার মহারাজপুর ইউনিয়নের লোহাইড় গ্রামের ৬/৭টি বাড়িতে আনুমানিক সাড়ে ৩টার সময় এ ঘটেছে। জানা যায়, ঢাকা শিক্ষা বোর্ডে কর্মরত মোস্তফা কামাল মোল্লার নেতৃত্বে পূর্ব শত্রুতার জের ধরে ৩০/৪০ জন স্থানীয় ও বহিরাগত লোকজন দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে স্থানীয় মজিবর খন্দকার, ইকবাল মোল্লা, ছালেহা বেগম, হায়দার মোল্লাসহ একাধিকা বাড়িতে অতর্কিত হামলা চালায়।

এ ব্যাপারে প্রত্যক্ষদর্শি রুনা বেগম জানান, সন্ত্রাসীরা লুটপাট করার সময় মজিবর খন্দকারের মেয়ে শামসুন্নাহার তাদেরকে বাধা দিতে গেলে লুটেরা তার হাতে থাকা ওয়ান প্লাস ফোরটি একটি মোবাইল ও গলার স্বর্নের চেইন ছিনিয়ে নিয়ে তাকে বেধর মারপিট করে। আমরা পরে তাকে ফরিদপুর মেডিকেল হাসপাতালে ভর্তি করি।প্রত্যাক্ষদোষী খুশিয়ারা বেগম বলেন, কামাল মোল্লা, জামাল মোল্লা, নুরু খা, সিরাজ, গোলজার খাঁ, ইবাদত মোল্যা, সোহাগ মোল্যা, লিয়াকত খান, আমানত খান, রওশনারা আক্তার শিউলি, সারমিন সুলতানা, জাফরিন সুলতানাসহ তাদের ভাড়াটিয়া লাঠিয়াল বাহিনী ও মহারাজপুরের ফারুক তার সাথে আরো অনেকে ছিলেন। তাদের আমি চিনি না নাম ও বলতে পারতেছি না। তিনি আরো বলেন, গত ৮ বছর ধরে সৌদি আরব প্রবাসী হানিফ খন্দকারের ঘরবাড়িও ভাঙচুর করেছে সন্ত্রাসীরা। যেখানে একজন রেমিটেন্স যোদ্ধার বাড়ি সন্ত্রাসীদের হাত থেকে রক্ষা পায় না সেখানে সাধারণ জনগণের অবস্থা কি? ভাংচুরের খবর পেয়ে পুলিশের একটি দল ঘটনাস্থলে উপস্থিত হলে হামলাকারীরা পালিয়ে যায়। ঢাকা শিক্ষা বোর্ডে কর্মকর্তা অভিযুক্ত কামাল মোল্লার সাথে এব্যাপারে মুঠো ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তিনি প্রথমে ফোন রিসিভ করে সাংবাদিক পরিচয় পাওয়ার পরে ফোন কেটে দেন। পরে একাধিকবার চেষ্টা করেও তার সাথে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি। এ ব্যপারে স্থানীয় জনসাধারণ জানান, মোস্তফা কামাল তার বাবার মৃত্যু বার্ষিকীকে উপলক্ষ করে পরিকল্পিতভাবে এই হামলা চালায়। কারণ মোস্তফা কামাল আগে কখনও তার বাবার মৃত্যু বার্ষিকী পালন করেইনি। মৃত্যু বার্ষিকী ছিল হামলার পরিকল্পনারই একটি অংশ মাত্র।

