মো. রাসেল ইসলাম, যশোর জেলা প্রতিনিধি: প্রায় বৃষ্টিহীন ভাবে কেটে গেল আষাঢ়ের একটি সপ্তাহ। আষাঢ় শ্রাবণ দুই মাস বর্ষা ঋতু হলেও দেখা মিলছে না বৃষ্টির সাথে। এরইমধ্যে সামান্য ঝিরিঝিরি বৃষ্টির মাঝে ধীরে ধীরে বেড়ে উঠেছে সোনালী আঁশ খ্যাত পাট।
যশোরের শার্শা উপজেলায় চলতি বছরে পাটের বাম্পার ফলন হলেও কাঙ্খিত বৃষ্টি না হওয়ায় চিন্তার ভাজ পড়েছে কৃষকদের কপালে। সোনালী আঁশে কৃষক পরিবারে সোনালী স্বপ্ন দেখতে পাট ক্ষেতে দিনরাত পরিচর্চা করছেন।
আর অল্প দিনের মধ্যে ক্ষেতের পাট কেটে জাগ দেওয়ার ব্যবস্থা করবে পাট চাষিরা। তবে এসময়ে খাল বিল নদী নালা কিংবা ছোট বড় জলাশয়ে পাট জাগ দেওয়ার মত পানি না থাকায় প্রতিনিয়ত বৃষ্টির জন্য প্রার্থনা করেছেন কৃষক পরিবার গুলো।
চলতি মৌসুমে যশোরের শার্শায় ৫ হাজার ৪শ ৬০ হেক্টর জমিতে পাটের আবাদ হয়েছে যা গত বছরের চেয়ে ১০ হেক্টর বেশি বলে জানান উপজেলা কৃষি বিভাগ।
শার্শার নিজামপুর ইউনিয়নের পাট চাষি আব্দুস সালাম বলেন, গতবছরের ন্যায় এবারো দুই বিঘা জমিতে পাটের আবাদ করেছি। এখনো কাঙ্খিত বৃষ্টির দেখা না পাওয়ায় পাট জাগ দেওয়া নিয়ে চিন্তায় আছি।
উপজেলার লাউতাড়া গ্রামের পাট চাষি রফিকুল ইসলাম বলেন, গত বছরও পাট জাগ দেওয়া নিয়ে খুবই সমস্যায় পড়তে হয়েছিলো। খাল বিলে পর্যাপ্ত পানি না থাকায় দূরদূরান্তে নিয়ে গিয়ে জাগ দিতে হয়। সে কারণে কোন রকম খরচটা উঠেছিল। চলতি বছরেও পানি না থাকায় এবার খরচটাও টিকবে বলে হচ্ছেনা।
এমনি ভাবে শার্শা উপজেলায় চলতি বছরে এবং বর্ষার ভরা মৌসুমে পর্যাপ্ত বৃষ্টিপাত না হওয়ায় পাট চাষিরা চরমভাবে বিপাকে পড়েছেন বলে জানান তারা।
শার্শা উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের কৃষিবিদ প্রতাপ মন্ডল জানান, পাট কেটে জাগ দিতে কৃষকদের এখনো অনেকটা সময় লাগবে। এরমধ্যে যদি পর্যাপ্ত বৃষ্টিপাত না হয় তাহলে আধুনিক পদ্ধতিতে কৃষকদের পাট জাগ দেওয়ার জন্য পরামর্শ প্রদান করা হয়েছে।
পাট চাষিদের খরচ কমিয়ে আনতে ইতোমধ্যে উপজেলার ৪ হাজার কৃষকের মাঝে বিনামূল্যে বীজ বিতরণ করেছি। পাশাপাশি অর্থকারী ফসল হিসেবে অন্যতম হওয়ায় সেটাকে বাঁচিয়ে রাখতে কৃষকদের আমরা সার্বক্ষণিক খোঁজখবর ও পরামর্শ প্রদান করছি।
এছাড়া যেহেতু খাল বিল নদী নালা বা জলাশয়ে এখনো পর্যাপ্ত পানি নাই সেক্ষেত্রে কিভাবে আধুনিক পদ্ধতিতে পাট জাগ দিয়ে আঁশ সংরক্ষণ করা যায় সে বিষয়ে কৃষকদেরকে সার্বিক পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।