১৬ বছর বয়সে নিজের প্রথম আন্তর্জাতিক ইনিংসে সেঞ্চুরি। ৩৭ বলে ১০০। সেসময়ের ওডিআই রেকর্ড। নাইরোবিতে শ্রীলংকার বিপক্ষে ৪০ বলে ১০২। দিনটি ছিল ১৯৯৬-র ৪ অক্টোবর। নিশ্চয় বুঝতে পারছেন, শহীদ আফ্রিদির কথা বলা হচ্ছে। আজ তার জন্মদিন। ৪২-এ পা দিলেন সাবেক পাকিস্তানি অলরাউন্ডার।
১৯৮০ সালের ১ মার্চ তার জন্ম। আফ্রিদিকে জন্মদিনে শুভেচ্ছা জানিয়েছে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট কাউন্সিল। আইসিসির ফেসবুক পেজে লেখা হয়েছে, ওয়ানডে ক্রিকেট ইতিহাসে সর্বোচ্চ ছক্কা হাঁকানো ক্রিকেটারকে জন্মদিনে শুভেচ্ছা।
১৯৯৬ সালে ১৬ বছর বয়সে কেনিয়ার বিপক্ষে প্রথমবার মাঠে নেমেছিলেন আধুনিক ক্রিকেটের অন্যতম জনপ্রিয় ক্রিকেটার। সেই থেকে ক্রিকেট বিশ্ব মাতিয়ে যাচ্ছেন সমানতালে। জাতীয় দল থেকে অবসর নিলেও ক্রিকেট ছাড়েননি এখনও। বয়সকে কেবল সংখ্যা বানিয়ে দেশি-বিদেশি ফ্রাঞ্চাইজি লিগে দুর্দান্ত খেলে যাচ্ছেন। তার পারফর্মে এখনও হার মানছে তরুণরা।
সম্প্রতি খেললেন আবু ধাবি টি-টেন লিগে। খেলা ছাড়ার বিষয়ে সম্প্রতি আফ্রিদি বলেছেন, ভক্তদের ইচ্ছায় আরও দু-এক বছর ব্যাট-বলের লড়াই চালিয়ে যাবেন তিনি। আফ্রিদিকে ক্রিকেটের এক কমপ্লিট প্যাকেজ বলা হয়। যেখানে বিধ্বংসী ব্যাটিং, স্টাইলিশ লেগ স্পিন আর নায়কোচিত উদযাপনতো আছেই।
আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে রেকর্ড ৪৭৬টি ছক্কা হাঁকানোর কীর্তিও আছে তার ঝুলিতে। এছাড়া বল হাতে টি-টোয়েন্টিতে ৯৭ উইকেট নিয়েছেন, যা সংক্ষিপ্ত এই ফরম্যাটে এখন পর্যন্ত দ্বিতীয় সর্বোচ্চ। ক্যারিয়ারে ৩৯৮টি ওয়ানডে ম্যাচে ৮০৬৪ রান আর ৩৯৫ উইকেট নেওয়ার কীর্তি গড়েছেন আফ্রিদি। পাকিস্তানের হয়ে একমাত্র খেলোয়াড় হিসেবে ৫২৩টি আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলার রেকর্ডও আছে তার নামে।
এছাড়া ২৭ টেস্টের ক্যারিয়ারে মাত্র ৫ সেঞ্চুরি আর ৮ ফিফটি নিয়েই সন্তুষ্ট থাকতে হয়েছে তাকে। অন্যদিকে ৯১ টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ারে ১৪১৬ রান করেন। তবে আফ্রিদিকে শুধু ব্যাটিং দিয়ে মাপলে চলবে না। তার বোলিং হচ্ছে আসল শক্তির জায়গা। বোলার হিসেবে যেকোনো মুহূর্তে ম্যাচ ঘুরিয়ে দেওয়ার সামর্থ্য আছে তার।
৩৯৮ ওয়ানডেতে হাত ঘুরিয়ে ৩৯৫ উইকেট (৯ ম্যাচে ৫ উইকেট নেওয়ার কীর্তিও আছে) তার বোলিং সামর্থ্যকে ঠিক তুলে ধরতে সক্ষম নয়। স্পিন বোলার হলেও তার বলের গতি প্রায়ই ব্যাটসম্যানদের বিভ্রান্ত করে দেয়।
আফ্রিদির সবচেয়ে বড় কীর্তি পাকিস্তানের হয়ে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ জেতা। এছাড়া ২০০৭ সালে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের অভিষেক আসরে সিরিজ সেরা আর পরের আসরের ফাইনালে ম্যাচসেরা নির্বাচিত হয়েছিলেন আফ্রিদি। দ্বিতীয় আসরে (২০০৯) তার দেশ পাকিস্তান প্রথমবারের মতো টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ জেতার স্বাদ পায়। সেবার সেমিফাইনাল আর ফাইনালে ফিফটি করেছিলেন তিনি।