পূর্বেও মোস্তফা কামাল এর নেতৃত্বে একাধিক বার এ ধরনের সন্ত্রাসী তান্ডব চালানো হয়েছে এবং এর মামলাও চলমান রয়েছে। এলাকাবাসি আরও জানান, ঐ দিন যাদের বাড়ি হামলা হয়েছে সেই বাড়িগুলোতে মহিলা ব্যতিত কোন পুরুষ লোক ছিলনা। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ব্যক্তি জানান, মোস্তফা কামালের কোন এক আত্মীয় পুলিশ অফিসার মুকসুদপুর থানায় কর্মরত আছেন। তার প্রভাব খাটিয়েই পুলিশকে সিভিল পোশাকে এনে মোস্তফা কামাল ও তার সহযোগীরা হামলা হওয়ার ৬/৭ টি বাড়ির পুরুষদের মামলা আছে বলে ভয় দেখিয়ে হামলার ৪ দিন আগে এলাকা ছাড়া করে। এই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে গত ২৬ অক্টোবর শনিবার আনুমানিক বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে এ হামলা চালানো হয়। এব্যাপারে মুকসুদপুর থানার অফিসার ইনচার্জ এর সাথে কথা হলে তিনি এ প্রতিনিধিকে জানান, ঘটনাটি আমি জেনেছি এবং ঘটনার স্থান পরিদর্শন করেছি এবং বিষয়টি আমি নিজ উদ্যোগে মিমাংসা করেদিব। এদিকে অভিযোগকারী ছালেহা বলেন, যেকোন হামলা ভাংচুর দু—পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ সৃষ্টি হলে দু—পক্ষকে মিটিয়ে দেওয়ার প্রশ্ন আসে। কিন্ত এক পক্ষ যদি হামলা, ভাংচুরও লুটপাট করে তাহলে মিটানোর আগে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহন ও মামলা হওয়াটাই উচিৎ বলে আমরা মনে করি। তাছাড়া থানার অফিসার ইনচার্জ ঘটনা স্থান পরিদর্শন করে ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত হওয়ার পরেও কেন সে বার—বার একতরফাভাবে মিমাংসা করার কথা বলে আসছেন। এ থেকে বোঝা যায় ওসি আইনের অপব্যবহার কওে প্রতিপক্ষকে একতফাভাবে সহযোগীতা করছেন। এলাকাবাসির দাবী, এলাকায় ফিতনা—ফ্যাসাদ সৃষ্টি করার অপরাধে মোস্তফা কামাল ও তার সহযোগীদের আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্ত মূলক শাস্তি দেওয়া হোক। উল্লেখ্য গত ২৭/০৭/২০২৪ ইং তারিখে মোস্তফা কামালের নেতৃত্বে লোহাইর গ্রামে প্রতিপক্ষকে মারধোর করে তাতে গুরুতর আহত হয় হায়দার মোল্যা মামলার ইজাহারে দেখা যায় কামাল মোল্যার হাতে থাকা দেশীয় অস্ত্র দিয়ে কোপ মারলে হারভাঙ্গা রক্তাক্ত জখম হয়।তাৎখনিক হায়দার মোল্যাকে প্রথমে মুকসুদপুর হাসপাতাল ভর্তি করা হয়। রোগির অবস্থার অবনতি হলে কর্মরত চিকিৎসক তাকে ফরিদপুর মেডিকেল হাসপাতালে রেফার্ড করে। হাসপাতালে রোগি বারবার বমি করলে,ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল এর কর্তব্যরত চিকিৎসক রোগির অবস্থা ভালোনা দ্রুত রোগিকে ঢাকা পাঠাতে হবে। রোগির লোকজন ডাক্তারকে অনুরোধ করে এখন রাত ১০ টা বাজে আমাদের টাকা পয়সার সমস্যা আমরা সকালে রোগিকে ঢাকা নিব বলে রোগিকে রাতে রেখে দেয়। অত্যান্ত দুঃখজনক ও পরিতাপের বিষয় হলো প্রতিপক্ষ মোস্তফা কামালের স্ত্রী এর বড় ভাই ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের কর্মরত একজন চিকিৎসক হওয়ায় তার মাধ্যেমে সকালে ১০ ঘটিকায় উক্ত হায়দার মোল্যাকে ঢাকায় না পাঠিয়ে ছাড়পত্র প্রদান করে। বিষয়টি ফরিদপুরে অবস্থানরত রোগির আত্মিয়সজন জানতে পেরে হাসপাতালের পরিচালকের সাথে কথা বলে এবং পরিচালক বিষয়টি অনুধাপন করে ও ঘটনার সত্যতা পায়। পরে কর্তব্যরত চিকিৎসকদের ডেকে পূণরায় রোগিকে ভর্তি করা হয়। এভাবেই রোগি হায়দার মোল্যাকে মেরে ফেলার অপচেষ্টা করে। হায়দার মোল্যাকে পূণরায় ভতি হওয়া দেখে কামাল মোল্যার শুরু হয় নতুন ষড়যন্ত্র। ঘটনার একদিন পরেই মোস্তফা কামালের ছোট ভাই জামাল মোল্যার মাথার একসাইড কেটে,শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এবং প্রতিপক্ষের মামলা থেকে বাচার জন্য এবং কোর্ট থেকে সহজে জামিন করার জন্য একটি জাল সিটিস্ক্যান রিপোর্ট তৈরি করে এবং তাতে লেখা হয় জামাল মোল্যার মাথার ব্রেইনে হেমারিং হয়েছে। এই জাল সার্টিফিকেট নিয়ে প্রতিপক্ষ বিজ্ঞ আদালতে দারস্থ্য হলে কোর্ট কতৃর্ক শহীদ সোহরাওয়াদীর্ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল এর বিভাগীয় প্রধান, রেডিওলজি এন্ড ইমেজিং কে সিটিস্ক্যান এর রিপোর্ট কে ভেরিফাই করার জন্য বলা হয়। পরে শহীদ সোহরাওয়াদীর্ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল কতৃপক্ষের ভেরিফাই রিপোর্ট যার স্বারক নং—২৪/৩৩৬৬ সূত্র মুকঃ/২০২৪/২০২৪/১৮৪৫ এতে উল্লেখ করা হয়,উপরোক্ত স্বারকে প্রেররিত পত্রে সংযুক্ত সিটিস্ক্যান রিপোর্টটি সম্পূর্ণ জাল এবং অসৎ উদ্দেশ্য মূল রিপোর্ট জালিয়াতির মাধ্যেমে এই জাল রিপোর্ট সৃজন ও দাখিল করা হয়েছে। এই রিপোর্টের ফর্ম স্ক্যান করা ,দুইজন চিকিৎসকের স্বাক্ষর ভূয়া এবং দুইজন চিকিৎসকের স্বাক্ষর স্ক্যান করে সংযুক্ত করা হয়েছে।

উল্লেখ্য এই ধরনের জালিয়াতি শাস্তিযোগ্য অপরাধ এবং এই জাল রিপোর্ট সৃজন ও দাখিল কারিদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করার জন্য বলা হয়। প্রসঙ্গত, এত মিথ্যা, অসত্য,জালিয়াতি, ভূয়া প্রমানিত হওয়ার পরেও মুকসুদপুর থানার অফিসার ইনচার্জ মহোদয় ঐ ভূয়া ব্যক্তিদের পক্ষেই সাফাই গাইছে।মুকসুদপুর থানার অফিসার ইনচার্জের পক্ষথেকে ন্যায় বিচার পাওয়ার আশা কতটুকু?

Drop your comments:

Please Share This Post in Your Social Media

আরও বাংলা এক্সপ্রেস সংবাদঃ
© 2023 | Bangla Express Media | All Rights Reserved
With ❤ by Tech Baksho LLC