
লক্ষ্মীপুরের রামগঞ্জে শিক্ষকদের বিরুদ্ধে ১৩ বছর বয়সী কামরুল হোসেন শুভ নামে এক মাদ্রাসা ছাত্রকে মারধর করে হত্যার অভিযোগ উঠেছে। রোববার ১৮ জুন সকালে রামগঞ্জ থানা পুলিশ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে শুভ’র মরদেহ উদ্ধার করে।
পরিবারের দাবি, শুভকে শিক্ষকরা মারধর করে হত্যা করেছে। তার শরীরের বিভিন্ন অংশে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে।
শুভ উপজেলার নোয়াগাঁও ইউনিয়নের সাউদেরখিল গ্রামের ভূঁইয়া গাজী ব্যাপারী বাড়ির আমির হোসেন লিটন ভূঁইয়া গাজীর ছেলে। তার বাবা লিটন উপজেলা শ্রমিক লীগের সাবেক আহ্বায়ক। সে স্থানীয় মোহাম্মদীয় এতিমখানা কমপ্লেক্স হেফজ বিভাগের ছাত্র ছিল। মাদ্রাসার আবাসিকে থেকেই পড়ালেখা করত।
শুভ’র পরিবার জানায়, রোববার সকালে খবর আসে শুভ অসুস্থ হয়ে পড়েছে। এরপর তাকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। হাসপাতালে নেওয়ার আগেই তার মৃত্যু হয়েছে। শিক্ষকরা তাকে মারধর করেছে, এতে তার মৃত্যু হয়।
শুভ’র বাবা আমির হোসেন লিটন ভূঁইয়া গাজি বলেন, আমার ছেলেকে রাতে শিক্ষকরা মারধর করেছে। তার কানের নিচে, হাটুতে ও হাতে কালো দাগ রয়েছে। শিক্ষকরা তাকে হত্যা করেছে। আমি ছেলে হত্যার বিচার চাই।
মাদ্রাসা সুপার হাফেজ মো. সাফায়েত জানান, শুভ ভোরে ঘুম থেকে উঠে নামাজ পড়েছে। পরে সে ক্লাস রুমে এসেছে। কিছুক্ষণ পড়ার পর শিক্ষককে জানিয়েছে তার মাথা ব্যাথা করছে। এতে তার মাথায় মলম লাগিয়ে শোয়ায়ে রাখা হয়। কিছুক্ষণ পর তাকে নাস্তার খাওয়ার জন্য ডাকতে যায়। এতে দেখা যায় তার মুখ দিয়ে লালা ঝরছে। পরে শুভকে ২-৩ জন ধরে তার কাছে নিয়ে আসে। সঙ্গে সঙ্গে তার পরিবারকে খবর দেওয়া হয়। তাৎক্ষনিক শুভকে হাসপাতাল নিলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
মাদ্রাসা পরিচালনা কমিটির দায়িত্বপ্রাপ্ত নাজমুল হক বলেন, শিক্ষকরা জানিয়েছে শুভ হঠাৎ করে অসুস্থ হয়ে পড়ে। এতে তার মুখ দিয়ে লালা ঝরছিল। পরে শুভকে হাসপাতালে নিলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। তাকে মারধর করা হয়েছে কি না তা সঠিকভাবে বলতে পারছি না। পুলিশ ঘটনাটি তদন্ত করে রহস্য উদঘাটন করবেন। এতে আমাদের পক্ষ থেকে সকল ধরণের সহযোগিতা করা হবে।
রামগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এমদাদুল হক জানান, খবর পেয়ে হাসপাতাল থেকে নিহতের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। পরিবারের দাবি তাকে হত্যা করা হয়েছে। এতে ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহ জেলা সদর হাসপাতালে মর্গে পাঠানো হবে। ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন পেলে মৃত্যুর সঠিক কারণ জানা যাবে।